বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: সব ঠিক থাকলে, আগামী মাস অর্থাৎ ডিসেম্বরের 4 তারিখ ভারতের মাটিতে পা রাখতে পারেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তা নিয়েই দীর্ঘ 4 বছর ধরে অপেক্ষায় রয়েছেন দেশবাসী। জানা গিয়েছে, পুতিনের ভারত সফরে 23তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেই প্রধানমন্ত্রী মোদির সাথে দুই দেশের মধ্যেকার সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কথা বলবেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তবে তার আগেই চিন্তা বাড়াচ্ছে পুতিনের বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা (Arrest Warrant On Vladimir Putin)। প্রশ্ন উঠছে, কীভাবে এর মধ্যে দিয়ে ভারতে আসবেন তিনি?
পুতিনের বিরুদ্ধে জারি গ্রেফতারি পরোয়ানা
সালটা 2023। ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধে জড়ানোর অপরাধে সে বছরের মার্চ মাসে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা আইসিসি। কিন্তু তা সত্বেও ওই ওয়ারেন্টের মধ্যেই ভারত সফর করতে চলেছেন পুতিন। আর প্রশ্নটা এখানেই। কীভাবে গ্রেফতারির আদেশ জারি হওয়া সত্ত্বেও ভারতে আসবেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট? তাহলে কি ভারতের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়?
কীভাবে গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে ভারতে আসছেন পুতিন?
প্রথমেই বলি, নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত একটি বৈশ্বিক আদালত যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখে সবচেয়ে গুরুতর অপরাধের জন্য রাষ্ট্রনেতা সহ অন্যান্য ব্যক্তিদের কর্মকাণ্ডের বিচার করে থাকে। এই আদালতের অধীনে, গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, মানবতা বিরোধী অপরাধ এবং আগ্রাসনের মতো একাধিক অভিযোগের তদন্ত এবং বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এবার আসা যাক আসল প্রসঙ্গে।
2023 সালে ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধে জড়ানোর অপরাধে পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারির আদেশ জারি করে এই আদালত। কিন্তু তা সত্ত্বেও খোলা আকাশের নিচে ঘুরে বেড়াতে পারছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। এর সবচেয়ে বড় কারণ, রাশিয়া এবং ইউক্রেন আইসিসির সদস্য নয়। এ প্রসঙ্গে ক্রেমলিনের মুখপাত্র পেসকভ জানিয়েছেন, “অন্যান্য অনেক দেশের মতোই রাশিয়াও এই আদালতের আদেশ কিংবা রায়কে স্বীকৃতি দেয় না। এই আদালতের কোনও সিদ্ধান্তই রাশিয়ার ফেডারেশনের জন্য আইনতভাবে গুরুত্বপূর্ণ নয়। এক কথায়, এই আদালতের আদেশ রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের জন্য প্রযোজ্য নয়। তাই পুতিনের ভারত সফরের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না।
অবশ্যই পড়ুন: IPL-র আগেই কলকাতার বুকে দাপট দেখালেন KKR পেসার, খুশির হাওয়া নাইট শিবিরে
উল্লেখ্য, রাশিয়ার মতো ভারতও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের অংশ নয়। আইসিসি 124টি দেশকে অনুমোদন দিলেও ভারত এই আদালতের কোনও চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি। কাজেই বন্ধু দেশের মতোই নয়া দিল্লিও এই আদালতের শর্ত মানতে বাধ্য নয়। সবচেয়ে বড় কথা, যেসব রাষ্ট্রনেতার বিরুদ্ধে আইসিসি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তাদের ইতিমধ্যেই স্বাগত জানিয়েছে ভারত।