ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ময়মনসিংহে হিন্দু যুবককে গাছে ঝুলিয়ে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা!

Bangladesh

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি, বাংলাদেশে (Bangladesh) সাধারণ নির্বাচন। কিন্তু তার আগে ফের আরও একবার নতুন করে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। গতকাল ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর ঘটনায় চারিদিকে হিংসার ঢেউ উঠেছে। এমতাবস্থায় ময়মনসিংহে এক সংখ্যালঘু ব্যক্তিকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ ধর্ম অবমাননার কারণে বাংলাদেশের ময়মনসিংহে এক হিন্দু যুবককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। ‌এদিকে এখনও ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ কারও বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেনি।

প্রকাশ্যে পুড়িয়ে মারা হল যুবককে

রিপোর্ট মোতাবেক গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার রাতে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যু ঘোষণার পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা বাংলাদেশ। আর সেই সময় ময়মনসিংহে ঘটে যায় এক ভয়ংকর ঘটনা। ওপার বাংলার এক সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যক্তিকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে। জানা গিয়েছে, নিহতের নাম দিপু দাস। তিনি গার্মেন্ট কারাখানায় কর্মরত ছিলেন এবং ভালুকাতেই বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। অভিযোগ উঠেছে, ইসলামের নবী মহম্মদ সম্পর্কে কটুক্তি করেছিলেন তিনি। এরপর একদল মুসলিম ব্যক্তি, প্রথমে কারখানা থেকে বের করে মারধর করা হয়। তারপর অর্ধমৃত অবস্থায় একটি গাছে ঝুলিয়ে আরেক দফা লাঠিপেটা করার পর আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় দেহে। পুরো ঘটনার লাইভ সম্প্রচার করা হয়।

পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন

বৃহস্পতিবার রাতে কয়েকশো মানুষের সামনে ওই যুবকের নৃশংস হত্যার ভিডিও সমাজ মাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। সেই ভিডিও ক্লিপ অনেকের চোখে পড়তেই আঁতকে উঠছেন তাঁরা। অনেকেই বলছেন এই ভিডিও এতটাই ভয়াবহ যে পাঁচ সেকেন্ডের বেশি দেখতে পারলাম না। ‌সেক্ষেত্রে পুলিশের সক্রিয়তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এত বড় ঘটনায় পুলিশ কোথায় ছিল সেই নিয়ে যেমন উঠছে প্রশ্ন ঠিক তেমনই পুলিশ কেন এখনও স্বয়ং:প্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করছে না এই নিয়েও প্রশ্ন উঠছে সমাজমাধ্যমে। ভালুকা থানার ডিউটি অফিসার রিপন মিয়া রাতে সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, নবী সম্পর্কে কটুক্তি করার অভিযোগ ছিল ওই যুবকের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে উত্তেজিত জনতা গণহত্যা করেছে।‌

আরও পড়ুন: ওসমান হাদির মৃত্যুতে অশান্ত বাংলাদেশ! জ্বলল সংবাদমাধ্যমের অফিস, বার্তা ইউনূসের

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অতীতে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে একাধিক সংখ্যালঘু ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ‌ অনেক ক্ষেত্রেই অভিযোগের কোন সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। ‌সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয়, এই নৃশংসতা প্রশাসনের চোখের সামনেই ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুযায়ী, বহু মানুষ উপস্থিত ছিল, অনেকে ফেসবুকে লাইভ করছিল, কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সময়মতো হস্তক্ষেপ করেনি। বাংলাদেশের এই ভয়াবহ হত্যা ঘটনায় বিজেপি নেতা তরুণ জ্যোতি তিওয়ারি বলেছেন, “ময়মনসিংহের তারাকান্দায় দিপু চন্দ্র দাশের নৃশংস হত্যাকাণ্ড শুধু একটি খুনের ঘটনা নয়, এটি রাষ্ট্র, প্রশাসন ও সমাজের সম্মিলিত ব্যর্থতার এক ভয়াবহ দলিল।”

Leave a Comment