সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: আগামী বছরের শুরুতে বাংলাদেশে নির্ধারিত জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দলের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল একাধিক মার্কিন আইনপ্রণেতা (United States on Awami League)। তাঁদের মতে, এই ধরনের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ আর নির্বাচনের পথকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। কোনও রাজনৈতিক দলকে এভাবে নিষিদ্ধ করা যায় না। হ্যাঁ, আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এবার সম্পূর্ণ বিরোধিতার পথে আমেরিকা। তাহলে কি কপাল পুড়বে ইউনূসের?
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি মার্কিন কংগ্রেস সদস্যের
প্রসঙ্গত, মার্কিন কংগ্রেসের হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির র্যাঙ্কিং মেম্বার গ্রেগরি মিকস, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সাব-কমিটির চেয়ারম্যান বিল হুইজেঙ্গা, র্যাঙ্কিং মেম্বার সিডনি কামলেগার ডোভ এবং কংগ্রেস সদস্য জুলি জনসন, এই চারজন আইনপ্রণেতা মঙ্গলবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসের কাছে একটি যৌথ চিঠি পাঠিয়েছে। আর সেই চিঠিতে সহ স্বাক্ষর করেছেন কংগ্রেসের মুখপাত্র টম সুয়োজি।
উক্ত চিঠিতে তাঁরা স্পষ্টভাবে বলেন, বাংলাদেশের জনগণের অধিকার রয়েছে সুষ্ঠু, মুক্ত আর অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার বেছে নেওয়ার। সেই লক্ষ্য পূরণ করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত রাজনৈতিক মতাদর্শ নির্বিশেষে সমস্ত দলের সঙ্গে আলোচনায় বসা, আর নির্বাচন কমিশন সহ রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনা। যদি রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয় বা বিতর্কিত আন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল সক্রিয় করা হয়, তাহলে দেশের অবস্থা আরও খারাপ হবে। এভাবে কোনও রাজনৈতিক দলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা যেতে পারে না।
এমনকি চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টসহ একাধিক আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক আগেই জানিয়েছিল যে, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচন বাংলাদেশে সুষ্ঠুভাবে হয়নি। এর পাশাপাশি জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনার দফতরের এক প্রতিবেদন উল্লেখ করে বলা হয়, গত বছরের জুলাই থেকে আগস্ট মাসে হওয়া আন্দোলনের সময় নিরাপত্তা রক্ষীদের গুলিতে মোটামুটি ১৪০০ মানুষ নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাতের অন্ধকারে দরজা আটকে দুই হিন্দু ঘরে অগ্নিসংযোগ, বেড়া কেটে প্রাণরক্ষা বাসিন্দাদের
কেন নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ?
বলে রাখি, ওপার বাংলা থেকে অপসারিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনগুলির উপর সন্ত্রাস দমন আইন ২০২৫ সংশোধন করেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল বাংলাদেশ সরকার। এমনকি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে দলটির শীর্ষ নেতাদের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলেই জানানো হয়েছে। সেই কারণেই আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ। আর তারই বিরোধিতা করলো এবার আমেরিকা।