প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: কিছুদিন আগে উত্তরের বন্যা ও ধসে বিপর্যস্ত পরিস্থিতির সময় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ ছিল পাহাড়ে এত বড় ধস ও বন্যার ঘটনার পরও এক টাকা দিয়ে সাহায্য করেনি কেন্দ্রীয় সরকার। তখনও মিডিয়ার সামনে রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতির খতিয়ান তুলে ধরেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এমতাবস্থায় ফের বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগের সুর প্রকাশ্যে তুলে ধরল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)।
বকেয়া ৫৩ হাজার কোটি টাকা!
রিপোর্ট মোতাবেক আজ অর্থাৎ শুক্রবার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। উপস্থিত ছিল একাধিক রাজ্যের সাংসদ। বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য এবং তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। এদিনের বৈঠকে ওড়িশা, উত্তরাখণ্ডের মতো বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলি যেখানে জানিয়েছে যে, বিপর্যয় মোকাবিলা খাতে কেন্দ্রের কাছে তাদের কোন অর্থই বকেয়া নেই সেখানে পশ্চিমবঙ্গ তুলে ধরেছে একাধিক কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ ২০১৯ সালের বুলবুল থেকে ২০২৪ সালের ডানা পরপর ঘূর্ণিঝড়ের কারণে রাজ্যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ গিয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৩,৬৯৬ কোটি টাকা।
বড় আশ্বাস স্বরাষ্ট্র কর্তাদের
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন জানান ২০১৯-এ রাজ্যে বুলবুল ঝড়ে সবথেকে বেশি অর্থ বকেয়া রয়েছে প্রায় ৬,৫১৮ কোটি টাকা। তাই সেক্ষেত্রে রাজ্য কবে ওই বকেয়া ৫৩ হাজার কোটি টাকা পাবে, তা স্বরাষ্ট্র কর্তাদের কাছে জানতে চান তৃণমূল সাংসদ। কিন্তু আজ আলোচ্যসূচিতে পশ্চিমবঙ্গ না থাকায় রাজ্যের সঠিক বকেয়ার পরিমাণ হাতে ছিল না স্বরাষ্ট্র কর্তাদের। তাই সেক্ষেত্রে কমিটির চেয়ারম্যান রাধামোহন দাস আগরওয়াল আগামী দশ দিনের মধ্যে স্বরাষ্ট্র কর্তাদের পশ্চিমবঙ্গের বকেয়া অর্থের পরিমাণ জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বড় খবর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
প্রসঙ্গত, শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস বরাবর দাবি করে আসছে যে মোদি সরকার প্রথম থেকেই আর্থিক তছরুপের অভিযোগ তুলে বকেয়ার পরিমাণ বাড়িয়েই চলেছে, যার জেরে সরকারের কোষাগারে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। যদিও রাজ্য যেই পরিমাণ অর্থ পাওয়ার দাবি করছে সেই পরিমাণ অর্থই যে দিতে হবে তার কোনো মানে নেই, সবটাই খতিয়ে দেওয়া হবে। তাই স্বরাষ্ট্র কর্তারা জানিয়েছেন, বিপর্যয়ের পরে রাজ্য প্রশাসন ক্ষয়ক্ষতির একটি অঙ্ক পাঠিয়ে থাকে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে কেন্দ্রের একটি দল গিয়ে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ কত হবে, তা ঠিক করে চূড়ান্ত অর্থ প্রদান করবে।