প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: খবরের শিরোনামে ফের উঠে এল আরজি কর কান্ডের (RG Kar Case) ঘটনা! আর্থিক দুর্নীতি মামলায় এবার সরাসরি টার্গেট করা হল আখতার আলিকে। অভিযোগ অসুস্থ ভাইয়ের চিকিৎসা ও ঋণের টাকা মেটানোর নাম করে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা তোলেন আখতার আলি। শুধু তাই নয়, ‘ঘুষ ও কাটমানি’র যাবতীয় টাকা স্ত্রীর অ্যাকাউন্টেই পাঠাতেন আখতার আলি। আর জি করের আর্থিক দুর্নীতি মামলার চার্জশিটে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরল সিবিআই।
আখতার আলির বিরুদ্ধে চার্জশিট
রিপোর্ট অনুযায়ী, গত সোমবার আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে আরজি কর হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতি মামলায় আখতার আলি ও শশীকান্ত চন্দকের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। আর সেই চার্জশিটে প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠে আসে। জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সন্দীপ ঘোষ আরজি কর হাসপাতালে যোগ দেওয়ার অনেক আগে অন্য ভেন্ডরদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে টাকা তুলত আখতার আলি । একটি বেসরকারি সংস্থার কর্তার কাছ থেকে জোর করে নাকি ৫০ হাজার টাকাও দাবি করেন।
ঘুষের টাকা যেত স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে!
সোমবার, আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতির চার্জশিটে সিবিআই আখতার আলির বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর দাবি তুলে জানানো হয় যে, অসুস্থ ভাইয়ের চিকিৎসা ও ঋণ মেটানোর নাম করে আখতার আলি এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২ লাখ ৩৯ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছিলেন । শুধু তাই নয় ‘ঘুষ ও কাটমানি’ হিসেবে পাওয়া যাবতীয় টাকা তাঁর স্ত্রী কাশ্মীরি বেগমের অ্যাকাউন্টে পাঠাতেন আখতার। আর সেই সময় আরজি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষ হিসেবে আসেন সন্দীপ ঘোষ। কিছুদিন যেতেই তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব বেশ গাঢ় হয় কিন্তু সেই বন্ধুত্বে চিড় ধরতেই সন্দীপের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তুলতে শুরু করেন আখতার।
বিপ্লব সিংহ ও সুমন হাজরাও জড়িত
সিবিআই চার্জশিটে জানিয়েছেন যে, ২০২০ সাল থেকেই একটি বেসরকারি সংস্থা ই টেন্ডারের মাধ্যমে আরজি করে মেডিক্যাল সামগ্রী সরবরাহ হযত। ওই সংস্থাটিকে আখতার আলি ৪ কোটি ১৪ লাখ টাকার বরাত দেন। যার বদলে অসুস্থ ভাইয়ের চিকিৎসা ও ঋণ মেটানোর নাম করে আখতার ব্যবসায়ীকে ২ লাখ ৩৯ হাজার টাকা দিতে বলেন। বাধ্য হয়ে ওই টাকা ব্যবসায়ী একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে কয়েক দফায় আখতারের স্ত্রীর নামে পাঠান। আর সেই কথা নিজের মুখে স্বীকার করেন ওই সংস্থার মালিক। এই দুর্নীতিতেও দুই ভেন্ডর বিপ্লব সিংহ ও সুমন হাজরা জড়িত ছিলেন বলে চার্জশিটে জানিয়েছে সিবিআই।
আরও পড়ুন: আজই শেষ দিন, ওয়াকফ সম্পত্তির কতটা তথ্য আপলোড করল নবান্ন? দেখুন বাকিদেরও হাল
আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি প্রসঙ্গে পেশ করা চার্জশিটে সিবিআই আরও জানিয়েছে যে, যখনই হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলির ‘সংঘর্ষ’ হয়, তখনই তিনি নিজের অবস্থান পরিবর্তন করে সন্দীপ ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে শুরু করেন। ইতিমধ্যে আখতার আলি কীভাবে নিজে সন্দীপ ও তাঁর ঘনিষ্ঠ ভেন্ডরদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতেন, সেই চিত্রও সিবিআই চার্জশিটে তুলে ধরেছে। এ ছাড়াও এক ব্যবসায়ী আখতার আলি ও তাঁর পরিবারের ভ্রমণের জন্য ১ লাখ ৪৯ হাজার টাকা খরচ করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। আর এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে।