বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: ফের অশান্তির আগুনে জ্বলছে অসম (Assam Violence)। বাংলার পড়শি রাজ্যের কার্বি আংলং এবং পশ্চিম আংলং জেলায় ব্যাপক অশান্তির জের ইতিমধ্যেই আহত হয়েছেন 38 জন পুলিশ কর্মী সহ মোট 45। প্রাণ গিয়েছে দুজনের। গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে আপাতত দুই জেলায় বন্ধ হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। দুই নাগরিকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশও করেছেন তিনি।
নিহতদের পরিচয় জানালো পুলিশ
অসমের দুই জেলায় ব্যাপক সংঘর্ষের জের নিহত দুই ব্যক্তির পরিচয় জানিয়েছে অসম পুলিশ। প্রশাসন সূত্রে খবর, অশান্তির মুখে পড়ে মৃত এক ব্যক্তি সুরেশ দে-কে কর্বি আংলং জেলার একটি পোড়া বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও সংঘর্ষের ঘটনায় মৃত আরেক ব্যক্তির নাম অথিক তিমুং বলেই জানিয়েছে পুলিশ। তবে প্রশ্ন থেকে যায় ঠিক কোন কারণে হঠাৎ অশান্তির জন্ম নিল অসমের দুই জেলায়?
স্থানীয় সূত্রে খবর, কার্বি আংলং জেলায় পেশাদার চারণভূমি সংরক্ষণ এলাকা এবং গ্রাম চারণভূমি সংরক্ষণ এলাকার জমিতে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের উচ্ছেদের দাবিতে বিগত দিনগুলিতে ক্রমাগত অনশন-ধর্মঘট চলেছে। এরই মাঝে গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার দুপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় বাঁধে সংঘর্ষ। আর তাতেই মৃত্যু হয় দুজনের। শুধু তাই নয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে আহত হয়েছেন 38 জন পুলিশ কর্মী। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই দুঃখ প্রকাশ করেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী।
হিমন্ত বিশ্বশর্মার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট
রাজ্যের দুই জেলায় ক্রমাগত অশান্তির ঘটনায় নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে একটি মাঝারি পোস্ট করেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী। হিমন্ত বিশ্বশর্মা লিখেছেন, “পশ্চিম কার্বি আংলং জেলার পরিস্থিতির উপর আমি কড়া নজর রেখেছি। আজ বিক্ষোভের মাঝে দুজনের মৃত্যুর খবর পেয়ে আমি সত্যিই মর্মাহত। তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। সরকার তাদের পাশে সব সময় আছে।”
অবশ্যই পড়ুন: “এখনই রুখে দাঁড়াতে হবে”, বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন নিয়ে আওয়াজ তুললেন ইস্টবেঙ্গল তারকা শৌভিক
I am closely monitoring the situation in West Karbi Anglong. It is deeply painful that two persons lost their lives during today’s unrest.
Additional security forces will be deployed in Kherani tomorrow to maintain peace. We are in constant touch with all concerned to restore…
— Himanta Biswa Sarma (@himantabiswa) December 23, 2025
প্রসঙ্গত, সংরক্ষিত জমিতে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের উচ্ছেদের দাবিতে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠি চালায় পুলিশ। আর তারপরই ভিড় ছত্রভঙ্গ করতে গিয়ে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের মাঝে পড়ে আক্রান্ত হতে হয় পুলিশ সদস্যদের। এ প্রসঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিজিপি জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীদের দুই পক্ষের সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে আমাদের 38 জন পুলিশ কর্মী সহ অনেককেই আহত হয়েছে। বিক্ষুব্ধ জনতার তরফে আসা একটি ইট তাঁর কাঁধেও লাগে। আর তারপরেই কড়া পদক্ষেপ নেয় প্রশাসন। ইতিমধ্যেই নির্দিষ্ট আইন মেনে ওই এলাকায় জারি হয়েছে 163 ধারা। শুধু তাই নয় হিংসা যাতে না ছড়ায় সেজন্য অসমের দুই জেলায় আপাতত বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা।