সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: পাকিস্তানের এক মহিলা এবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছেই করে বসল ন্যায় বিচারের আর্জি (Pakistani Woman Appeals To PM Modi)। আসলে পাকিস্তানের করাচির বাসিন্দা নিকিতা নাগদেব নামের ওই মহিলা অভিযোগ করছেন যে তাঁর স্বামী নাকি তাঁকে পাকিস্তানে ফেলে রেখে ভারতে দ্বিতীয় বিয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আর গোটা বিষয়টি নিয়ে এখন দুই দেশের মধ্যে আইনি জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
বিয়ের পরেই বদলে যায় পরিস্থিতি
এনডিটিভি-র এক প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা গিয়েছে, নিকিতা ২৬ জানুয়ারি ২০২০ তে করাচিতে বিক্রম নাগদেব নামের এক ভারতীয় ভিসাধারী ব্যক্তিকে হিন্দু রীতিতে বিয়ে করেছিলেন। তবে এক মাসের মধ্যে অর্থাৎ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তে স্বামী তাঁকে ভারতে নিয়ে আসেন। আর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বদলে যায় সবকিছু। তিনি দাবি করছেন, ৯ জুলাই ২০২০ তে আঁটারি সীমান্তে নিয়ে গিয়ে ভিসা সমস্যার অজুহাতে তাঁকে জোর করে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আর এরপর বিক্রম আর কখনও তাঁকে ভারতে ফেরানোর উদ্যোগ নেননি। নিকিতা বলেছেন, আমি বারবার স্বামীকে বলেছিলাম আমাকে ফেরত আনতে। তবে তিনি একবারও রাজি হননি। আজ যদি ন্যায় বিচার না পাওয়া যায় তাহলে নারীদের ন্যায় বিচারের উপর থেকে সম্পূর্ণ বিশ্বাস উঠে যাবে।
নিকিতা দাবি করছে, বিয়ের পরপরই স্বামীর পরিবার তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতে শুরু করে। ভারত থেকে পাকিস্তানে ফেরার পর জানতে পারি যে, আমার এক আত্মীয়র সঙ্গেও সে সম্পর্ক রেখেছিল। এমনকি শ্বশুরকে জানালে তিনি বলেন যে, ছেলেদের সম্পর্ক থাকতেই পারে। তাতে কিচ্ছু করার নেই। এদিকে করোনা মহামারীর সময় স্বামীর চাপেই তাঁকে পাকিস্তানে ফিরতে হয় বলে দাবি করেন নিকিতা। আর সেই থেকেই তিনি আর ভারতের প্রবেশের কোনওরকম অনুমতি পাননি।
দ্বিতীয় বিয়ের অভিযোগ
এরপর করাচিতে ফিরে নিকিতা জানতে পারেন যে তাঁর স্বামী দিল্লিতে এক নারীর সঙ্গে দ্বিতীয় বিবাহের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে তাঁদের প্রথম বিয়ে আইনগতভাবে বহাল। সেই কারণে ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ তিনি লিখিত অভিযোগ জানান এবং আইনি সহায়তা চান। সেই সূত্রে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট অনুমোদিত সিন্ধি পঞ্চ মধ্যস্থতা এবং আইনী পরামর্শ কেন্দ্র বিষয়টি হাতে নিয়েছিল। এরপর বিক্রম এবং তাঁর সঙ্গে বিয়ের অভিযোগে থাকা মহিলাটিকে নোটিশ পাঠানো হয়। পাশাপাশি শুনানিও অনুষ্ঠিত হয়। তবে সেখানে কোনও সমাধান হয়নি।
আরও পড়ুন: পুলিশের পরিচয় দিয়ে মহিলার সাথে সহবাস! পূর্ব বর্ধমানে গ্রেফতার সিভিক ভলেন্টিয়ার
এদিকে ৩০ এপ্রিল ২০২৫ এর রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় যে, নিকিতা এবং বিক্রম দু’জনই ভারতীয় নাগরিক নন। তাই মামলার বিচার পাকিস্তানেই হবে। সেখানে বিক্রমকে পাকিস্তানে ডিপোর্ট করার সুপারিশ করা হয়। উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের মে মাসে ইনডোর সোশ্যাল পঞ্চায়েতও একই সুপারিশ করেছিল। আর ইন্দোর কালেক্টর আশীষ সিং নিশ্চিত করেছিলেন যে, তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং রিপোর্টের ভিত্তিতেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।