প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সামনেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। রাজ্যের এসআইআর প্রক্রিয়া ঘিরে তাই ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক উত্তাপ চরম আকার নিয়েছে। যদিও গোড়া থেকেই রাজ্যে SIR প্রক্রিয়া নিয়ে (SIR In Bengal) নারাজ ছিলেন শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। বরাবর তারা অভিযোগ করে আসছে যে বিজেপির বুদ্ধিতেই নির্বাচন কমিশন আসল ভোটার লিস্ট থেকে সরিয়ে দিচ্ছে। যদিও পাল্টা অভিযোগ তুলছে বিজেপিও। এমতাবস্থায় অবসরপ্রাপ্ত IAS অফিসার সুব্রত গুপ্তকে পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকা সংশোধনের বিশেষ রোল অবজার্ভার পদে নিয়োগ করল নির্বাচন সদন।
কে এই সুব্রত গুপ্ত?
রিপোর্ট মোতাবেক, গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার সন্ধেয় নির্বাচন কমিশন আচমকাই ১২ জন ইলেক্টোরাল রোল অবজার্ভার এবং একজন স্পেশাল রোল অবজার্ভার নিয়োগের ঘোষণা করে। আর সেই বিশেষ রোল অবজার্ভার পদে নিয়োগ করা হয় IAS অফিসার সুব্রত গুপ্তকে। তাঁর দায়িত্ব জেলার ডিইও অর্থাৎ জেলা শাসক এবং ইআরওদের কাজ খতিয়ে দেখা এবং এসআইআর প্রক্রিয়া কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী চলছে কি না, প্রতিটি ধাপের ওপর নজর রাখা। জানা গিয়েছে এই সুব্রত গুপ্ত ছিলেন ১৯৯০ ব্যাচের পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারের IAS অফিসার। এক সময়ে এই সুব্রত গুপ্তই তাঁর সিনিয়রিটির জন্য মুখ্য সচিব পদের অন্যতম দাবিদার ছিলেন।
কেন নবান্নর দেওয়া নাম গ্রহণ করেনি কমিশন?
উল্লেখ্য, নবান্ন বিশেষ রোল অবজার্ভার পদে নিয়োগের জন্য যেই তালিকা পাঠিয়েছিল, তাতে স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম, গ্রামোন্নয়ন দফতরের সচিব উলগানাথন, তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের সচিব শান্তনু বসু-সহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র IAS এর নাম ছিল। কারণ নবান্ন মনে করেছিল এঁরা অভিজ্ঞ, জেলার প্রশাসনিক কাঠামো সম্পর্কে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কিন্তু তাঁদের নাম গ্রহণ করেনি কমিশন। তাদের যুক্তি ছিল, গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মাথায় থাকা অফিসারদের এক মাসের জন্য অন্য দায়িত্বে পাঠালে সরকারি দফতরের দৈনন্দিন কাজে বড়সড় প্রভাব পড়বে। তাই তুলনামূলকভাবে কম গুরুত্বপূর্ণ দফতরে কর্মরত আইএএসদেরই রোল অবজার্ভার করা উচিত। শেষ পর্যন্ত তাই নাম উঠে এল সুব্রত গুপ্তর।
আরও পড়ুন: ইডির তল্লাশিতে র্যাপিডো ড্রাইভারের অ্যাকাউন্টে মিলল ৩৩১ কোটি টাকা
প্রসঙ্গত, জেলায় জেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত IAS অফিসারদের তালিকা প্রকাশ করেছে কমিশন। পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত IAS অফিসার স্মিতা পান্ডে, মুর্শিদাবাদ, মালদা জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত IAS অফিসার তন্ময় চক্রবর্তী, উত্তর ২৪ পরগনা, কলকাতা (উত্তর) দায়িত্ব পেলেন রণধীর কুমার, সি. মুরুগান দায়িত্বে পেলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা (দক্ষিণ), কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ির দায়িত্বে থাকবেন আর. অর্জুন, দার্জিলিং এবং কালিম্পং এর দায়িত্ব পেয়েছেন নিরঞ্জন কুমার, দেবী প্রসাদ করানাম পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ার দায়িত্ব পাবেন। অশ্বিনী কুমার যাদব উত্তর দিনাজপুর এবং দক্ষিণ দিনাজপুর, নীলম মিনা পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম প্রমুখ।