ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: গত সোমবার সদ্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়েন। এইমুহুর্তে তিনি তাঁর বোন রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে আছেন। কিন্তু তাতেও বাংলাদেশে অশান্তি কমেনি। আজও হিংসা, অশান্তির খবর উঠে এসেছে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। সেই আবহেই এবার বাংলাদেশে গড়ে উঠল নয়া অন্তর্বর্তী সরকার। আর প্রধান হিসেবে নবনিযুক্ত হতেই ঢাকায় পৌঁছে হিংসার পথ থেকে সরে আসার বার্তা দিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ডঃ মহম্মদ ইউনুস।
বাংলাদেশে গঠিত হল নয়া অন্তর্বর্তী সরকার!
গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দুপুরেই প্যারিস থেকে ঢাকায় ফেরেন ইউনুস। কারণ এদিন বাংলাদেশে গঠিত হওয়ার কথা ছিল নয়া অন্তর্বর্তী সরকার। আর সেই নবগঠিত সরকারে প্রধান হিসেবে শপথ নিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ডঃ মহম্মদ ইউনুস। ঢাকার বঙ্গভবনে গতকাল স্থানীয় সময় রাত ৯ টার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিন নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধিদের শপথবাক্য পাঠ করান। তবে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আগে এদিন, মুক্তিযুদ্ধে শহিদ এবং সাম্প্রতিক হিংসায় বলি হওয়া মানুষদের জন্য এক মিনিট নীরবতা পালনও করা হয়। এরপর ইউনুসের নেতৃত্বে মোট ১৬ জন সদস্য থাকবেন অন্তর্বর্তী সরকারে। কিন্তু তাঁদের মধ্যে ৩ জন শপথ গ্রহণ করতে পারেননি কারণ তাঁরা বাইরে ছিলেন।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পরেই দেশের ক্ষমতা সম্পূর্ণ রূপে হস্তান্তরিত হয় সেনাবাহিনীর হাতে। আর এই ক্ষমতা সেনাবাহিনীর হাতে চলে যাওয়ায় আশঙ্কা দেখছে ভারত। কারণ সেদেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী খুবই শক্তিশালী। চলতি বছরের রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্বের সবথেকে শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর মধ্যে ৩৭ নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি রিপোর্ট সূত্রে জন্য গিয়েছে এই মুহূর্তে তাঁদের সেনাবাহিনীতে রয়েছে ১৬,৩০০ সক্রিয় সেনা। আধাসামরিক বাহিনীতেও রয়েছে ৬৮ লাখ সেনা।
বাংলাদেশের সেনাদের ভাণ্ডারে অস্ত্রশস্ত্রের সম্ভার
অস্ত্রশস্ত্রের নিরিখে বাংলাদেশে বায়ুসেনার হাতে আছে মোট ২১৬টি এয়ারক্র্যাফ্ট। যার মধ্যে যুদ্ধবিমান ৪৪টি, ট্রেইনার বিমান ৮৭টি, হেলিকপ্টার ৭৩টি, স্পেশাল মিশন ক্র্যাফ্ট ৪টি এবং ট্রান্সপোর্ট বিমান আছে ১৬টি। এবং নৌবাহিনীর হাতে সব মিলিয়ে অ্যাসেট আছে ১১৭টি। ফ্রিজেট ৭টি, কর্ভেট ৬টি, সাবমেরিন ২টি, পেট্রল ভেসেল ৫৫টি, মাইন ওয়ারফেয়ার ৫টি। আর এর মধ্যেই সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল বর্তমানে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান হলেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। যিনি কিনা শেখ হাসিনার সরকারকে একপ্রকার ইস্তফা দিতে বাধ্য করেছিলেন।
বাংলাদেশের সেনাপ্রধানকে নিয়ে নারাজ ভারত
জানা যায়, চলতি বছর ২৩ জুন তিনি বাংলাদেশের সেনাপ্রধান হিসেবে যোগদান করেছিলেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তবে তাঁর এই পদ গ্রহণকে খুব একটা ভালো চোখে দেখেনি ভারত সরকার। তাই সেই কারণে আগে থেকেই শেখ হাসিনাকে বলা হয়েছিল যে তাঁকে নিয়োগ করলে ভবিষ্যৎ এ ভয়ংকর সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে। তবে বিশেষ সূত্রে জানা যায় জেনারেল জামানের সঙ্গে আবার শেখ হাসিনার আত্মীয়তাও রয়েছে। তিনি বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর খুড়তুতো বোনের স্বামী।
যদিও ভারতের নিরিখে বাংলাদেশের সেনা খুব একটা বড় নয়। কারণ গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের রিপোর্ট অনুসারে, ভারতীয় সেনাবাহিনী এখন বিশ্বের চতুর্থ শক্তিশালী সেনাবাহিনী। ভারতের সক্রিয় সেনা সদস্যর সংখ্যা ১৪.৫৫ লক্ষ। যা প্রায় বাংলাদেশের জনসংখ্যার সমান। এছাড়া, ২৫.৭ লক্ষ আধাসামরিক কর্মী এবং ১১.৫৫ লক্ষ রিজার্ভ কর্মী রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে কোনো রিজার্ভ কর্মী নেই। অন্যদিকে অস্ত্রশস্ত্রের নিরিখে ভারতে বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি ভয়ংকর অস্ত্রের সম্ভার রয়েছে।