ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: চলতি বছরের গোড়া থেকে লোকসভা ভোটের প্রচার পর্ব পর্যন্ত নানা ঘটনা তৈরি হয়েছে সন্দেশখালিকে ঘিরে। সঙ্গে আবার জুড়েছে রেশন দুর্নীতি কাণ্ড। পাশাপাশি সন্দেশখালির মূল মাথা শেখ শাহজাহানের বাড়ি তল্লাশি অভিযানে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিল ED আধিকারিক ও আধাসেনা জওয়ানেরা। তার পরে একে একে সামনে আসে শাহজাহান এবং তাঁর সঙ্গী শিবু-উত্তমদের দাপটের কাহিনি। উঠে আসে নারী নির্যাতনের অভিযোগও। সব মিলিয়ে বেশ কয়েক মাস খবরের শিরোনামে সন্দেশখালি কাণ্ড রাজত্ব করেছে। তবে সম্প্রতি রাজ্যের একাধিক দুর্নীতি মামলা নিয়ে বড় পদক্ষেপ নিল বিচারপতি।
সূত্রের খবর রাজ্যে রেশন দুর্নীতি থেকে শুরু করে সন্দেশখালিতে যৌন হেনস্থার মামলা সহ একাধিক মামলায় CBI তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। কিন্তু সেই CBI তদন্তের নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য সরকার। সেক্ষেত্রে কাজের কাজ কিছুই হল না। আদালতে CBI এর তদন্তের নিরিখে রাজ্য সরকার হাইকোর্টের কাছে আবেদন জানায় যে, সন্দেশখালির আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রাজ্যের অধীনস্থ বিষয়। সেখানে হাই কোর্টের CBI তদন্তের নির্দেশ রাজ্যের ক্ষমতাকে ক্ষুণ্ন করছে অন্যদিকে রেশন মামলায় পুলিশ বিগত চার বছর ধরে তদন্ত করছে, তাই সেই তদন্তের ভার রাজ্য পুলিশের হাতেই দেওয়া হোক। কিন্তু সব আবেদনই খারিজ করে দিল আদালত।
মামলার তদন্তে বড় ধাক্কা রাজ্য সরকারের!
গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি বিআর গভাই এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চে রাজ্য সরকারের আবেদনের শুনানি হয়। দুই পক্ষের মন্তব্য বিচার করে আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, সবকটি মামলারই তদন্ত চালিয়ে যাবে CBI। অর্থাৎ CBI তদন্তের নির্দেশ বহাল রাখছে সুপ্রিম কোর্ট। অন্যদিকে রেশন দুর্নীতি মামলায় CBI তদন্তের বিরোধিতা করে রাজ্য সরকারের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি দাবি করেন, এই ঘটনায় পুলিশে যে ৪৩টি FIR হয়েছে, তার মধ্যে ৪২ টিতেই চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, তিনি এও দাবি করেন যে সন্দেশখালির ঘটনায় যে তিল কে তাল করা হয়েছিল, তার প্রমাণ স্বরূপ একাধিক ফেক ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু এসবের পরেও রাজ্য সরকারের এই সব যুক্তিই খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
কী বলছে সন্দেশখালির বাসিন্দারা?
সুপ্রিমকোর্টের এই রায়ে একপ্রকার স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল সন্দেশখালির বাসিন্দারা। সেখানকার বাসিন্দা অর্চনা ভুঁইয়া আদালতের রায়ে বলেন, ‘ আমার মতো যাঁদের জমি দখল হয়েছে, তাঁদের জন্য এই রায় শান্তির। আমাদের জমি-জায়গা যারা লুট করেছিল, আশা করি CBI তাদের শাস্তি দেবে।’ অন্যদিকে সন্দেশখালীর প্রতিবাদী মুখ পিয়ালি দাস ওরফে মাম্পি বলেন, ‘রাজ্য সরকার কার্যত শীর্ষ আদালতের কাছে চড় খেল। শীর্ষ আদালত বুঝেছে, রাজ্য সরকার সন্দেশখালির বিভিন্ন মামলার তদন্তের নামে কার্যত দোষীদের আড়াল করবে। অভিযোগকারীদের মিথ্যে প্রমাণ করতে চেষ্টা করবে। তাই এই রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুনঃ শিয়ালদা, হাওড়া লাইনে হুহু করে ছুটবে ট্রেন! লেট রুখতে যা করল পূর্ব রেল, কুর্নিশ জানাচ্ছে যাত্রীরা
সুপ্রিমকোর্টের এই সিদ্ধান্তের পর তৃণমূলের মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদার জানিয়েছেন, ‘মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে থাকবে সেটা খুব ভাল কথা। কিন্তু সেটা কত বছর ধরে চলবে এবং কতটা নিরপেক্ষতা থাকবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।’