শিক্ষা দানই ধর্ম, স্কুল থেকে অবসর নিয়ে মাত্র ‘১ টাকা’য় টিউশনি পড়াচ্ছেন কালনার শিক্ষক

Published on:

1 takar master

ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: কয়েক বছর আগে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন বোলপুরের সেই ১ টাকার ডাক্তার সুশোভন বন্দোপাধ্যায়। যাঁর চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠেছিল প্রায় হাজার-হাজার মানুষ। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় গত ২৬ জুলাই ২০২২ এ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আর এই আবহেই এবার খবরের শিরোনামে উঠে এলেন ১ টাকার মাষ্টারমশাই। নিশ্চয়ই ভাবছে মজা করা হচ্ছে? কিন্তু না মাত্র ১ টাকার বিনিময়ে এখনও শিক্ষা প্রদান করে চলেছেন এই মাষ্টারমশাই।

১ টাকার শিক্ষক

বর্তমান সমাজে দাঁড়িয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাও এখন ব্যবসা হয়ে গিয়েছে। তাইতো বিনামূল্যে শিক্ষা প্রদান করার এই ভাবনাটা সম্পূর্ণ কল্পনার বাইরে। কিন্তু সেই জায়গাতেও একজন শিক্ষক মাত্র ১ টাকার বিনিময়ে অসংখ্য ছাত্র ছাত্রীদের শিক্ষা প্রদান করে চলেছেন। কথা হচ্ছে কালনার কৃষ্ণদেবপুরের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সমীরণ প্রসাদ চক্রবর্তীর। তিনি ২০২১ সালে অবসর নিয়েছিলেন বিদ্যালয় থেকে। মাসে এক টাকার বিনিময়ে অঙ্ক থেকে ইংরেজি— সব বিষয়ের মুশকিল আসান করে দেন ছাত্রছাত্রীদের। তবে তিনি যে শুধু শিক্ষা প্রদান করেন তা কিন্তু নয়। সেই সঙ্গে তিনি জীবনের সমস্ত প্রতিকুল পরিস্থিতিতে লড়াই করার শিক্ষাপ্রদান করে।

WhatsApp Community Join Now

ষোলো আনার পাঠশালার পথচলা

২০১৮ সালে বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিস থেকে সেরা শিক্ষকের সম্মান পেয়েছিলেন সমীরণ প্রসাদ বাবু। জানা যায় ছাপার অক্ষরের মতো হাতের লেখা হওয়ায় সরকারি অনুষ্ঠানে শংসাপত্র লেখার জন্য ডাক পেয়েছিলেন তিনি। ছেলে সৌম্যদীপও পিএইচ ডি করছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাই শিক্ষা জীবনে অবসর নেওয়ার পর সমীরণ প্রসাদ বাবু ঠিক করেন বাড়িতে বাচ্চাদের পড়াবেন। মাসিক এক টাকা গুরুদক্ষিণার বিনিময়ে এলাকার ছেলেমেয়েদের পড়ানো শুরু করেন। একটি ঘরে সোম থেকে শুক্রবার সকালের ব্যাচে পড়ান প্রাথমিকের ছাত্রছাত্রীদের। আর সন্ধ্যার ব্যাচে পড়ান ক্লাস ফাইভ থেকে নাইনের পড়ুয়াদের। বর্তমানে দু’টি ব্যাচ মিলিয়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৪০। নাম রাখা হয়েছে ‘ষোলো আনার পাঠশালার’ ক্লাস।

জানা যায়, সমীরণ প্রসাদবাবুর এই কাজ করার ইচ্ছা প্রধানত পেয়েছিল ২ টাকার শিক্ষক সুজিত চট্টোপাধ্যায় এর কাছ থেকে। একসময়ে রোজ তাঁর ‘সদাই ফকিরের পাঠশালা’- য় তিনশোরও বেশি পড়ুয়াকে পড়াতেন। সেই জমানো টাকাও সবটা তিনি খরচ করতেন পড়ুয়াদের পিছনে। তেমনই ইচ্ছে রয়েছে এবার সমীরণেরও। তিনি বলেন, ‘ভাঁড় প্রায় ভরে এসেছে। এবার ভাঙব। সেই টাকা ছেলেমেয়েদের কাজেই লাগাব।’ এই সময় দাঁড়িয়ে এমন শিক্ষক পেয়ে সেখানকার ছাত্র ছাত্রী সহ অভিভাবকরা বেশ খুশি।

বাছাই করা গুরুত্বপুর্ন খবর পেতে গ্রুপে যুক্ত হোন