ভেঙেছে বাঁ পা কিন্তু অপারেশন হল ডান পায়ে! তুমুল বিতর্ক মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে

Murshidabad Medical College

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ফের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে উঠল প্রশ্ন! এবার অভিযোগের তীর মুর্শিদাবাদের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (Murshidabad Medical College)। অভিযোগ বাঁ পায়ে গুরুতর চোট থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসক অপারেশন করেছেন ডান পায়ে, আর তাই নিয়ে তুমুল শোরগোল শুরু হয় হাসপাতাল চত্বরে। গীতা ঘটনায় হকচকিয়ে গিয়েছেন ৭৫ বছরের রোগিণী রেণু বিবি। ক্ষুব্ধ তাঁর পরিবার।

ঠিক কী ঘটেছে?

রিপোর্ট অনুযায়ী গত ১৭ ডিসেম্বর বাড়ির সিঁড়িতে পা পিছলে পড়ে গিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের সুতি-২ ব্লকের মালোপাড়া এলাকার বাসিন্দা ৭৫ বছরের রেণু বিবি। চোট পান বাঁ দিকের ‘হিপ জয়েন্ট’-এ। এমনকি বাঁ পায়ের হাড়ও টুকরো হয়ে গিয়েছে। এরপর তড়িঘড়ি ওই বাসিন্দাকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে রোগীর শারীরিক পরীক্ষার পরে চিকিৎসক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, অপারেশন ছাড়া এখন আর উপায় নেই। পরিবারও রাজি হয় চিকিৎসকের কথায়, কিন্তু সেই অপারেশনই এবার কাল হল। বাঁ পায়ের পরিবর্তে ডান পায়ে করা হল অপারেশন।

দুই পায়ে অপারেশন চিকিৎসকের

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার অপারেশন থিয়েটার থেকে রোগী রেণু বিবিকে বের করতে দেখা যায়, তাঁর ডান পায়ে ব্যান্ডেজ করা। এদিকে রোগীর জ্ঞান ফিরতেই সেও চিৎকার শুরু করেন এবং বলেন—‘‘ভুল করেছেন… ভুল!’’ পরিবারের অভিযোগ, ভুল পায়ে ‘সফল অস্ত্রোপচার’ করেন অর্থোপেডিক সার্জন। মুহূর্তে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তড়িঘড়ি রোগিণীকে ফের অপারেশন টেবিলে নিয়ে যাওয়া হয় এবং ভাঙা বাঁ পায়ে ট্রাকশন দেওয়া হয়। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, রোগিণীর দুই পা-ই ভাঙা। কিন্তু পাল্টা রোগিণীর আত্মীয় সেলিম মালিকের অভিযোগ, ‘‘অপারেশনের আগে এক্স-রে দেখেই তো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তা হলে এমন ভুল কী ভাবে সম্ভব?’’ ওই ঘটনায় বহরমপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন রোগীর পরিবার।

আরও পড়ুন: “ডাইনি মমতা, হারাবে এবার ক্ষমতা!” মুখ্যমন্ত্রীকে টার্গেট করে বিতর্কিত পোস্ট বিজেপি নেতার

অস্ত্রোপচার-বিতর্কে রোগীর পরিবারের এক সদস্য বলেন, “সম্পূর্ণ ভুল চিকিৎসা হয়েছে। এরকমটা হতে পারে। এক পা ভাঙল, আরেক পায়ে প্লাস্টার করা হল। কীভাবে এত বড় ভুল করতে পারেন চিকিৎসক। আমরা ক্ষতিপূরণ চাইছি।” এদিকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের ভারপ্রাপ্ত মেডিক্যাল সুপার অনাদি রায় চৌধুরী বলেন, ‘‘একটা মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। লিখিত কোনও অভিযোগ এখনও হাতে আসেনি। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারও দায়িত্বজ্ঞানহীনতা প্রমাণ হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Leave a Comment