LPG প্ল্যান্টে ভয়ঙ্কর কাণ্ড! ব্যাহত হতে পারে গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: দিনের পর দিন শ্রমিকদের মেটানো হচ্ছে না বকেয়া মজুরি! বারংবার অভিযোগ করা সত্ত্বেও মেলেনি সুরাহা! আর এই আবহে এবার আন্দোলনে নামেন শ্রমিকরা। পরিস্থিতি এতটাই ভয়ংকর আকার ধারণ করে যে, রীতিমত শ্রমিকরা ভরা গ্যাস সিলিন্ডারের মুখ খুলে বিক্ষোভ দেখায়। আর এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ময়দানে নামে পুলিশ বাহিনী এবং দমকল বাহিনী।

ঘটনাটি কী?

ঘটনা সূত্রের জানা গিয়েছে গত শনিবার থেকে বজবজের আইওসি বটলিং প্ল্যান্টের সুরি হয়েছে বিক্ষোভ। গাড়ির দুই চালককে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার জন্য ও লোডিং-আনলোডিংয়ে বকেয়া টাকা পরিশোধ-সহ বেশ কিছু দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন ও ধর্মঘট করছিলেন কারখানার খালাসি ও চালকরা।

আর এই ধর্মঘট এবং বিক্ষোভ পরিণতি পেল এক ভয়ংকর দুর্ঘটনায়। গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার ধর্মঘট তুলে নেওয়ার জন্য প্ল্যান্টের তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত ইউনিয়নের এক প্রতিনিধি দল এসেছিল চালক এবং খালাসিদের সঙ্গে কথা বলতে।

ভয়ংকর পরিস্থিতি বজবজে

কিন্তু কিছুতেই আন্দোলনকারী চালক এবং খালাসিরা শাসকদলের কথায় রাজি হয় না। উপরন্তু দুপক্ষের মধ্যে শুরু হয় তুমুল হাতাহাতি। বেশ কয়েকটি মোটরবাইকও ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি এতটাই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিল যে শ্রমিকরা আন্দোলনের জেরে একের পর এক গ্যাস সিলিন্ডার থেকে গ্যাস ছেড়ে দিচ্ছিল।

যার জেরে মুহূর্তেই গোটা এলাকায় গ্যাসের ধোঁয়ায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে সামান্য আগুন লাগল ভয়ংকর বিস্ফোরণের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। ঘটতে পারত বড়সড় দুর্ঘটনা। প্রাণ হারাতে পারত শতাধিক শ্রমিক।

নামানো হয় র‍্যাফও!

শেষে এই ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ময়দানে নামে বজবজ থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। এছাড়াও ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় মহেশতলা থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। নামানো হয় র‍্যাফও। শেষে বিক্ষোভ ধর্মঘট নিয়ন্ত্রণে আসে। এলাকা এখনও থমথমে এবং জনমানস শূন্য।

জানা গিয়েছে বজবজের এই কারখানায় দৈনিক ৪৫ হাজার সিলিন্ডারে গ্যাস ভরা হয়। কিন্তু এই ঘটনার পর গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহে অনেক বিলম্ব হতে পারে। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে পারে সল্টলেক, নিউটাউন, উত্তর ২৪ পরগনা, কলকাতা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়ার একাংশ।

আরও পড়ুন: বন্দি থেকেও নাকি করেছেন খুন! চিন্ময় দাসকে আরও প্যাঁচে ফেলতে নয়া প্ল্যান বাংলাদেশের

এই প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান অয়েলের বক্তব্য, গত বছর সেপ্টেম্বরে মজুরি নিয়ে মালিকপক্ষ ও ট্রাক চালকদের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছিল সে ব্যাপারে কিছু সমস্যার কারণে সোমবার থেকে বজবজে কাজ বন্ধ। তবে আশা করা যাচ্ছে ১-২ দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান হবে। তবে এইমুহুর্তে হলদিয়া, দুর্গাপুর, কল্যাণী, খড়্গপুর সিলিন্ডার কারখানার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা হয়েছে।

Leave a Comment