প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: পানাগড়ে (Panagarh Accident Case) তরুণীর গাড়ি ধাওয়া কাণ্ড নিয়ে চলতি বছর শুরুর মুখে ব্যাপক চাপানউতোর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সেই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন হুগলীর চন্দননগরের এক নৃত্যশিল্পী। মর্মান্তিক সেই দুর্ঘটনার এখনও সুবিচার পায়নি নৃত্যশিল্পীর পরিবার। হন্যে হয়ে বিচার ব্যবস্থার দিকে চেয়ে থাকলেও এখনও আদালত চুপ, আর এই অবস্থায় চট্টোপাধ্যায় পরিবারে নেমে এল আরেক দুর্যোগ। অত্যাধিক ঋণের বোঝার জেরে এবার বাড়ি ছাড়া হতে হল গোটা পরিবারকে।
পানাগড়ে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা
রিপোর্ট মোতাবেক, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি পানাগড়ে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল চন্দননগরের নৃত্যশিল্পী তথা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার কর্ণধার সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের। অভিযোগ উঠেছিল মদ্যপান করে কয়েকজন যুবক অন্য একটি গাড়ি নিয়ে সুতন্দ্রার গাড়িকে ধাওয়া করার জেরেই দুর্ঘটনা হয়েছিল। যদিও সুতন্দ্রার গাড়ির চালক প্রথমে এই কথা বললেও তিনি পরে একাধিকবার বয়ান বদলান। শেষে সুতন্দ্রার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতেই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আর এই গ্রেফতারির পরই স্বচ্ছ তদন্তের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মৃতার মা। এমতাবস্থায় গোটা চ্যাটার্জি পরিবারে নেমে এল ঋণের বোঝা।
বাড়ি ছাড়তে হল চ্যাটার্জি পরিবারকে
অনেক আগেই নৃত্যশিল্পী সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের বাবা ক্যান্সারে মারা গিয়েছিলেন। সেই সময় চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা খরচ হয়ে গিয়েছিল। পাশাপাশি বাড়ি ও দোকান করে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা ঋণ হয়েছিল। সেই ঋণ আজও শোধ করতে পারেনি তার পরিবার। তার মাঝেই মেয়ের মৃত্যুর এক বড় ধাক্কা গোটা পরিবারকে নাড়িয়ে দিয়েছে। যদিও সুতন্দ্রার মা তনুশ্রী চট্টোপাধ্যায় চেষ্টা করেছেন ঋণ শোধ করার। কিন্তু সেভাবে কিছু করে উঠতে পারেনি। এমনকি ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলেও কোনও লাভ হয়নি। তাই এবার বাড়িও দখল নিয়ে নিল ব্যাঙ্ক।
আরও পড়ুন: এবার OTP ভিত্তিক তৎকাল টিকিট, যাত্রীদের জন্য বিশেষ সুবিধা আনল রেল
জানা গিয়েছে, আগেই নৃত্যশিল্পী সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের দোকান নিয়ে নিয়েছিল ব্যাঙ্ক। কিন্তু তবুও বাড়তি থেকে গেছে ঋণ। তাই গত বৃহস্পতিবার চন্দননগরের নাড়ুয়ার বাড়ির দখলও নিয়ে নিল ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। এরূপ অবস্থায় বৃদ্ধ শাশুড়ি ও মাকে নিয়ে ব্যাপক ঝঞ্ঝাটের মুখে পড়েছে তনুশ্রী দেবী। বাধ্য হয়ে ঘরের জিনিস পত্র বের করে নেন। সংবাদ মাধ্যমে চোখে জল নিয়ে তিনি বললেন, “মেয়ে সুবিচার পাননি। এরমধ্যে ঘর ছাড়া হতে হল। আগামী দিনে যে কী হবে কিছুই বুঝতে পারছি না। ভাবতেও পারছি না কিছু।”