এবার সরকারি শিক্ষকরা টিউশন করলেই বিপদ! কড়া ব্যবস্থা শিক্ষাদপ্তরের

Private Tuition

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশনি (Private Tuition) করা নিয়ে বিগত কয়েক বছর ধরে বিতর্ক হয়েই চলেছে। আইনত নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরেই এই নিয়ম উপেক্ষা করে চলেছেন বহু শিক্ষক। সকলের অলক্ষ্যেই রমরমিয়ে নিজেদের বাড়িতে বা কোচিং সেন্টারে টাকার বিনিময়ে ছাত্রছাত্রীদের পড়াচ্ছেন। এর ফলে স্কুলের পঠনপাঠনের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। তাই এবার স্কুল শিক্ষকদের টিউশনি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে চলেছে শিক্ষাদপ্তর।

প্রাইভেট টিউশনি নিয়ে বিতর্ক

অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, যে শিক্ষকরা প্রাইভেট টিউশনি করাচ্ছেন, তারা স্কুলেও সেই ছাত্রদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করেন। অর্থাৎ সেই সকল ছাত্রদেরকে আলাদা গুরুত্ব দেওয়া থেকে শুরু করে নম্বর বেশি দেওয়ার মত অভিযোগও উঠে এসেছে। সেই কারণে এই সমস্যার সমাধান চেয়েই কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছিল। সেই সময় হাইকোর্ট স্পষ্ট জানিয়েছিল যে সরকারি স্কুলের যে সমস্ত শিক্ষক প্রাইভেট টিউশনি করেন, তারা “আইন ভঙ্গকারী”। এই নিয়ে নানা তর্ক বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও দেখা গিয়েছিল। অনেক অভিভাবকই মনে করেন যে, স্কুলের পঠনপাঠনের মান ভালো না হওয়ায় তারা তাদের সন্তানদের প্রাইভেট টিউশনি দিতে বাধ্য হন। তাই আগে স্কুলের শিক্ষার মান উন্নত করা উচিত। এবার সেই নিয়ে বড় পদক্ষেপ নিল শিক্ষাদপ্তর।

প্রাইভেট টিউশনি নিয়ে কড়াকড়ি শিক্ষাদপ্তরের

রিপোর্ট অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরেই বেশ কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে আসছে যে, তাঁরা প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা বা প্রজেক্টের নম্বর কমিয়ে দেওয়ার প্রচ্ছন্ন ভয় দেখিয়ে ছাত্রছাত্রীদের নিজের কাছে পড়তে বাধ্য করছেন। যার ফলে সাধারণ ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের ওপর এক মানসিক ও আর্থিক চাপ সৃষ্টি করছে। শিক্ষাক্ষেত্রে এমন বৈষম্যমূলক আচরণ রুখতে প্রশাসন এবার বদ্ধপরিকর। তাই ঘাটাল মহকুমার অতিরিক্ত জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক হিমাদ্রীশেখর ঘোষ হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, এবার আর শুধু মৌখিক নির্দেশ নয়, বরং বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য গোপন সূত্র ব্যবহার করে পথে নেমে কড়া নজরদারি চালানো হবে। যদি এরপরেও কোনও শিক্ষক বা শিক্ষিকা লুকিয়েও টিউশন করেন, তবে তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপ করা হবে।

আরও পড়ুন: “আমাকে ধুয়ে দেবেন না…” নির্বাচনের আগে সকলের কাছে বড় আবেদন কুণালের

প্রসঙ্গত, উচ্চশিক্ষিত বেকার যুবক যুবতীদের জীবনধারণের অন্যতম অবলম্বন হল এই প্রাইভেট টিউশন। সেক্ষেত্রে যদি সরকারি স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা চাকরি করার পাশাপাশি টিউশন করেন তাহলে বেকারদের ক্ষেত্রে আর্থিক চাপ বাড়ে। অন্যদিকে অনেক সময় দাবি করা হয়, কিছু স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা পারিশ্রমিক ছাড়াই ছাত্রছাত্রীদের টিউশন পড়াচ্ছেন। সেক্ষেত্রে এই সমস্যা সমাধানে অতিরিক্ত জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক বিকল্প ব্যবস্থা এনেছেন। তিনি জানিয়েছেন, যদি কোনও শিক্ষক সত্যই বিনামূল্যে ছাত্রছাত্রীদের পড়াতে চায়, তবে তাঁর সেই সদিচ্ছা কেবল নিজের বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।

Leave a Comment