এটিই হবে দেশের সবথেকে নিরাপদ জাতীয় সড়ক, বিরাট পদক্ষেপ NHAI-র!

(Wildlife Safe Red Marking)

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: দেশের জাতীয় সড়কের নিরাপত্তা নিয়ে এবার বিরাট উদ্যোগ ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার। হ্যাঁ, এবার NH45 হাইওয়েকে দেশের সবথেকে নিরাপদ হাইওয়ে তৈরি করার পথে এনএইচএআই। চেনা গিয়েছে, বন্যপ্রাণী সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রদেশের এই জাতীয় সড়কে লাল রংয়ের টেবিল টপ রোড মার্কিং (Wildlife Safe Red Marking) দেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে বন্যপ্রাণীর সাথে যানবাহনের অ্যাক্সিডেন্ট নিয়ন্ত্রণে আসবে, এবং বন্যপ্রাণীদের সুরক্ষা অনেকটাই বাড়বে। আর সবথেকে বড় ব্যাপার, এটিই দেশের একমাত্র হাইওয়ে যেখানে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন কী কাজ করবে এই লাল রংয়ের টেবিল টপ রোড মার্কিং? জানুন আজকের প্রতিবেদনে।

সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্য দিয়েই জাতীয় সড়ক

জাতীয় সড়ক 45 এর যে অংশে এই নতুন ব্যবস্থা চালু হয়েছে তা মধ্যপ্রদেশের সবথেকে সংবেদনশীল দুটি বনাঞ্চলের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। আর তা হল নৌরাদেহি ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি এবং বীরাঙ্গনা দুর্গাবতী টাইগার রিজার্ভ। জানিয়ে রাখি, এই সড়কটি ভোপাল এবং জব্বলপুরকে যুক্ত করে এবং জব্বলপুর থেকে মোটামুটি 60 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হিরণ সিন্দুর অংশ জুড়েই বিস্তৃত এই হাইওয়ে। এখানকার ঘন জঙ্গলের মধ্য দিয়ে সড়ক যাওয়ার কারণে বাঘ, হরিণ, হাতি সহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী পার হওয়ার ঘটনা নিত্যদিনের।

লাল টেবিল টপ মার্কিং

এই হাইওয়েতে এবার সাধারণ স্পিড ব্রেকারের বদলে ব্যবহার করা হয়েছে হালকা উঁচু লাল রংয়ের চেকার্ড ডিজাইন যুক্ত রোড মার্কিং, যেটি রাস্তার উপর টেবিলের মতো সমতল আকৃতিতে বসানো হয়েছে। আর এই নকশা দূর থেকেই চালকদের চোখে পড়ে এবং স্বাভাবিকভাবে গাড়ির গতি কমাতে সাহায্য করে। লাল রং বেছে নেওয়ার কারণ, এটি সাদা বা হলুদের তুলনায় অনেকটা বেশি দৃশ্যমান। সূত্রের খবর, মোটামুটি 12 কিলোমিটার বনাঞ্চল অংশে এই বিশেষ মার্কিং বসানো হয়েছে।

এদিকে এই প্রকল্পে শুধুমাত্র রোড মার্কিং নয়, বরং আরও সুরক্ষা ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। প্রথমত, 25টি ওয়াইল্ডলাইফ আন্ডারপাস তৈরি করা হয়েছে, যা দিয়ে প্রাণীরা নিরাপদে রাস্তার নিচ দিয়ে দিয়ে যাতায়াত করতে পারে। দ্বিতীয়ত, রাস্তার দু’পাশে 8 ফুট উঁচু লোহার বেড়া দেওয়া হয়েছে এবং দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলিতে অতিরিক্ত ট্রাফিক কন্ট্রোলের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এদিকে আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে, আগের সমস্ত ব্যবস্থার পরেও কিছু জায়গায় দুর্ঘটনা হচ্ছিল। তাই এবার নতুন ব্যবস্থা।

আরও পড়ুন: ফের লাগু হবে ওল্ড পেনশন স্কিম? জানিয়ে দিল কেন্দ্র সরকার

উল্লেখ্য, দেশে বন্যপ্রাণীর সঙ্গে গাড়িঘোড়ার দুর্ঘটনার নির্দিষ্ট কোনও তথ্য নেই। কিন্তু প্রাপ্ত পরিসংখ্যান বেশ উদ্বেগজনক। কারণ, পাঞ্জাবে এমন দুর্ঘটনায় প্রাণহানির হার প্রায় 53% আর মধ্যপ্রদেশে গত দুই বছরে 237টি বন্যপ্রাণী গাড়িঘোড়ার সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। তার মধ্যে 94টি বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। আর এই পরিসংখ্যানে উদ্বেগ প্রকাশ করেই বনাঞ্চলের মধ্য দিয়ে যাওয়া সড়কে নতুন পরিকাঠামো বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

Leave a Comment