প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: হাতে মাত্র আর কয়েকটা মাসের অপেক্ষা, তারপরেই রাজ্য জুড়ে শুরু হবে ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। এদিকে ভোট যত এগিয়ে আসছে ততই কাজ বাড়ছে রাজনৈতিক দলগুলির। জনসাধারণের সুবিধার কথা মাথায় রেখেই একের পর এক প্রকল্প চালু হচ্ছে। এবার সকলকে চমকে দিয়ে বহু দিনের ফেলে রাখা প্রকল্প বাস্তববায়িত হতে চলেছে। জানা গিয়েছে চলতি মাসেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গঙ্গাসাগর সেতুর (Gangasagar Bridge) শিলান্যাস করতে চলেছেন।
প্রকল্পের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে লার্সেন অ্যান্ড টুব্রোকে
প্রশাসন সূত্রের খবর দীর্ঘ দিন ধরেই সাগরে মুড়িগঙ্গা নদীর উপরে গঙ্গাসাগর সেতুর দাবি উঠে আসছিল। প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হলেও বহু দিন দরপত্র সংক্রান্ত জটিলতায় আটকে ছিল কাজ। কিন্তু এবার সেই পরিকল্পনায় আশার আলো দেখা যাচ্ছে। কারণ এই প্রকল্প বাস্তবে রূপায়িত করার জন্য ইতিমধ্যে পূর্ত দফতরের তৎপরতায় নির্মাণকারী সংস্থা নির্বাচন হয়ে গেছে। জানা গিয়েছে প্রকল্পের দায়িত্ব দেওয়া হবে লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো। এছাড়াও চলতি মাসেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেতুর শিলান্যাস করতে পারেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
বাজেটে বাড়ানো হয়েছে বরাদ্দ
উল্লেখ্য, গত বছর বাজেটে সেতু নির্মাণের জন্য বরাদ্দ ছিল প্রায় ১৪৩৯ কোটি টাকা। কিন্তু গত মঙ্গলবার নবান্ন সভাঘর থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে এবং প্রকল্পের আর্থিক বরাদ্দ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৭০০ কোটি টাকা। যেটা আগে তুলনায় অনেকটাই বেশি। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল চলতি মাসেই গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি পরিদর্শনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সেতুর শিলান্যাস করবেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, উভয় দিকে জমি কেনার কাজ প্রায় নব্বই শতাংশ শেষ। পাঁচ-ছ’জন জমিদাতা জমি দিতে ইচ্ছুক হলেও কাগজপত্র সংক্রান্ত কিছু সমস্যার কারণে তাঁদের ক্ষতিপূরণ এখনও মেটানো সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুতই সেই সমস্যা মিটবে।
৪৫ মিনিটের রাস্তা পৌঁছানো হবে ৪-৫ মিনিটে
রিপোর্ট মোতাবেক গঙ্গাসাগর সেতুটি প্রায় চার কিলোমিটার দীর্ঘ হবে। ইঞ্জিনিয়ারদের মতে, এটি এশিয়ার অন্যতম নজিরবিহীন স্থাপত্য হতে চলেছে। এই সেতুতে থাকবে ২১টি থাম, যার ১৯টিই দাঁড়াবে মুড়িগঙ্গা নদীর উপরে। তখন আর পারাপার করার জন্য ট্রলার-ভেসেলের উপর নির্ভর করতে হবে না, সরাসরি গাড়ি নিয়ে সাগরদ্বীপে পৌঁছনো যাবে। অর্থাৎ ৪৫ মিনিটের রাস্তা ৪-৫ মিনিটে হয়ে যাবে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, কাকদ্বীপে ৭.৯৫ একর এবং কচুবেড়িয়ায় ৫.০১ একর মিলিয়ে ১২.৯৭ একর জমি কেনা হয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা খরচে। দেড়শো জনেরও বেশি জমিদাতার ‘নো অবজেকশন’ সার্টিফিকেট সংগ্রহ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শীতে কাবু না বাড়বে গরম! কেমন থাকবে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের আগামীকালের আবহাওয়া?
প্রসঙ্গত গঙ্গাসাগর সেতু নির্মাণ নিয়ে এখনও রাজ্য সরকার কেন্দ্রকে দোষারোপ করতে ছাড়েনি। বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, “কেন্দ্র প্রতিশ্রুতি রাখেনি, তাই রাজ্যই উদ্যোগী হয়েছে। সেতু হলে পর্যটন ও বাণিজ্যে নতুন জোয়ার আসবে। এখন শুধু মুখ্যমন্ত্রীর শিলান্যাসের অপেক্ষা। কাজ শুরু হলে চার বছরের মধ্যেই দক্ষিণবঙ্গের মানচিত্রে বদল আনবে এই সেতু। সাগরদ্বীপ বাসীর দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন দ্রুত বাস্তবায়িত হবে।”