উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়াদের জন্য ঐতিহাসিক পদক্ষেপ, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে মুখে হাসি সবার

Published on:

WB Education Department

ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: চলতি বছর গত ৮ মে প্রকাশিত হয়েছিল উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল। আর ফলাফল প্রকাশ্যে আসতেই সবাই কোন বিষয়ে অনার্স নেবে তাই নিয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে শুরু হয়ে যায় তাড়াহুড়ো। এমনকি কোন কলেজে ভর্তির ফর্ম তুলবে তাই নিয়েও শুরু হয়ে যায় তোড়জোড়। কিন্তু এসবের মাঝেই বেশ কয়েকজন ছাত্র ছাত্রী রয়েছে যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি হয়নি কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এবার সেই বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে সরকার।

সূত্রের খবর, গত কয়েক বছরে দেখা গিয়েছে, যত সংখ্যক পড়ুয়া উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে থাকে, তত পড়ুয়া সরকারি কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার সঙ্গে যুক্ত হয় না। দেখা গিয়েছে উচ্চ মাধ্যমিকের পর মেধাবী পড়ুয়াদের একটি অংশ ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ভর্তি হয়। আবার অনেকে ক্রিয়েটিভ কোর্স তথ্য নাচ, গান এবং কলা শিল্পে ভর্তি হয়, কিন্তু তার পরেও দেখা গিয়েছে, প্রায় ৩০ শতাংশেরও বেশি পড়ুয়া কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি হয় না। তেমনই হিসেব বলছে সরকারী ভাষায়।

WhatsApp Community Join Now

উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের জন্য বড় পদক্ষেপ

তবে এই সমস্যাটা আরও জটিল ভাবে বিশ্লেষণ করার জন্য কেন্দ্রীয় ভাবে ভর্তির পাশাপাশি স্কুলের প্রধান শিক্ষকদেরকে এক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা দফতর। সেই দায়িত্বটি হল নিজেদের স্কুলের কৃতি পড়ুয়ারা উচ্চশিক্ষার জন্য কোথায় কোন বিষয়ে ভর্তি হয়েছে, তার ডেটাবেস তৈরি করা। পাশাপাশি প্রত্যেক কৃতি ছাত্র ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলে তাদের আর্থিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য সাবমিট করা। তবে এই গোটা প্রক্রিয়ার জন্য দরকার পড়তে চলেছে অতিরিক্ত কর্মীর। কারণ স্কুলগুলিতে এমনিই শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীর ব্যাপক ঘাটতি চোখে পড়ে। এমতাবস্থায় এই ধরনের কাজ কতটা সুষ্ঠু ভাবে সময়ের মধ্যে করা সম্ভব তা নিয়ে উঠছে বড় প্রশ্ন।

শিক্ষকদের উপর পড়তে চলেছে বাড়তি চাপ!

সূত্রের খবর পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা দফতর রাজ্যের সবকটি জেলাকে তিনটি জোনে ভাগ করে প্রত্যেক সরকারি এবং বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে একটি বৈঠক করা হয়েছিল। মূল লক্ষ্য ছিল বাংলার প্রত্যেক কৃতি ছাত্র ছাত্রীর জন্য শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারি সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করে তাদের উচ্চ শিক্ষার আঙিনায় ধরে রাখা। সেই বৈঠকেই এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে সরকার। কিন্তু এত কম সংখ্যক শিক্ষক শিক্ষিকাদের দ্বারা এত বড় কাজ নির্দিষ্ট সময়ে করা বেশ চাপের।এই প্রসঙ্গে কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘রোজকার কাজের বাইরে পরিকাঠামো ছাড়া এ সব কাজ করতে স্কুলগুলিকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রতিটি স্কুলের ক্লার্ক সংখ্যা কম। আবার এই ধরনের ডেটা তৈরি করা এবং কৃতি পড়ুয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে যত কর্মী প্রয়োজন, তা অপ্রতুল।’

আরও পড়ুনঃ আবারও সুখবর, এবার এই কর্মীদের বাড়ল DA! পুজোর আগেই বড় ঘোষণা রাজ্য সরকারের

প্রসঙ্গত, এই পদক্ষেপের অন্যতম আরও একটি কারণ উঠে এসেছে বিভিন্ন তথ্যের মাধ্যমে। শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, কলেজ থেকে উচ্চ শিক্ষার মধ্যে কত পড়ুয়া ড্রপআউট হয়েছে, তার তালিকা সরকারের কাছে থাকবে। এবং এই ড্রপআউটের সংখ্যা যাতে কমানো যায়, সে সম্পর্কে কড়া নজর রাখবে দফতর। এই পদ্ধতিতে আপাতত প্রায় ৬০ শতাংশ পড়ুয়া কেন্দ্রীয় ভাবে ভর্তি প্রক্রিয়ায় নাম নথিভুক্তকরণ করেছে। কিন্তু বাকি ৪০ শতাংশ পড়ুয়া কোথায় যাচ্ছে, সেই তথ্য সন্ধানেই ব্যস্ত পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা দফতর।

বাছাই করা গুরুত্বপুর্ন খবর পেতে গ্রুপে যুক্ত হোন