প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: দিঘার পর এবার নিউটাউন! সোমবার ‘দুর্গা অঙ্গন’-এর শিলান্যাস করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। নিউটাউন বাসস্ট্যান্ডের উলটোদিকে প্রায় ১৭ একরেরও বেশি জমিতে গড়ে উঠতে চলেছে এই ‘দুর্গা অঙ্গন’। দিঘার জগন্নাথ মন্দির নির্মাণকারী হিডকোই এবার ‘দুর্গা অঙ্গন’ নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছে। জানা গিয়েছে মন্দির নির্মাণে আনুমানিক খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ২৬২ কোটি টাকা।
দুর্গাঙ্গনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন মমতার
রিপোর্ট মোতাবেক আজ অর্থাৎ সোমবার, নিউ টাউনে দুর্গা অঙ্গনের ভূমিপুজোর অনুষ্ঠান ছিল, সেখানে ভূমিপুজোর অনুষ্ঠানে গান গেয়েছেন সঙ্গীতশিল্পী ইমন বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও মমতার কথা ও সুরে দুর্গা অঙ্গনের অনুষ্ঠানে গান গেয়েছেন তাঁরই মন্ত্রিসভার সদস্য ইন্দ্রনীল সেন। অনুষ্ঠানে প্রশাসনিক আধিকারিকরা ছাড়াও সমাজের বিশিষ্টরাও রয়েছেন আমন্ত্রিতের তালিকায়। আর এই জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে দুর্গাঙ্গনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ২১ জুলাইয়ের শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, জগন্নাথধামের মতো ‘দুর্গা অঙ্গন’ তৈরি হবে, যাতে মানুষ সারা বছর সেখানে আসতে পারেন। এবার সেই মতো নিউটাউনে জায়গা বেছে নিলেন তিনি।
৫ হাজার দর্শকের বসার জায়গা মন্দিরে
নবান্ন সূত্রে খবর, নিউটাউন বাস স্ট্যান্ডের বিপরীতে অ্যাকশন এরিয়া–ওয়ানে প্রায় ১৭ একরেরও বেশি জমিতে তৈরি হবে দুর্গা অঙ্গন। দুর্গা অঙ্গন নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে আনুমানিক ২৬২ কোটি টাকা। প্রাথমিক নকশা অনুযায়ী, মূল ফটকটি তৈরি হবে একটি মন্দিরের আদলে। সেখান থেকে দু’দিকে সবুজ ঘাসের চাদরের মাঝ দিয়ে মার্বেলের রাস্তা ধরে পৌঁছোনো যাবে মূল মন্দিরের প্রবেশপথে। অর্থাৎ দিঘার জগন্নাথ ধামের মতোই নিউটাউনে আরও এক আকর্ষণীয় মন্দির গড়ে তুলতে চলেছে তৃণমূল সরকার। প্রশাসনিক মহলের দাবি, মূল মঞ্চের সামনে ছাউনির নিচে প্রায় ৫ হাজার দর্শকের বসার জায়গা করা হচ্ছে।
কী বলছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিশ্বের বৃহত্তম দুর্গাঙ্গন তৈরি করা হচ্ছে। এবার কাজ শুরুর পালা। দিনে এক লাখ দর্শনার্থী আসতে পারবেন। কোনও অসুবিধা হতে হবে না। এই সামান্য কাজটি করতে পেরেছি বলে আমরা গর্বিত এবং কৃতজ্ঞ। ধর্ম যার-যার আপনার, উৎসব সবার। দুর্গাঙ্গন হবে বাংলার সাংস্কৃতিক এবং আধ্যাত্মিকতার মিলনস্থল। যা লাখ-লাখ পর্যটকের কাছে বাংলার প্রতীক হয়ে উঠবে। এখানে শিল্পকলা, ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য পৃথক পরিকাঠামোও থাকবে।”
আরও পড়ুন: যাত্রী সুরক্ষার্থে বড় পদক্ষেপ রেলের, হাওড়ারগামী ট্রেনে যুক্ত হল LHB কোচ
মন্দির প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “দু’লক্ষ বর্গফুট এলাকায় তৈরি হবে এই দুর্গা অঙ্গন। এটা এত বড় করে করা হয়েছে যে মন্দিরে উঠোনেই এক লক্ষ লোক বসে থাকতে পারবেন। এখানে সবুজ দিয়ে ঘেরা খোলা চত্বর রাখা হয়েছে। এই চত্বরের চারপাশে ২০ ফুট চওড়া ঘোড়ার পথ করা হচ্ছে। ১, ০০৮টি স্তম্ভ হচ্ছে। মূল গর্ভগৃহের উচ্চতা হবে ৫৪ মিটার। মূল মণ্ডপ ছাড়াও সিংহদূয়ার, ও অন্য মণ্ডপও থাকবে। প্রাকৃতিক আলো এবং বাতাসের উপর নির্ভর করা হবে।’’ এদিন দুর্গা অঙ্গনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মঞ্চ থেকে মমতা মহাকাল মন্দিরের শিলান্যাসের কথা ঘোষণা করলেন। তিনি জানান, জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেই নাকি মহাকাল মন্দিরের শিলান্যাস হবে।