প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসির নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা নিয়ে একের পর এক জটিলতা তৈরি হয়ে চলেছে। কিছুতেই কাটছে না সেই জট। এমতাবস্থায় এসএলএসটি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অভিজ্ঞতার জন্য বরাদ্দ ১০ নম্বর নিয়ে চলা জটিলতার মাঝেই বড় নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। স্কুল সার্ভিস কমিশনকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি। এছাড়াও নতুন করে এসএসসি যে পরীক্ষা নিচ্ছে, তার ভবিষ্যত নিয়েও অনিশ্চয়তা প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)।
বরাদ্দ ১০ নম্বর নিয়ে থেকেই গেল জটিলতা
গতকাল অর্থাৎ বুধবার, হাইকোর্টে এসএসসি শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার জন্য বরাদ্দ ১০ নম্বর কাদের জন্য প্রাপ্য এবং কীভাবে তা বন্টন করা হবে, তা নিয়ে আদালতে দীর্ঘ সওয়াল-জবাব হয় বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে। মামলাকারীদের পক্ষের আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র এবং প্রতীক ধর প্রশ্ন তোলেন যে, নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাঝপথে কি নিয়ম বা ‘রুলস’ পরিবর্তন করা সম্ভব? আর এই প্রশ্নের আবহে শুনানি চলাকালীন বিচারপতি সিনহা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন। তিনি স্পষ্ট জানান, যেখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ১ নম্বরের ব্যবধানে একজন প্রার্থীর ভবিষ্যৎ বদলে যেতে পারে, সেখানে ১০ নম্বর এক বিশাল ব্যবধান। তাই এই ১০ নম্বরের বিষয়টি লঘু করে দেখার কোনো সুযোগ নেই।”
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ বিচারপতির
এসএসসি-র মেধার ভিত্তিতে দেওয়া অতিরিক্ত দশ নম্বরের মামলায় বিচারপতি অমৃতা সিনহা এদিন কলকাতা হাইকোর্টে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসির নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় আরও এক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দেন। যেখানে এইমুহুর্তে এসএলএসটি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অভিজ্ঞতার জন্য বরাদ্দ ১০ নম্বর নিয়ে এক জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে সেখানে কমিশনকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। আসলে ১০ নম্বরের বৈধতা এবং আইনি লড়াই নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে থাকায়, সেই প্রেক্ষিতেই স্বচ্ছতা বজায় রাখতে কমিশনকে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। যাতে ভবিষ্যতে কোনো প্রার্থী দাবি না করবে না যে তাঁরা এই মামলা সম্পর্কে অবগত ছিলেন না।
আরও পড়ুন: খোদ মমতার কেন্দ্র ভবানীপুর থেকে এখনও বাকি ৪১ হাজার SIR ফর্ম কালেক্ট! জানাল কমিশন
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতির জন্য চলতি বছর এপ্রিলে ২০১৬ সালের পুরো প্যানেল বাতিল করে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এরপরই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে একাধিক বিতর্ক। সেই বিতর্কের বেড়া ভেঙে ইতিমধ্যেই নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার শেষ হয়েছে। কিন্তু সেখানে পুরাতন এবং নবাগতদের একসঙ্গে পরীক্ষা নেওয়া নিয়ে কমিশনের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলে সুপ্রিম কোর্ট। কোর্টের দাবি, “আমরা একবারও বলিনি নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার পদ্ধতিতে ফ্রেশারদের ইনক্লুড করতে। কোর্ট শুধু বলেছিল, একজনও যেন অযোগ্য পরীক্ষার্থী পরীক্ষা না দেয় এবং দুর্নীতি মুক্ত পরীক্ষা যাতে হয়। রাজ্য যখন পুরনো-নতুনদের মিলিয়ে একসঙ্গে পরীক্ষা নিয়েছে, তখন সবটা তারাই বুঝবে।” এরপরই হাইকোর্টে সমস্ত মামলা ট্রান্সফার করা হয়।