প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবশেষে মুক্তি! বাংলাদেশের আদালত থেকে এবার জামিন মঞ্জুর করা হল বীরভূমের বাসিন্দা অন্তঃসত্ত্বা সোনালি খাতুনের (Sonali Khatun)। শুধু তাই নয়, তাঁর সঙ্গে গ্রেফতার হওয়া সুইটি বিবি-সহ আরও পাঁচ জনের জামিনও মঞ্জুর হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আদালতে। জানা গিয়েছে, সোনালির বাবা-মা শনিবার ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নিজেদের নাম রয়েছে বলে দাবি করেছেন। আর তাতেই সোনালি বিবি ও তাঁর স্বামীর ভারতে ফেরা নিয়ে আশার আলো বেশ উজ্জ্বল হয়েছে।
সোনালি খাতুন সহ একাধিককে গ্রেফতার
উল্লেখ্য, চলতি বছর গত জুন মাসে দিল্লিতে কর্মরত অবস্থায় সোনালি বিবি ও তাঁর স্বামী বাংলায় কথা বলায় তাঁদের ‘বাংলাদেশি’ তকমা দেওয়া হয়েছিল। এবং সেই কারণে দিল্লি পুলিশ আটক করে মোট ৬ জনকে। তাঁদের মধ্যে একজন শিশুও আছে, সে সোনালি বিবির সন্তান। সেই কারণে বীরভূমের পাইকর গ্রামের এই পরিবারের তরফে এই পুশব্যাক নিয়ে মামলা দায়ের করে আদালতে। হাই কোর্টের পর সুপ্রিম কোর্টে সেই মামলা ওঠে। এদিকে চাঁপাই নবাবগঞ্জের পুলিশ তাঁদের অনুপ্রবেশকারী হিসেবে ধরে এবং সেখানকার সংশোধনাগারে বন্দি করে রাখা হয়। এরপর সোনালিদের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগে বাংলাদেশ পুলিশ মামলাও রুজু করে। তবে গতকাল অর্থাৎ সোমবার চাঁপাই নবাবগঞ্জের আদালত সোনালিদের জামিন মঞ্জুর করে। প্রায় ১০০ দিন সংশোধনাগারে বন্দি থাকার পরে এ দিন সন্ধ্যায় মুক্তি পান সোনালিরা।
২০০২ তালিকায় পাওয়া যায় নাম
রিপোর্ট মোতাবেক ভারতে বীরভূমের বাসিন্দা অন্তঃসত্ত্বা সোনালি খাতুন সহ বাকিদের পুশব্যাক করা নিয়ে মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। মামলা করেছিলেন সোনালির বাবা ভদু শেখ। পরিবার এবং আইনজীবীদের দাবি ছিল সোনালিরা ভারতের নাগরিক, তাঁদের বৈধ নথিও রয়েছে। সোনালির বাবা-মাও জানিয়েছেন যে, গত শনিবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নিজেদের নাম খুঁজে পেয়েছেন। সোনালির তরফে আইনজীবী রঘুনাথ চক্রবর্তী নিশ্চিত করেছেন, সোনালির বাবা-মায়ের নাম বীরভূম জেলার মুরারাই বিধানসভা কেন্দ্রের ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় পাওয়া গিয়েছে।
আরও পড়ুন: সব মোবাইলে প্রি-ইনস্টল থাকবে সঞ্চার সাথী, নির্দেশ কেন্দ্রের! কী কাজ এই অ্যাপের?
পরবর্তী শুনানি কবে?
সোমবার সোনালি খাতুনের পুশব্যাক মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্টে উঠলে প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত জানিয়েছেন, ” এই ব্যাপারে আমরা কোনও নির্দেশ দিচ্ছি না। আপনারা দেখুন মানবিকতার খাতিরে কী করা যেতে পারে।” শেষে সোনালির বাবা বদু শেখের আইনজীবী আর্জি জানান, সোনালি খাতুনের ৮ বছরের ছেলে ওখানে রয়েছে, সেও জেলবন্দি। সরকার এই বিষয়টি বিবেচনা করার সময় যেন সেই নাবালকের কথাও মাথায় রাখে। এরপরই কেন্দ্রের তরফে শুনানির দিন পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়। তখনই প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত কেন্দ্রের উদ্দেশে দেয় যে মানবিকতার খাতিরে সোনালিদের ভারতে ফেরার অনুমতি দিতে হবে এবং প্রয়োজনে তাঁদের উপর নজরদারি এবং হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শও দেয়। আগামী বুধবার এই মামলার শুনানি হবে।