সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: পূর্ব এশিয়ায় এবার ভারতের কৌশলগত অবস্থান আরও শক্তিশালী হতে চলেছে। ইন্দোনেশিয়া এবং ভিয়েতনামের সঙ্গে ব্রহ্মোস সুপারাসনিক ক্ষেপণাস্ত্র রফতানির চুক্তি চূড়ান্ত করার পথে অনেকটাই এগিয়েছে ভারত (India BrahMos Export)। আর এই দুই দেশের সঙ্গে সম্ভাব্য চুক্তির মূল্য ধরা হচ্ছে ৪৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
রাশিয়ার সবুজ সংকেতেই এগিয়েছে আলোচনা
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা গিয়েছে, ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র রফতানিতে ভারতের যৌথ অংশীদার রাশিয়া আপত্তি না করাতে এই চুক্তি এখন বাস্তবায়নের পথে। গত ৪ ডিসেম্বর প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আন্দ্রে বেলৌসোভের মধ্যে প্রতিনিধি স্তরের একটি বৈঠকে এই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এখন শুধুমাত্র মস্কোর তরফ থেকে আনুষ্ঠানিক নো অবজেকশন সার্টিফিকেট পাওয়ার অপেক্ষা।
কী এই ব্রহ্মোস মিসাইল?
জেনে রাখা ভাল, ব্রহ্মোস হল একটি সুপারাসনিক মিসাইল যা প্রায় ম্যাক ২.৮ গতিতে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। এক কথায়, নির্ভুল আর বিধ্বংসী এই ক্ষেপণাস্ত্রটি বর্তমানে ভারতীয় সেনা, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর জন্য প্রধান স্ট্রাইক অস্ত্র। আর এই চুক্তি সম্পন্ন হলে ভিয়েতনাম এবং ইন্দোনেশিয়া ফিলিপাইনের পর পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে ব্রহ্মোস অধিকৃত দেশের তালিকায় যুক্ত হবে। এদিকে উল্লেখযোগ্য ভাবে, ভারত আগেই ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে ফিলিপাইনের সঙ্গে ৩৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি করেছিল, যার আওতায় উপকূলীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য ব্রহ্মোস সরবরাহ করা হয়। এমনকি সূত্রের খবর, ভবিষ্যতে এই দেশগুলি আরও বড় অর্ডার দিতে পারে।
আরও পড়ুন: কপাল পুড়বে ইউনূসের? আওয়ামী লিগের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিরোধীতা করল যুক্তরাষ্ট্র
উল্লেখ্য, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপাইনের সঙ্গে ড্রাগনের দেশের দক্ষিণ চিন সাগর সংক্রান্ত বিরোধ দীর্ঘদিনের জটিলতার কারণ। বিশেষ করে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বেজিং এবং ম্যানিলার মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। আর এই পরিস্থিতিতে ভারতের অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ব্রহ্মোস এই দেশগুলির প্রতিরক্ষা সক্ষমতা কিছুটা বাড়াবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। এদিকে ভারত ইতিমধ্যেই ব্রহ্মোসের পাল্লা ২৯০ কিলোমিটার থেকে ৪৫০ কিলোমিটার করেছে। আর সম্প্রতি অপারেশন সিঁদুরের সময় সুখোই-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান থেকে নিক্ষেপিত ব্রহ্মোস ব্যবহার করে পাকিস্তানে হামলা করেছিল ভারত, যার ফল হাতেনাতে টের পেয়েছে প্রতিবেশীরা। আর সবথেকে বড় ব্যাপার, ২০২৮ সালের মধ্যে এই পাল্লা ৮০০ কিলোমিটারে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।