‘ছেলেকে পুড়িয়ে ওর মাথা …’ দীপু দাসের মর্মান্তিক পরিণতি নিয়ে মুখ খুললেন তাঁর বাবা

Dipu Das Bangladesh

সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এদিকে এই অস্থিরতার মধ্যে, একদল জনতা একজন হিন্দু যুবক দীপু চন্দ্র দাসকে (Dipu Das Bangladesh) নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে, শুধু তাই নয় তাঁকে পুড়িয়ে অবধি দেওয়া হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ড ভারত, বাংলাদেশ সহ গোটা বিশ্বে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, বাংলাদেশের ময়মনসিংহে, ইসলাম ধর্মের অবমাননার অভিযোগে দীপু দাস নামে এক হিন্দু যুবককে হত্যা করা হয়েছে। বিশ্ব আরবি ভাষা দিবস উপলক্ষে একটি কারখানায় আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে দীপু চন্দ্র ইসলাম এবং নবী মুহাম্মদ সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং উত্তেজিত জনতা তাকে পিটিয়ে হত্যা পরে তাঁর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এবার এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন মৃতের বাবা।

মুখ খুললেন দীপু দাসের বাবা

২৫ বছর বয়সী হিন্দু যুবক দীপু চন্দ্র ময়মনসিংহে থাকতেন এবং স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকার পাইওনিয়ার নিট কম্পোজিট কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। ভালুকা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মালিক বলেন, হত্যার পর, উত্তেজিত জনতা দীপুর মৃতদেহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে ফেলে আগুন ধরিয়ে দেয়, যার ফলে রাস্তার উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তাছাড়া, জনতা আংশিকভাবে পোড়া দেহটি একটি গাছের সাথে বেঁধে আগুন ধরিয়ে দেয়, যার ফলে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।

আরও পড়ুন: ফের লাগু হবে ওল্ড পেনশন স্কিম? জানিয়ে দিল কেন্দ্র সরকার

এই ঘটনার পর, মৃত দীপু চন্দ্র দাসের বাবা রবিলাল দাসের সাথে কথা বলে এক সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা। দীপুর বাবা বলেন, তার পরিবার প্রথম ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারে। রবিলাল দাস বলেন, “তারা আমার ছেলেকে মারধর করে তারপর গাছে বেঁধে রাখে। জনতা আমার ছেলের উপর কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। তার পোড়া দেহ বাইরে ফেলে রাখা হয়। তারা তার আধপোড়া মাথা এবং ধর একসাথে বেঁধে রাখে। এটা আমাদের জন্য ভয়াবহ ছিল।”

গ্রেফতার ৭

দীপু চন্দ্র দাসকে নির্মমভাবে মারধর ও হত্যার ঘটনায় সাতজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এক বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে যে, বিভিন্ন স্থানে র‍্যাব-১৪ কর্তৃক পরিচালিত ধারাবাহিক অভিযানের পর এই গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার X-এ এক বিবৃতিতে বলেছে যে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) এই মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে। বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানোর সময় এই গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ধৃতদের বয়স ১৯ থেকে ৪৬ বছরের মধ্যে। এই জঘন্য অপরাধের জন্য দায়ীদের রেহাই দেওয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।

 

Leave a Comment