বাজেটে ৪৭২ কোটি থেকে বেড়ে ৫,৬০২ কোটি! সংখ্যালঘু অধিকার দিবসে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী

Mamata Banerjee

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: মমতা সরকার বরাবর বলে এসেছে বাংলায় সব ধর্মকেই সমান নজরে দেখা হয়ে থাকে, তাইতো সকলের জন্য রাজ্য সরকার একের পর এক উন্নয়ন মূলক কর্মসূচি নিয়ে এসেছে। বাদ যায়নি সংখ্যালঘুরাও। তাই আজ সংখ্যালঘু অধিকার দিবস উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য রাজ্য সরকার ২০১১ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত কী কী কাজ করেছে তার খতিয়ান তুলে ধরলেন।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শুভেচ্ছা বার্তা মমতার

রিপোর্ট মোতাবেক আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, সংখ্যালঘু অধিকার দিবস উপলক্ষে সকলকে টুইটারে শুভেচ্ছা বার্তা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি তাঁর পোস্টে সংখ্যালঘু উন্নয়নে রাজ্য সরকার কী কী ভূমিকা পালন করেছেন তা নিয়ে একটি বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশ্যে তুলে ধরেছেন। মমতা জানিয়েছেন, সংখ্যালঘু স্কলারশিপের ক্ষেত্রে ‘ঐক্যশ্রী’ স্কলারশিপ দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে ১ নম্বর। ২০১১ সাল থেকে প্রায় ১০ হাজার ২০৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ কোটি ৮৫ লক্ষ সংখ্যালঘু স্কলারশিপ প্রদান করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। এছাড়াও সংখ্যালঘু দপ্তরের প্ল্যান বাজেট ১০ গুণের বেশি বৃদ্ধি করা হয়েছে অর্থ ২০১০-১১ সালের ৪৭২ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ২০২৫-২৬ সালে ৫ হাজার ৬০২ কোটি টাকার বেশি হয়েছে।

সংখ্যালঘুদের এডুকেশন লোন নিয়ে বড় আপডেট

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমাজ মাধ্যমে আরো জানিয়েছেন যে, “দেশের ভিতরে বা বাইরে উচ্চশিক্ষার জন্য সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত এডুকেশন লোন দেওয়া হচ্ছে। গত প্রায় ১৫ বছরে ৪০ হাজার মতো সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীকে প্রায় ৩২৭ কোটি টাকার এডুকেশন লোন দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, রয়েছে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা। শুধু তাই নয় সংখ্যালঘু সহ ওবিসি ছাত্রছাত্রীদের জন্য ‘মেধাশ্রী’ প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এখনো পর্যন্ত সংখ্যালঘু যুবক যুবতী ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মেম্বারদের স্বনির্ভর হবার লক্ষ্যে ১৬ লক্ষ ৩১ হাজার উপভোক্তাকে ৩ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। রাজারহাট নিউটাউনে ১০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন হজ হাউস নির্মাণ করা হয়েছে। প্রায় ৬৯ হাজার ইমাম ও মোয়াজ্জিন রাজ্য সরকারের বিভিন্ন কল্যাণমূলক প্রকল্পের বিষয়ে মানুষকে সচেতন করার কাজ করছে।”

মাইনরিটি হোস্টেল নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত সরকারের

জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার সংখ্যালঘু দুঃস্থ মহিলাদের গৃহনির্মাণের জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে মঞ্জুর করেছে। এখনও পর্যন্ত ২ লক্ষ ৬০ হাজার ২৭ জনকে গৃহনির্মাণের জন্য ২ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকার বেশি দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ১৪টি জেলায় ইংলিশ মিডিয়াম মডেল মাদ্রাসা স্থাপন করা হচ্ছে। ৩৮টি ইন্টিগ্রেটেড ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল স্থাপন করা হচ্ছে। ২৩৫টি সরকার-স্বীকৃত আনএইডেড জুনিয়র হাই মাদ্রাসাকে শিক্ষক/অশিক্ষক কর্মচারীদের মাসিক সাম্মানিক দেওয়ার জন্য সম্পূর্ণ রাজ্য সরকারের টাকায় প্রকল্প চালু করা হয়েছে। ৬৩৮টি মাইনরিটি হোস্টেলে প্রত্যেক ছাত্রকে বছরে ১৮ হাজার টাকা Maintenance Allowance দেওয়া হচ্ছে। এমনকি কর্মরতা মহিলাদের জন্য কৈখালিতে ‘ঐকতান’ হোস্টেল স্থাপন করা হয়েছে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে সংখ্যালঘুদের জন্য রাজ্য সরকার একের পর এক নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড চালু করেছে।

আরও পড়ুন: নিউটাউনের পর কাঁকুড়গাছি, সিলিন্ডার ফেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

প্রসঙ্গত, গত সোমবার, নবান্নে রাজ্যের ইমাম-মোয়াজ্জেমদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি জানিয়েছিলেন যে, আগামী ২ থেকে ৫ জানুয়ারি হুগলির পুইনানে অনুষ্ঠিত ওই সমাবেশে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষজনের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করবে রাজ্য প্রশাসন। এছাড়াওবৈঠকে উপস্থিত প্রশাসনিক কর্তা ও মন্ত্রীদের সতর্ক করে মুখ্যমন্ত্রী এও বার্তা দিয়েছিলেন যে, সামনেই যেহেতু নির্বাচন, তাই এইমুহুর্তে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সে ব্যাপারে খেয়াল রাখা আবশ্যক। আসলে কিছুদিন আগে, যুবভারতীর মেসি-কাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ-প্রশাসনকে সতর্ক করা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন নবান্নের কর্তারা।

Leave a Comment