আর্থিক সংকটের মুখে ECL! লোকসান প্রায় ৬৫০ কোটি, বেতন পাচ্ছেন না শ্রমিকরা

Asansol

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: আসানসোলে (Asansol) কয়লাখনি এলাকায় পুনর্বাসন প্রকল্পে কেন্দ্র টাকা দেওয়া বন্ধ করেছে বলে প্রথম থেকেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে রাজ্য সরকার। ধস কবলিত এলাকায় আবাসনের দায়িত্বে এডিডিএ বা আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ। তাদের দাবি, পুনর্বাসন প্রকল্পে পরিকল্পনা অনুযায়ী টাকা দিচ্ছে না কয়লা মন্ত্রক, আর এবার সেই কারণে বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়ল গোটা সংস্থা। লোকসানের মুখে পড়ল ৬৫০ কোটি টাকা, শুধু তাই নয় এখনও মেলেনি শ্রমিকদের বেতন।

ক্রমেই বাড়ছে ইসিএলের ক্ষতির পরিমাণ

স্থানীয় রিপোর্ট অনুযায়ী গত সোমবার, ইসিএলের সদর দপ্তর সাঁকতোড়িয়ায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল কর্পোরেট জয়েন্ট কনসুলটেটিভ কমিটি বা JCC-র বৈঠক। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিটির সকল সদস্য শ্রমিক। আর সেখানেই প্রকাশ্যে এল কেন্দ্রীয় সংস্থা ইসিএলের আর্থিক বিপর্যয়ের ভয়ঙ্কর ছবি। ইসিএল কর্তৃপক্ষ এদিন কর্পোরেট জেসিসির মিটিংয়ে লাভ, ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ হিসেব তুলে ধরেছেন। তিনি জানিয়েছেন, গত অর্থবর্ষে ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ইসিএলের ক্ষতির পরিমাণ ছিল ১০৫ কোটি ৫৭ লক্ষ। চলতি অর্থবর্ষে হিসেব অনুযায়ী অক্টোবর মাস পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ ৬৪৯.৪৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ, এক বছরেই ইসিএলের ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ৫৫০ শতাংশ। যার দরুন এইমুহুর্তে ‘ভাঁড়ে মা ভবানী’ অবস্থা।

ক্ষুব্ধ সংস্থার কর্মীরা

সোমবার, ইসিএলের বৈঠকে কর্তৃপক্ষ সকল শ্রমিক সদস্যদের উদ্দেশ্যে জানিয়েছেন যে দিনের পর দিন লোকসান বাড়তে থাকায় এই মুহুর্তে সংস্থার ভাঁড়ারে পড়ে রয়েছে মাত্র এক হাজার কোটি টাকা! যা দিয়ে শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ড, এলআইসি ও ঠিকাদারদের বকেয়া মেটাতে হচ্ছে। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আগামী ১২ ডিসেম্বর টেনেটুনে অর্ধেক বেতন দেওয়া হবে। বাকি অর্ধেক মেটানো হবে চলতি মাসের ২২ তারিখ। পাশাপাশি, রবিবার কাজ করলে দ্বিগুণ বেতন দেওয়ার রীতিও তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল ইসিএল। আর এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই চক্ষু চড়কগাছ বৈঠকে উপস্থিত কমিটির সদস্য শ্রমিক নেতাদের। তীব্র প্রতিবাদে নেমেছেন তাঁরা। সমস্ত প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়া হয়। তুমুল দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন শ্রমিক নেতা ও সংস্থার আধিকারিকরা।

আরও পড়ুন: ১ লক্ষ কোটি টাকা দাবিহীন ভাবে পড়ে রয়েছে! তুলে নেওয়ার আহ্বান মোদীর

প্রসঙ্গত, ECL কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিভিন্ন বিদ্যুৎ সংস্থা রেকে করে ইসিএলের থেকে কয়লা নিচ্ছে না। তাই সড়ক পথেই বেশি কয়লা বিক্রি করে লোকসান মেটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এতে রাজি হয়নি সিটু, আইএনটিটিইউসি, এইচএমএস, এআইটিইউসি সহ কোনও শ্রমিক সংগঠনই। সিটু নেতা গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘ ইসিএলের এক বছরে ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে ৫৫০ শতাংশ। বিভিন্ন বিদ্যুৎ সংস্থাকে কয়লা খনির বরাত দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন খনি বেসরকারি সংস্থার হাতে। ইসিএলের কয়লার উপর রয়েছে গুণ্ডা ট্যাক্স। তাই কেউ বেশি দাম দিয়ে কয়লা নিচ্ছে না। এ‌ই পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রীয় নীতি দায়ী।”

Leave a Comment