শেষ হাসি হাসল দক্ষিণ আফ্রিকা, ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে লড়েও ভারতকে জেতাতে পারলেন না তিলক

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: ভারতীয় বোলারদের ব্যর্থতা ঢাকতে পারলেন না ব্যাটাররা। যে দলটা, টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম আসরেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে একেবারে হেলায় হারিয়েছিল। সেই টিম ইন্ডিয়াকে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে (India Vs South Africa) কার্যত অসহায় দেখাল। ব্যাট বল উভয় ক্ষেত্রেই চরম ব্যর্থতা নিয়ে ফিরতে হল সূর্যকুমার যাদবদের। অন্যদিকে প্রথম আসরে ধাক্কা খেয়েও ঘুরে দাঁড়াল এইডেন মার্করাম বাহিনী। তাতে 5 ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ফিরল সমতায়।

শত চেষ্টা করেও প্রোটিয়াদের রুখতে পারল না ভারত

চলতি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের শুরুটা টস জয় দিয়েই করেছিল ভারত। এদিন ভাগ্যের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। সেই সূত্রেই, প্রথমে ব্যাট করতে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাতে অনেকেই আশায় ছিলেন হয়তো প্রতিপক্ষকে অল্প রানে গুঁড়িয়ে দিয়ে মাঠে নেমে পড়বে ভারত। কিন্তু সেগুড়ে বালি… এদিন শুরুর দিকে ওপেনার রিজা হেনড্রিকসের উইকেট হারালেও ব্যাট হাতে দুর্দান্ত শুরু করেছিলেন অবসর ভেঙে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা কুইন্টন ডি কক।

কলকাতা নাইট রাইডার্স থেকে বাদ পড়া এই তারকাই এদিন প্রথম ভারতের জয়ের পথে কাটা ছড়ানোর কাজটা করেন। প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানরা যেখানে ব্যাট হাতে দাপট দেখাচ্ছিলেন সেই পর্বে দাঁড়িয়ে প্রতিবার ডাহা ফেল করেছেন ভারতীয় বোলাররা। এদিন শুরুতে বরুণ চক্রবর্তীর দুই উইকেটের পর শত চেষ্টা করে একটি উইকেট তুলতে পেরেছিলেন অক্ষর প্যাটেল। এছাড়া জসপ্রীত বুমরাহ থেকে শুরু করে অর্শদীপ সিং কেউই খাতায় উইকের যোগ করতে পারেননি। আর সেখানেই প্রথম ধাক্কাটা খেয়েছিল ভারত। ভারতীয় বোলারদের চূড়ান্ত ব্যর্থতার সুযোগ নিয়ে বৃহস্পতিবার 46 বলে 90 রান তুলে ফেলেন কুইন্টন। অন্যদিকে, অধিনায়ক মার্করাম 29 রান করে মাঠ ছেড়ে ছিলেন।

এই দুই প্লেয়ারের চলে যাওয়ার পর ভারতের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ডোনোভন ফেরেরা এবং ডেভিড মিলার। এই দুই ব্যাটসম্যানই যথাক্রমে 30 এবং 20 রান করে অপরাজিত ছিলেন। সেই সূত্র ধরেই মাত্র 4 উইকেট খুইয়ে ভারতকে 214 রানের বড় লক্ষ্য দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। বলতে কোনও দ্বিধা নেই, একমাত্র টিম ইন্ডিয়ার বোলিং বিভাগের ব্যর্থতার কারণেই এদিন কঠিন লড়াইয়ের মুখে পড়তে হয়েছিল ব্যাটসম্যানদের। আর সেটা বোঝাই গিয়েছে ভারতের ইনিংস শুরু হতেই। আজ দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই আউট হয়ে যান শুভমন গিল। তবে ভরসা ছিল অভিষেক শর্মার উপর। কিন্তু তিনিও আজ 17 রানে হাত তুলে দেন।

অধিনায়ক হয়ে গত ম্যাচের মতো বৃহস্পতিবারও দলের জন্য কিছুই করতে পারেননি, সূর্যকুমার। অল্প সময়ের ব্যবধানে একের পর এক উইকেট পড়ে যাওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে ভারতকে দুর্বল দেখাচ্ছিল। তবে দলের দুঃসময়ে চেষ্টা করেছিলেন অক্ষর প্যাটেল। শেষ পর্যন্ত তাঁকেও ফিরতে হয় 21 রানেই। সময় যত গড়াচ্ছিল উইকেট সংখ্যার সাথে সাথেই আসা হারাচ্ছিলেন ভারতীয় ভক্তরা। এমন সময় দলের জন্য ঢাল হয়ে দাঁড়ান তিলক বর্মা এবং গত ম্যাচের নায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। দুই স্বদেশীর হাত ধরে স্বাভাবিক গতিতেই চলছিল ভারতের ইনিংস। তবে চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছিল রানের পাহাড়। ওভার যেহেতু সীমিত কাজেই, বলের সংখ্যা কমলেও রানের পাহাড়ে সে অর্থে দাগ কাটতে পারছিল না ভারত।

অবশ্যই পড়ুন: ১ বছরে ২ লাখ হয়েছে প্রায় ১৮ লাখ, রকেটের গতিতে রিটার্ন দিয়েছে ৫ টাকার এই স্টক

এরপর একটা সময় দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে পরাজয় স্বীকার করে মাঠ ছাড়েন পান্ডিয়াও। তাতে ভারতের ভেঙে পড়া আত্মবিশ্বাস আরও জোরালো ধাক্কা খায়। তবে সেসবের মধ্যে দিয়েও দলকে জেতানোর আমরণ চেষ্টা করে গিয়েছেন তিলক বর্মা। কিন্তু কথায় আছে, ভুল করলে তার মাসুল গুনতেই হয়। প্রথম ইনিংসে বোলারদের ব্যর্থতার দায় কাঁধে তুলে ধ্বংসস্তূপের উপর দাঁড়িয়ে লড়েও জয়টা নিশ্চিত করতে পারলেন না বর্মা। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের ক্রমাগত আক্রমণের সামনে ফিকে হয়ে গেল তাঁর 62 রানের ইনিংস। তাতে 51 রানের বিরাট ব্যবধানে জিতে প্রথম ম্যাচের বদলা নিল প্রোটিয়া দল।

Leave a Comment