প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত ৪ নভেম্বর থেকে পশ্চিমবঙ্গে শুরু হয়েছে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন। দীর্ঘ রাজনৈতিক বাকবিতণ্ডার মধ্যে দিয়ে শেষ হয়েছে প্রাথমিক পর্বের কাজ। এমতাবস্থায় গতকাল SIR এর খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। দেশের বড় রাজ্যগুলোর মধ্যে একমাত্র পশ্চিমবঙ্গে সময়ে শেষ হয়েছে SIR। বাকি রাজ্যগুলি বাড়তি সময় চেয়েছে। অর্থাৎ কমিশন BLO দের মাধ্যমে গোটা প্রক্রিয়া সঠিক সময় দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছে। কিন্তু ‘সময়’ মানার ক্ষেত্রে ‘নিখুঁত’ থাকলেও প্রকাশিত তালিকা নিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছে নির্বাচন কমিশন। নতুন করে ভোটার তালিকার ‘শুনানি আতঙ্ক’ (SIR Hearing) তৈরি হয়েছে বাংলা জুড়ে।
SIR শুনানি আতঙ্ক বাংলায়
খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর পরবর্তী পদক্ষেপ শুরু করেদিল নির্বাচন কমিশন। ১৬ ডিসেম্বর থেকে আগামী ১ মাস BLO-দের কাছে খসড়া তালিকা সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে পারবেন ভোটাররা। এরপর যাঁদের শুনানির জন্য ডাকা হবে, তাঁদের বাড়ি গিয়ে এই সংক্রান্ত নোটিস পৌঁছে দেবেন বুথ লেভেল আধিকারিকরা। ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত খসড়া ভোটার তালিকা সংক্রান্ত অভাব-অভিযোগ, শুনানি এবং ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া চলবে বলে জানিয়েছে কমিশন। এদিকে SIR শুনানিতে ডাক পাওয়ার সংখ্যাটা কত সেটা নিয়ে এখনও কোনো নির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি। এই আবহে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগছে কাদের হিয়ারিং বা শুনানির জন্য ডাকতে পারে কমিশন। এবার সেই নিয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরল আমাদের এই প্রতিবেদন।
শুনানিতে ডাকা হবে কাদের?
প্রকাশিত খসড়া তালিকায় নাম থাকলেই যে চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় নাম উঠবে, এজাতীয় কোনও নিশ্চয়তা প্রথম দিন থেকেই ছিল না। কমিশন আগেই জানিয়েছিল যে, খসড়া তালিকার নাম ওঠা ভোটারদের মধ্যে যাঁদের ক্ষেত্রে তথ্য বা নথিতে অসঙ্গতি থাকবে, তাঁদের শুনানিতে ডাকা হবে। সেই শুনানিতে নথি পত্র দিয়ে প্রমাণ করতে হবে যে তিনি ‘যোগ্য ভোটার’। তার জন্য কমিশনের পক্ষ থেকে প্রেসক্রাইব ১৩ টি নথির মধ্যে একটি দেখাতে হবে। আবার ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় বাবা-মায়ের কারও নাম না থাকলে ডাক পেতে পারেন। অনেকেরই বাবা-মায়ের বা ঠাকুমা-ঠাকুরদার নাম ২০০২ ভোটার লিস্টে নেই। সেক্ষেত্রে আধার ছাড়া বাকি ১২ টি নথির মধ্যে একটি দেখাতে হবে। তাহলেই নাম থাকবে ফাইনাল ভোটার লিস্টে।
আরও পড়ুন: খসড়া ভোটার তালিকায় নাম থাকলেও চিন্তা! এবার কাটছাঁট করবে কমিশন
বয়সের ব্যবধানে অসঙ্গতি থাকলে ডাকা হবে
এছাড়াও কোনো ভোটার যদি এনুমারেশন ফর্মে ভুল তথ্য দেয় তাহলে তাঁকে শুনানির জন্য ডাকা হবে। তখন সঠিক তথ্য কমিশনকে দিতে হবে। অনেকের আবার ফর্মে দেওয়া তথ্য বুঝতে সমস্যা হয়েছে BLO-এর। সেক্ষেত্রে ERO-ও যদি সেই তথ্য বুঝতে না পারেন, তাহলে কমিশন ডাকতে পারে শুনানির জন্য। পাশাপাশি বাবা-মায়ের বয়সের ব্যবধান ১৫ বছর বা তার বেশি হলে ডাকা হতে পারে ভোটারকে। সেক্ষেত্রে তাদের কাছ থেকে নথি যাচাই করে দেখা হবে বলেই জানা গিয়েছে। অন্যদিকে চিহ্নিত ৩০ লক্ষ ভোটার, যাঁদের ম্যাপিং সম্ভব হয়নি, তাঁদের ডাকা হবে হিয়ারিংয়ে। জানা যাচ্ছে আজ থেকেই শুনানির নোটিশ বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দেওয়া শুরু করবেন BLO-রা। এবার কার কপালে সেই নোটিশ যাবে তাই নিয়ে শুরু হয়েছে দুশ্চিন্তা।