মিড ডে মিলে দুর্নীতির পর্দাফাঁস করে ভয়ঙ্কর পরিণতি প্রধান শিক্ষকের, মালদায় তুলকালাম

Published on:

mid-day-meal-scam-malda

ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: রাজ্যে মিড ডে মিলের দুর্নীতি কোনও নতুন ঘটনা নয়। একের পর এক নানা অভিযোগ উঠে আসছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে। এমনকি এই মিড ডে মিলের দুর্নীতি নিয়ে বেশ সরবও হয়েছিল রাজ্যের গেরুয়া শিবির। এমনকি রাজ্যে মিড ডে মিল দুর্নীতিতে CBI তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। আর এই আবহেই এবার মালদার এক সরকারী স্কুলে উঠে এল মিড ডে মিল দুর্নীতির এক ভয়ংকর ঘটনা।

সূত্রের খবর, মালদার হরিশচন্দ্রপুরের কোরিয়ালী সার্কেলের দুবোল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রিয়াজুল হক। তিনি মিড ডে মিল বিষয়ক দুর্নীতির অভিযোগ করতে গিয়ে জানান, তিনি এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করার আগে থেকেই স্কুলের সহ-শিক্ষক সফিকুল ইসলাম প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বভার সামলাতেন। সেই স্কুলে মোট পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ৫০ জন। যার মধ্যে স্কুলে আসত মাত্র ৫ থেকে ১০ জন। এদিকে সহ শিক্ষক সফিকুল ইসলাম সেই সময় স্কুল তহবিলের টাকা থেকে শুরু করে মিড ডে মিল নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি করেছেন। সরকারকে মিড ডে মিলের বেশি খরচ দেখাতেন এবং মিড ডে মিলের চাল বিক্রি করে পিকনিক করার খরচ যোগাতেন। এমনকি বাদ দেননি মিড ডে মিল রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারকেও।

WhatsApp Community Join Now

মিড ডে মিলের চাল বিক্রি করে পিকনিক!

পরে যখন সেই স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে রিয়াজুল হক দায়িত্ব ভার নেন, তখন বিদ্যালয়ে মিড ডে মিলের দুর্নীতির গন্ধ পান। যখন সহশিক্ষক সফিকুল ইসলাম এবং ভাস্কর মণ্ডল বুঝতে পারেন যে প্রধান শিক্ষক সম্পূর্ণটা জেনে ফেলেছে তখন হিসেবের গরমিল ঢাকতে স্কুলের হিসেবের একটি খাতায় স্বাক্ষর করতে চান। আর এই কাজে প্রধান শিক্ষক বাঁধা দিলে রিয়াজুল হক এর সঙ্গে বিবাদ বাঁধে। গোটা ঘটনাটি প্রধান শিক্ষক, স্কুল পরিদর্শক মণিরুল ইসলামকে জানালে তিনি কোন কর্ণপাত করেননি। উল্টে সফিকুল ইসলাম ক্রমাগত রিয়াজুল হককে হুমকি দিতে থাকেন।

স্কুল পরিদর্শকের মদতে প্রধান শিক্ষককে মার!

কিছুদিন আগে স্কুল পরিদর্শক তার দপ্তরে একটি মিটিং এর আয়োজন করেন। এবং সেখানে উপস্থিত থাকেন সফিকুল ইসলাম, ভাস্কর মণ্ডল এবং কোরিয়ালি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমান এবং সহ শিক্ষক নাসিমুল হক। কিন্তু সেই মিটিংয়েই নাকি স্কুল পরিদর্শকের উস্কানিতে প্রধান শিক্ষক রিয়াজুল হককে ব্যাপক মারধর করা হয়। এই প্রসঙ্গে নির্যাতিত প্রধান শিক্ষক রিয়াজুল হক নিজের মুখে অভিযোগ করেন যে, ‘SI মণিরুল ইসলামের মদতেই আমাকে মারধর করা হয়েছে। আমাকে প্রাণে মারার চেষ্টা হচ্ছে। চাকরি খাওয়ারও চেষ্টা হচ্ছে। আমার স্কুলেও দুর্নীতি করেছে। আমি এসব কাজে বাঁধা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছি। চার দিন ধরে আতঙ্কে বাড়ি ফিরতে পারিনি। তাই সুরাহা চেয়ে ব্লক সহ জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি।’

আরও পড়ুনঃ শিয়ালদা স্টেশনে আরও একটি বড় বদল পূর্ব রেলের, চিন্তা দূর লাখ লাখ যাত্রীর

প্রধান শিক্ষকের এই হেন অভিযোগে রীতিমত আপত্তি জানান স্কুল পরিদর্শক মণিরুল ইসলাম। তিনিও পালটা অভিযোগ করেন যে, ‘ওই শিক্ষক ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন, তিনি নিজেই দুর্নীতিতে যুক্ত। সহ শিক্ষকরাও পালটা অভিযোগ করেছেন ওর বিরুদ্ধে।’ তবে গোটা ঘটনার প্রসঙ্গে বিডিও তাপস পাল জানান, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মালদার ও নির্দিষ্ট সরকারী বিদ্যালয়ের মিড ডে মিলের হিসেবের খাতাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে দেখা হবে এই বিবাদে কোনো রাজনৈতিক সূত্র আছে কিনা।

বাছাই করা গুরুত্বপুর্ন খবর পেতে গ্রুপে যুক্ত হোন