প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ফের খবরের শিরোনামে উঠে এল নদীয়ার হাঁসখালি গণধর্ষণ কাণ্ড (Hanskhali Minor Girl Physical Harrasment Case)। নাবালিকাকে গণধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় ৯জনকে গতকালই দোষী সাব্যস্ত করেছ রানাঘাট এডিজি আদালত। আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার ছিল দোষীদের বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা। অবশেষে পরিকল্পনা অনুযায়ী মঙ্গলবার সাজা ঘোষণা করল রানাঘাটের বিশেষ পকসো আদালত।
হাঁসখালিতে গণধর্ষণ ঘটনার তদন্তে CBI
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল নদিয়ার হাঁসখালির গ্রামে তৃণমূল নেতা ব্রজ গয়ালির বাড়িতে ছেলে সোহেল গয়ালির জন্মদিনের পার্টির নামে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে মদ খাইয়ে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার পর রক্তাক্ত অবস্থায় নাবালিকাকে ফেলে রাখা হয় রাস্তায়। পরেরদিন অর্থাৎ ৫ এপ্রিল ২০২২ ভোরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে কিশোরীর মৃত্যু হয় বাড়িতে। এরপর মৃত্যুর পর কোনও চিকিৎসকের শংসাপত্র ছাড়াই তড়িঘড়ি গ্রামের এক অ-নথিভুক্ত শ্মশানে দেহ দাহ করা হয়। অভিযোগ ওঠে, শাসক দলের একাংশের চাপেই এমনটা হয়েছিল। এরপর সেই ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত করছিল সিবিআই৷
চার্জশিটের ভিত্তিতেই মোট ৯ জন গ্রেফতার
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সিবিআই ৮৫ দিনের মধ্যে ২০৯ পাতার চার্জশিট জমা দেয়। আর সেই চার্জশিটের ভিত্তিতেই অভিযুক্তদের শাস্তির ঘোষণা করল আদালত। হাঁসখালির নাবালিকা তরুণীকে ধর্ষণ কাণ্ডের ঘটনায় মোট ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়, এবং মূল অভিযুক্তদের তালিকায় ছিল সোহেল গয়ালি, প্রভাকর পোদ্দার ও রঞ্জিত মল্লিক, সুরজিৎ রায়, আকাশ বাড়ৈ, সমরেন্দ্র গয়ালি, দীপ্ত গয়ালি, পীযূষ কান্তি ভক্ত ও অংশুমান বাগচী৷ ৷ তার মধ্যে এক নাবালক ছিল। সিবিআই সাত জনকে গ্রেফতার করেছিল। রাজ্য পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করেছিল। এবার সেই ঘটনায় দীর্ঘ তদন্ত ও বিচারপ্রক্রিয়া শেষে তিন বছর আট মাস ন’দিন পর গতকাল অর্থাৎ সোমবার অভিযুক্তদের রানাঘাটের বিশেষ পকসো আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছে। আজ ছিল সাজা ঘোষণার দিন।
আরও পড়ুন: “আমাকে ধুয়ে দেবেন না…” নির্বাচনের আগে সকলের কাছে বড় আবেদন কুণালের
ভয়ংকর সাজা ঘোষণা আদালতের
রানাঘাটের বিশেষ পকসো আদালত জানিয়েছে, হাঁসখালির নাবালিকা তরুণীকে ধর্ষণ কাণ্ডের ঘটনায় তৃণমূল নেতার ছেলে সোহেল গয়ালি সহ ৩ জন প্রভাকর পোদ্দার এবং রণজিৎ মল্লিককে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে৷ অন্য তিন অভিযুক্ত সমরেন্দ্র গয়ালি, দীপ্ত গয়ালি ও পীযূষ কান্তি ভক্তের ৫ বছর ও ৩ বছর সাজা ঘোষণা করা হয়েছে এবং অংশুমান বাগচীর ৩ বছর সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও আদালত তার রায়ে জানিয়েছে, এই অপরাধ অত্যন্ত নৃশংস ও সমাজবিরোধী। এমন অপরাধ সমাজে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে এবং নারীদের নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে ফেলে। এই সাজা অপরাধের গুরুত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের অপরাধ রুখতে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।