বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: উত্তর-পূর্বে সাত রাজ্যকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্তকারী ‘চিকেনস নেক’ ভারতের জন্য কৌশলঘতভাবে ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ। বিগত দিনগুলিতে সেই অঞ্চলকেই বারবার টার্গেট করে এসেছে চিন। শুধু তাই নয়, কাছের পড়শি বাংলাদেশের নজরেও এই ‘মুরগির ঘাড়’। গতবছর ভারতের এই ‘চিকেনস নেক’ নিয়েই বিরাট মন্তব্য করেছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। তারপর থেকেই নয়া দিল্লি ঢাকা সম্পর্কে বড়সড় ফাটল ধরে। এবার সেই চিকেনস নেক এলাকায় তিনটি বৃহৎ সামরিক ঘাঁটি (New Indian Military Bases) তৈরি করে ফেলল ভারত। এখানেই শেষ নয়, সেনা ঘাঁটি বানানোর পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলিকেও বড় বার্তা দিয়েছে নয়া দিল্লি।
কোথায় কোথায় তৈরি হয়েছে ভারতের নতুন সামরিক ঘাঁটি?
দ্য হিন্দুর রিপোর্ট অনুযায়ী, চিকেনস নেক ঘেঁষা বিহারের কিষানগঞ্জ, বাংলার উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া এবং অসমের ধুবড়িতে অর্থাৎ এই তিন জায়গায় নতুন ব্যাটেলিয়ান অফিস বা সামরিক ঘাঁটি তৈরি করেছে ভারত। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সামরিক ঘাঁটিগুলিতে সর্বোচ্চ 800 থেকে 900 জন ভারতীয় জওয়ান একসাথে থাকতে পারবেন। শুধু তাই নয় জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি করিডরের নিরাপত্তা জোরদার করতে এই তিন সামরিক ঘাঁটিতে প্যারা স্পেশাল ফোর্স, আরডিএফ বাহিনী এবং গোয়েন্দা ইউনিটের সদস্যদের মোতায়ন করা হচ্ছে।
বলাই বাহুল্য, শেখ হাসিনার পতনের পরই চিন এবং পাকিস্তানের কাছাকাছি এসেছে বাংলাদেশ। বিগত দিনগুলিতে ভারতের বিরুদ্ধে সব রকম ষড়যন্ত্রে বাংলাদেশকে কাছে পেয়েছে পাকিস্তান। শুধু তাই নয়, ভারত বিরোধী সমস্ত ছক এখন ওপারের মাটিতে বসেই করছে পশ্চিমের সন্ত্রাসীরা! বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের অফিসিয়ালদের আনাগোনা বেড়েছে দুই দেশে। তাছাড়াও চিনের সাথেও দিনগুলিতে ক্রমশ সখ্যতা বাড়িয়েছেন ইউনূস। সব মিলিয়ে, ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে বাংলাদেশের মাটিকে ব্যবহার করতে চাইছে বিরোধী দেশগুলি! সেই আবহে ভারতের চিকেনস নেক নিয়ে বারবার ওপারের প্রধানের মন্তব্য যথেষ্ট উদ্বেগ বাড়িয়েছে নয়া দিল্লির। এবার সেই কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাটিতে শক্তি বাড়াল ভারত।
অবশ্যই পড়ুন: মোলিনার পর তাঁর সহকারীকেও ছাড়ল মোহনবাগান, ইনি হচ্ছেন লোবেরার সহযোগী
উল্লেখ্য, চিকেনস নেক করিডোর বা শিলিগুড়ি করিডোর থেকে অসমের ধুবড়ির সামরিক ঘাঁটির দূরত্ব প্রায় 240 কিলোমিটার। অন্যদিকে কিষানগঞ্জ এবং চোপড়ার দূরত্ব যথাক্রমে 152-180 কিমি এবং শুধুমাত্র 52 কিলোমিটার। না বললেই নয়, উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার সামরিক ঘাঁটি থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত মাত্র 1 কিলোমিটারেরও কম দূরত্বে অবস্থিত। কাজেই এখান থেকে বাংলাদেশে ঘটে চলা কর্মকাণ্ডে নজরদারি অনেকটাই সহজ হবে নয়া দিল্লির পক্ষে।