বাংলায় ছড়িয়ে পড়েছে অনলাইন জুয়া আর সাট্টার কারবার, দৈনিক লুট ১৫০ কোটি!

Online Gambling Scam

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: রাজ্যে অনলাইন জুয়া ও সাট্টার অবৈধ কারবার এতটাই ছড়িয়ে পড়েছে যে তা কল্পনাও করতে পারছে না তদন্তকারীরা (Online Gambling Scam)। হ্যাঁ, ডিরেক্টর অফ ইকোনমিক অফেন্সেসের এক তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, এই বেআইনি অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে প্রতিদিন ১৫০ কোটি টাকা করে লেনদেন করা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। আর এই বিপুল অংকের টাকার হিসাব সামনে আসতে কার্যত চক্ষু চড়কগাছে গোয়েন্দাদের।

কীভাবে হচ্ছে এই অবৈধ কারবার?

তদন্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, অনলাইন জুয়া ও সাট্টার জন্য আলাদা করে অ্যাপ এবং ওয়েবসাইট তৈরি করা হচ্ছিল। তদন্তে ধরা পড়েছে বেলুড়ের এক ব্যবসায়ী, যিনি টাকার বিনিময়ে এই ধরনের অ্যাপ এবং ওয়েবসাইটগুলি বানিয়ে দিতেন। এমনকি ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, শুধু কলকাতা নয়, বরং রাজ্যের প্রায় সমস্ত জেলা থেকে অর্ডার আসতো। রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশের মতো ভিন রাজ্য থেকেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হতো। আর টাকা পেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নামে অ্যাপ বা ওয়েবসাইট বানিয়ে দিতেন ওই ব্যক্তি। পাশাপাশি তদন্তে আরও বেশ কয়েকজনের নাম ও তথ্য উঠে এসেছে।

এদিকে জানা গিয়েছে, শহরের তুলনায় জেলাগুলিতে এই বেআইনি কারবার সবথেকে বেশি ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে দুই মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া সহ একাধিক জায়গায় ঘণ্টায় ঘণ্টায় অনলাইনে জুয়া ও সাট্টার খেলা চলছে। আর তদন্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, বিপুল লাভের লাভে ছোট এবং বাজারে ব্যবসায়ীদের একাংশ এই বৈধ ব্যবসার আড়ালে অবৈধ জুয়ার জালে জড়িয়ে পড়ছে। সবথেকে বড় ব্যাপার, এই কারবার চালানোর জন্য একাধিক ভুয়ো কোম্পানি খোলা হয়েছে। সাধারণ মানুষ অনলাইনে লোটো ও সাট্টা খেলতে যে টাকা দিচ্ছে, সেগুলি প্রথমে কোম্পানির অ্যাকাউন্টে জমা পড়ছে। আর সেখান থেকে ধাপে ধাপে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে তা ট্রান্সফার করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ১৪০ টাকাতেই ঘুরে গেল ভাগ্য, লটারিতে ১ কোটি জিতে থানায় সমবায় ব্যাঙ্ক কর্মী

প্রসঙ্গত, ব্যাঙ্ক লেনদেন বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, কোনও কোনও কাউন্টার থেকে প্রতিদিন ৫ লক্ষ টাকা থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জমা পড়ছে। আর সবমিলিয়ে রাজ্য জুড়ে প্রতিদিন প্রায় ১৫০ কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে। আর এই অংক সামনে আসতে কার্যত হতভাগ তদন্তকারীরা। এই অবৈধ কারবার রুখতে এবার একাধিক পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। প্রথমত, সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার জন্য ব্যাঙ্কগুলিকে চিঠি পাঠানো হয়েছে, আর একাউন্টের টাকা ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এই টাকায় কেনা জমি, বাড়ি বা সম্পত্তি অ্যাটাচ করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। তদন্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, আরও বড় নাম বা চক্র সামনে আসতে পারে।

Leave a Comment