ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: এর আগে বহুবার রাজ্যে ভুয়ো রেশন কার্ড বিষয়ক নানা খবর হামেশাই খবরের শিরোনামে উঠে আসত। যার দরুন ভুয়ো কার্ড চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছিল প্রায় বছরখানেক আগেই। শুরুতে কিছুটা অনিচ্ছা থাকলেও, শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে আধার লিঙ্ক করার পদ্ধতিকে মান্যতা দিয়ে লাঘব হয়েছে বিপুল সংখ্যক ভুয়ো রেশন কার্ডের বোঝা। সমীক্ষায় জানা গিয়েছে প্রায় দু’কোটি ভুয়ো রেশন কার্ডের বোঝা কমাতে পেরেছে রাজ্য সরকার। আর এবার সেই ভুয়ো রেশন কার্ড সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ED র সামনে তুলে ধরল রাজ্য সরকার।
ED-র প্রশ্নের উত্তরে সাড়া দিল রাজ্য সরকার
ভাস্কর লাইভের খবর অনুযায়ী, সম্প্রতি রাজ্য সরকারের পক্ষে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ED -র কাছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগ গত কয়েক বছরে বাতিল করা রেশন কার্ডের বিবরণ জমা দিয়েছে। ED সূত্রে জানা গিয়েছে, রেশন বন্টন দুর্নীতির তদন্তে প্রচুর ভুয়ো রেশন কার্ডের তথ্য সামনে এসেছে। এবং প্রত্যেকটি জেলায় রেশন বন্টন দুর্নীতির জাল ছড়িয়ে তৈরি হয়েছে এই ভুয়ো রেশন কার্ডের চক্র। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে যদি কোনও পরিবারের সদস্যের মৃত্যু হয়, তাহলে সেই মৃত ব্যক্তির ভুয়ো রেশন কার্ড বানিয়ে রেশনের সামগ্রী পরিবারের বাকি সদস্যরা হস্তগত করছে। শুধু তাই নয়, ED আরও দাবি করছে যে কোনো পরিবার যদি এক এলাকা ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে যায়, তাহলেও তাদের নাম ও পরিচয় দিয়ে একাধিক ভুয়ো রেশন কার্ড তৈরি করা হত।
ভুয়ো রেশন কার্ড সংক্রান্ত ভয়ংকর তথ্য ফাঁস
জানা গিয়েছে, ওই ভুয়ো রেশন কার্ডের সংখ্যার ভিত্তিতে ধান ও গমের কল থেকে সেই পরিমাণ চাল ও আটা স্থানীয় এলাকার রেশন দোকানগুলিতে পাঠানো হত। এরফলে অতিরিক্ত পরিমাণ চাল ও আটা মিল থেকে বেরিয়ে ফের ফিরে আসে মিলগুলিতে। যার দরুন নতুন আটার সঙ্গে পুরনো তথা নিম্নমানের আটা মিশিয়ে ফের পাঠানো হত রেশন দোকানগুলিতে। আর এই গোটা প্রসেসের জন্য প্রয়োজন পড়ত ভুয়ো রেশন কার্ডের। যার ফলে কয়েক মাস আগে ED , রাজ্য সরকারকে চিঠি লিখে জানতে চায় ২০১২ সালের পর থেকে রাজ্যে কত ভুয়ো রেশন কার্ডের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল? কত রেশন কার্ডই বা বাতিল করেছিল রাজ্য সরকার? কিন্তু সেই উত্তর সহজে মেলেনি রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগ থেকে। অবশেষে সেই উত্তর মিলল।
আরও পড়ুনঃ DA বেড়েও মুশকিল, বাংলার সরকারি কর্মীদের বেতন থেকে কাটা হচ্ছে টাকা! প্রকাশ্যে নয়া তথ্য
ED-র সূত্র জানিয়েছে, রাজ্য সরকারের দেওয়া এই নথিগুলিতেই জানানো রয়েছে যে, প্রায় প্রত্যেক রেশন দোকান থেকেই ভুয়ো রেশন কার্ড শনাক্ত করা হয়েছিল। কলকাতা-সহ রাজ্যের প্রত্যেকটি জেলায় থাকা স্থানীয় রেশন দোকানগুলির একেকটি থেকে প্রায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত রেশন কার্ড ‘ভুয়ো’ হিসাবে শনাক্ত করে সেগুলি বাতিল করা হয়। এবার রাজ্যের দেওয়া ওই পরিসংখ্যান ও তথ্যগুলির ভিত্তিতে ED আধিকারিকরা তদন্ত করতে শুরু করেছেন। এবার দেখার পালা পরবর্তী সময়ে রেশন মামলায় কোনও অতিরিক্ত চার্জশিট দাখিল করতে রাজ্যের এই তথ্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।