প্রাথমিকে ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বহাল, তবে …! বড় রায় কলকাতা হাইকোর্টের

West Bengal Primary Recruitment Case (1)

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: প্রাথমিক নিয়োগ মামলায় (West Bengal Primary Recruitment Case) ৩২ হাজার শিক্ষককে বিরাট স্বস্তি দিয়ে এবার বড়সড় রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ৩২ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় এদিন সিঙ্গেল বেঞ্চের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ খারিজ করেছে আদালত। অর্থাৎ, ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি আপাতত বহাল থাকছে। ফলত, হাঁফ ছেড়ে বাঁচল তাঁরা। তবে চাকরি বহাল থাকলেও দুর্নীতি তদন্ত চলতে থাকবে।

মামলার প্রেক্ষাপট

জানিয়ে রাখি, ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গোটা প্যানেল বাতিল হয়। সেই রায় বহাল রেখেছিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে পরে প্রাথমিক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে আবারও নতুন করে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়। ২০২৩ সালে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রশিক্ষণহীন ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছিল। তিনি জানিয়েছিলেন, চাকরি বাতিল হলেও শিক্ষকদের স্কুলে যেতে হবে এবং তিন মাসের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র যোগ্য প্রার্থীরাই চাকরি পাবেন।

কিন্তু সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিলে পর্ষদ। সে সময় বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের বেঞ্চ চাকরি বাতিলের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। এমনকি তাঁরা আরও নির্দেশ দেন যে, নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। এরপর রাজ্য এবং পর্ষদ আবারও সুপ্রিম কোর্টে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে। তবে শীর্ষ আদালত সেই মামলা পাঠায় কলকাতা হাইকোর্টে। আর এবার দু’পক্ষের বক্তব্য শুনেই ডিভিশন বেঞ্চ চূড়ান্ত রায় দিল।

বলে রাখি, ২০২৪ সালে দুই দফায় নিয়োগ প্রক্রিয়া হয়েছিল। প্রথমবার ৪২ হাজার ৯৪৯ জন, পরে আরও ১৬ হাজার ৫০০ জন। তবে অভিযোগ উঠেছিল, দুই দফাতেই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কিছু গাফিলতি ছিল। আর মামলাকারীরা দাবি করেছিল, ইন্টারভিউ থেকে শুরু করে মেধা তালিকা, সব জায়গায় দুর্নীতি রয়েছে। তবে পর্ষদ দাবী করেছিল যে, কয়েকটি ক্ষেত্রে অনিয়ম ধরা পড়লেও সেগুলি সংশোধন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি-র যোগ্যদের বয়সে দিতে হবে ছাড়! বড় নির্দেশ হাইকোর্টের

স্বস্তিতে প্রাথমিক শিক্ষকরা

এদিকে সমস্ত পক্ষের যুক্তি শুনে এদিন চূড়ান্ত রায় দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। এতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল ৩২ হাজার শিক্ষক। আদালতের পর্যবেক্ষণ, নয় বছর পর একসঙ্গে এত জনের চাকরি কেড়ে নেওয়া হলে শিক্ষা ব্যবস্থার উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। সেই কারণেই এই বড়সড় রায়ের পথে হাঁটা হল। তবে বলে রাখি, ১২ নভেম্বর শুনানি পর্ব শেষ হলেও তিন সপ্তাহ পর এল চূড়ান্ত রায়।

Leave a Comment