সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: মুসলিম দেশ পাকিস্তানে মদ বিক্রির উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। তবে সেই পাকিস্তানেই এবার মদ নিয়ে বিরাট সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। হ্যাঁ, দেশের প্রাচীন ও বৃহত্তম মদ প্রস্তুতকারী সংস্থা Murree Brewery বিদেশে অ্যালকোহল রফতানির অনুমতি পেল (Pakistan Alcohol Export)। দীর্ঘ ৫০ বছরের বেশি সময়ের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে তারা এই অনুমোদন পেয়েছে বলে সূত্র মারফৎ খবর। আর এই সিদ্ধান্তে রাওয়ালপিন্ডিতে অবস্থিত সংস্থার কারখানার উৎপাদন অনেকটাই বাড়ানো হয়েছে।
বলে রাখি, ১৮৬০ সালে ব্রিটিশ শাসনকালে Murree Brewery প্রতিষ্ঠিত হয়। মূলত ব্রিটিশ সেনা এবং ইউরোপীয় সম্প্রদায়ের চাহিদার কথা মাথায় রেখেই এই কোম্পানি তৈরি করা হয়েছিল। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পর বিশেষ করে জুলফিকার আলী ভুট্টো শাসনকালে দেশে মদের উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এরপর ১৯৭০ এর দশকে মুসলিমদের জন্য অ্যালকোহল সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু এত বিধিনিষেধ সত্বেও Murree Brewery সীমিত পরিসরে নিজেদের ব্যবসা চালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ শিয়ালদা-হাওড়া লাইনে ৫০০ টাকা দিয়ে আবেদন করে স্টেশনে করুন ব্যবসা, উদ্যোগ পূর্ব রেলের
পার্সি পরিবারের হাতে সংস্থার দায়িত্ব
বলে রাখি, বর্তমানে Murree Brewery এর কর্ণধর ইসফানিয়ার ভান্ডারা। তিনি আবার পাকিস্তানের জাতীয় সংসদের সদস্য এবং দেশের প্রভাবশালী পার্সি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। তাঁর পরিবার তিন প্রজন্ম ধরেই এই সংস্থা পরিচালনা করে আসছে। সংস্থার লাল ইটের কারখানাটি বর্তমানে রাওয়ালপিন্ডিতে অবস্থিত। উল্লেখ করার বিষয়, এই কারখানাটি পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের বাসভবনের কাছেই। পাকিস্তানের বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফাসি জাকা এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে মদের সম্পর্কটা অনেকটা গোপন সম্পর্কের মতোই। প্রকাশ্যে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বাস্তবে দেশে মদের ব্যবহার অজানা নয়।
আরও পড়ুন: ৩১ ডিসেম্বর বন্ধ হবে রাজ্য সরকারের এই প্রকল্প, মহিলাদের ১০,০০০ টাকা পাওয়ার শেষ সুযোগ
এদিকে রফতানি নিষেধাজ্ঞার আগে Murree Brewery মূলত ভারত, আফগানিস্তান, উপমহাসাগরীয় দেশ ও আমেরিকায় রফতানি করত। কিন্তু ইসফানিয়ার ভান্ডারা জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে তাঁর লক্ষ্য শুধুমাত্র মুনাফা নয়, বরং নতুন বাজার খোঁজা আর আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ব্র্যান্ডের পরিচিতি বাড়ানো। বর্তমানে এই সঙ্গস্থায় মোটামুটি ২২০০ জন কাজ করেন। বিজ্ঞাপনের অনুমতি না থাকার কারণে সংস্থা নীরবেই নিজেদের মান এবং ঐতিহ্যের উপর জোর দিয়ে বর্তমানে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।