প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সামনেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনের মাঝেই এবার কলকাতায় মেসি কাণ্ড নিয়ে শুরু হয়ে গেল ধুন্ধুমার পরিস্থিতি। এবার ক্রীড়ামন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফার ইচ্ছাপ্রকাশ অরূপ বিশ্বাসের (Aroop Biswas)। জানা গিয়েছে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে লিওনেল মেসি-র অনুষ্ঠান ঘিরে যে বিশৃঙ্খলা দেখা গিয়েছিল, সেই নিয়ে গোড়া থেকেই তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। এবার সেই তর্ক বিতর্কের মাঝেই ইস্তফার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন অরূপ। আর এই খবর সামনে আসতেই কয়েক মিনিটের মধ্যেই তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ সংবাদমাধ্যমে সেই পোস্ট তুলে ধরলেন।
মেসি কাণ্ডে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি কলকাতায়
উল্লেখ্য, গত ১৩ ডিসেম্বর ‘গোট ইন্ডিয়া ট্যুর ২০২৫’ এ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে আসেন লিওনেল মেসি। সঙ্গে ছিলেন আরও দুই জনপ্রিয় ফুটবলার লুইস সুয়ারেজ ও রড্রিগো ডি পল। আন্তর্জাতিক এই ফুটবলারদের একবার চোখের দেখা দেখতে অনেকেই হাজার হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কেটেছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতি নিমেষেই পরিবর্তন হয়ে গেল। মেসিকে না দেখতে পাওয়ায় রীতিমত ক্ষোভ উগরে দেন দর্শকরা। শুরু হয় ভাঙচুর। এদিকে মেসির সঙ্গে যুবভারতীতে ছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তাঁর প্রতিও ক্ষোভ প্রকাশ করেন সকলে। ইতিমধ্যেই অনুষ্ঠানের মূল আয়োজক শতদ্রু দত্তের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজত হয়েছে। আর এই ডামাডোলের মাঝে এবার ঘটল আরেক ঘটনা। বিতর্কের মাঝেই ক্রীড়া মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফার ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন অরূপ বিশ্বাস।
ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ অরূপের
আজ, মঙ্গলবার, তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ সমাজমাধ্যমে অরূপ ঘোষের ইস্তফা দেওয়ার জন্য লেখা চিঠিটি তুলে ধরেন। সেখানে স্পষ্ট লেখা ছিল যে, “শ্রদ্ধেয়া দিদি, আমার প্রণাম নেবেন। গত ১৩ ডিসেম্বর মেসির কলকাতা সফরে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে যে পরিস্থিতি হয়েছিল, তার পরিপ্রেক্ষিতে আপনি ইতিমধ্যেই তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তাই নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে আমি ক্রীড়ামন্ত্রী হিসেবে আপনার কাছে অব্যাহতি চাইছি। আশা করি আপনি আমার এই অনুরোধ রাখবেন।” তবে এখনও সেটি গৃহীত হয়েছে কি না তা সরকারি ভাবে স্বীকার করা না হলেও কুণাল ঘোষ দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ইস্তফা গ্রহণ করেছেন। ফলে গোটা বিষয় নিয়ে কিছুটা ধোঁয়াশা রয়েই গিয়েছে।
আরও পড়ুন: এক মাস BLO-দের ছুটি বাতিল করল কমিশন, শনি-রবিতেও করতে হবে কাজ
প্রসঙ্গত, অরূপ বিশ্বাসের এই ইস্তফা-চিঠি ঘটনার আগেই তাঁর দফতরের প্রধান সচিব রাজেশ কুমার সিনহাকে শোকজ করা হয়। শোকজ করা হয় বিধাননগরের কমিশনার মুকেশ কুমারকে। শুধু তাই নয় আজ সকালে মুখ্যমন্ত্রীর তৈরি করে দেওয়া প্রাক্তন বিচারপতি অসীম কুমার রায়ের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি রিপোর্ট জমা দেয়। রিপোর্টে ঘটনার দিন পুলিশের ভূমিকা কী ছিল, কীভাবে ব্যবস্থাপনা সাজানো হয়েছিল, কীভাবে চলছিল নজরদারি, সেই বিষয়ে পুলিশের কাছে জবাব চাওয়া হয়। সেক্ষেত্রে অরূপের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপের দাবি উঠছিল লাগাতার। এবার এই কাটাছেঁড়ার মধ্যেই এদিন মমতাকে চিঠি দিয়ে ইস্তফার ইচ্ছে প্রকাশ করেন অরূপ বিশ্বাস।