ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: দিন যত এগোচ্ছে প্রযুক্তির উন্নতি এতটাই বেড়ে চলেছে যে এখন যেকোনও কঠিন কাজ নিমেষেই খুব সহজ হয়ে উঠেছে। রেল থেকে শুরু করে ব্যবসা বাণিজ্য সব কিছুতেই যেন উন্নতির গতি বেড়েই চলেছে। এখন বাংলার মানুষ গঙ্গার নীচ দিয়ে মেট্রো করে নিজেদের গন্তব্যে যেতে পারছেন। কিন্তু এসবের মাঝে আপনি কি জানেন একসময় দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের সামনে অর্থাৎ গঙ্গার বুকে বিমান এসে দাঁড়িয়ে থাকত? অবাক হচ্ছে নিশ্চয়ই? ভাবছেন নিশ্চয়ই ফেক নিউজ। কিন্তু না। এটাই সত্যি। আজকের প্রতিবেদনের মাধ্যমে সম্পূর্ণটা জেনে নিন বিস্তারিত।
স্থলভাগ ছেড়ে জলভাগে অবতরণ বিমানের!
আজ থেকে প্রায় সাত দশক আগে গঙ্গার বুকে বিমান নেমে আসাকে খুব স্বাভাবিক চোখ দেখত সকলে। প্রত্যহ একাধিক বিমান এসে নামত গঙ্গায়, উড়ে যেত নানা দেশ-বিদেশে। তবে এই বিমান আজকালকার বিমানগুলির তুলনায় একদম সম্পূর্ণ আলাদা। এর পোশাকি নাম ছিল ‘সিপ্লেন’ বা ‘ফ্লায়িং বোট’। তখনকার দিনে স্থলে বিমান নামানো বা রাখার ব্যবস্থা ছিল না, তাই জলেই অবতরণ করত এই বিমান। বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে নদী বা হ্রদ থেকে দূর দেশে যাওয়ার উদ্দেশে তখন সিপ্লেনই ভরসা ছিল। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এখন যেটাকে এয়ারপোর্ট বলে , তখন সেই স্থানকে বলা হত ‘সিপ্লেন বেস’।
বালি ব্রিজে নামত বিমান!
যেহেতু এই ধরনের ফ্লায়িং বোট নদী বা হ্রদে অবতরণ করত, তাই তার কাছাকাছি একটি বেসের প্রয়োজন হত, যেখান থেকে যাত্রীরা যাতায়াত করতে পারবেন। তবে সেই সময় বিভিন্ন জায়গায় ফ্লাইং বোট নামত। তেমনই বিংশ শতকের কুড়ি ও তিরিশের দশকের বছরগুলিতে, যখন হুগলি নদীতে স্থায়ী কোনও সিপ্লেন বেস তৈরি হয়নি, বিভিন্ন জায়গায় এসে নামত ফ্লায়িং বোট। একবার অ্যালান কোবাম নামক এক বিশ্বখ্যাত ব্রিটিশ বৈমানিক, লন্ডন থেকে বিমানে পাড়ি দিয়েছিলেন সিডনিতে। যাওয়ার পথে, এলাহাবাদ থেকে আসেন কলকাতায়। সেই সময় ফ্লায়িং বোটের অবতরণ ঘটে হুগলি নদীর ‘বালি পিয়ার’-এ। আর এর মাধ্যমেই বোঝা যায় হাওড়ার বালিতে গঙ্গাতীরে একটি অস্থায়ী ফ্লায়িং বোট অবতরণ ক্ষেত্র ছিল তখন।
আরও পড়ুনঃ এবার সুদ মিলবে আরও বেশি, নয়া ফিক্সড ডিপোজিট স্কিম আনল SBI
প্রসঙ্গত, কলকাতার কাছেও গড়ে উঠেছিল তেমনই এক সিপ্লেন বেস। দমদম এয়ারোড্রোমে নামত ল্যান্ডপ্লেনগুলি, আর হুগলি নদীতে উইলিংডন ব্রিজ অর্থাৎ বর্তমান যেটি বালি ব্রিজ এর কাছে নামত বিমানগুলো। তবে কলকাতার নামের সঙ্গে এক সিপ্লেন এর বেশ মিল ছিল। নাম শর্ট এস৮ ক্যালকাটা। ইংল্যান্ডে, ১৯২৮ সাল শর্ট ব্রাদার্সের পক্ষ থেকে তিন ইঞ্জিনের এই ফ্লায়িং বোটটি বানানো হয়েছিল। প্রায় ১৪ জন যাত্রীর ধারণক্ষমতা ছিল সেখানে। বলা হয়ে থাকে এই বিমানের নামের থেকেই কলকাতার নামকরণ করা হয়েছিল।