সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: এমনিতেই বর্তমানে বাংলাদেশের হওয়া গরম। একের পর এক সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার, তার উপর নৃশংসতা, বর্বরতা যেন বেড়েই চলেছে। তবে এবার সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিয়ে উঠল বড়সড় প্রশ্ন। জানা যাচ্ছে, ফরিদপুরে জনপ্রিয় রক শিল্পী জেমসের এক কনসার্টে (James Concert Bangladesh) ভাঙচুর এবং ইটবৃষ্টির ঘটনা ঘটেছে, যার জেরে ২৫ থেকে ৩০ জন আহত হয়েছে এবং এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। পাশাপাশি শিল্পীদের স্বাধীনতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
জেমসের কনসার্টে ইটবৃষ্টি
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোর রিপোর্ট অনুযায়ী, ২৬ ডিসেম্বর রাত্রিবেলা ফরিদপুর জেলা স্কুলের ১৮৫ তম বার্ষিকী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে রকস্টার নগর বাউল জেমস স্বল্প সময়ের জন্য মঞ্চে উঠবেন বলেই পরিকল্পনা ছিল। তবে অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগে একদল দুর্বৃত্ত জোর করে অনুষ্ঠানস্থলে ঢোকার চেষ্টা করে আর মঞ্চের দিকে ইট, পাথর ছুড়ে তাণ্ডব শুরু করে বলেই দাবি করা হচ্ছে। আয়োজকদের দাবি, হামলাকারীরা বহিরাগত। এর জেরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং দর্শকদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক।
আরও পড়ুনঃ উপকৃত হবেন পর্যটকরা, হাওড়াগামী বন্দে ভারত এস্কপ্রেসের সপ্তাহে তিনদিন স্টপেজ বাড়াল রেল
তবে পুলিশ প্রশাসনের পদক্ষেপে জেমস নিরাপদে সেখান থেকে বেরিয়ে গেলেও অন্তত ২৫ থেকে ৩০ জন এই ঘটনায় আহত হয়েছে বলে রিপোর্ট অনুযায়ী খবর। এমনকি আহতদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল স্কুল পড়ুয়া। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বাধ্য হয় উদ্যোক্তারা। সূত্রের খবর, ‘রকগুরু’ অভিহিত জেমস নিরাপদে ওই স্থান ছেড়েছেন এবং তিনি অক্ষত রয়েছেন। আর এই ঘটনার পর ফের বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক পরিবেশ নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠছে। এমনকি চরমপন্থীদের দিনের পর দিন এই আক্রমণ শিল্পীদের স্বাধীনতা এবং তাঁদের নিরাপত্তা নিয়েও তুলছে প্রশ্ন।
James, the legendary Bangladeshi rock icon, was scheduled to perform at the Faridpur Zilla School anniversary concert. Sadly, the event was attacked by a local extremist group, leading to widespread vandalism. An alarming blow to culture and artistic freedom. This is a total… pic.twitter.com/g8RiMhCqfi
— Saifur Rahman (@saifurmishu) December 26, 2025
বলাবাহুল্য, গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। ছাত্রনেতা ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ। হ্যাঁ, ১২ ডিসেম্বর তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয় এবং ১৮ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এরপর ঢাকা, খুলনা, চট্টগ্রাম সহ বেশ কিছু শহরে দাঙ্গা, অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটে। এমনকি সংবাদপত্রের অফিসে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় এবং নৃশংসভাবে সংখ্যালঘুদের উপর হত্যা করা হয়। এখন দেখার বাংলাদেশের এই পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হয়।