ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: রেল পরিষেবা যাতে দেশের প্রতিটি নাগরিক সমান ভাবে উপভোগ করতে পারে, তার জন্য একের পর এক পদক্ষেপ নিয়েই চলেছে ভারতীয় রেল। তাইতো একের পর এক উন্নত প্রকল্পের মাধ্যমে নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। আর আবহেই এবার নয়া রেলপথ নিয়ে বড় ঘোষণা করল ভারতীয় রেল। যা পশ্চিমবঙ্গের জন্য বেশ আনন্দের।
কেন্দ্রীয় বৈঠকে রেল বরাদ্দ নিয়ে বড় ঘোষণা!
গত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে পরিবেশ সুরক্ষা নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নয়ন আনা সহ বিভিন্ন ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। আর সেই ঘোষণার মধ্যেই নতুন আটটি রেল পথ তৈরি করার অনুমোদন দেয় কেন্দ্র। সূত্র মাধ্যম জানা গিয়েছে যে নতুন আটটি রেলপথ তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে সেই সকল রেলপথ তৈরির জন্য প্রাথমিক খরচ হিসাবে ২৪ হাজার ৬৯৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আর এই বরাদ্দ টাকা পাওয়া মাত্রই শুরু হতে চলেছে কাজ। আশা করা হচ্ছে এই নয়া রেলপথ তৈরীর কাজ ২০৩০-৩১ সালের মধ্যে শেষ করা হবে।
এদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সেই বৈঠকে নতুন যে আটটি রেলপথ তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল সেগুলি সাতটি রাজ্যের ১৪টি জেলাকে কভার করে যেমন ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, বিহার, তেলেঙ্গানা এবং পশ্চিমবঙ্গ। এই নতুন রুটগুলো ভারতীয় রেলওয়ের বিদ্যমান নেটওয়ার্ককে ৯০০ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রসারিত করবে। ৬৪ টি নতুন স্টেশন তৈরি করা হবে যা আনুমানিক ছয়টি উচ্চাকাঙ্ক্ষী জেলা অর্থাৎ পূর্ব সিংভূম, ভদাদ্রিকোথাগুডেম, মালকানগিরি, কালাহান্ডি, নবরঙ্গপুর, রায়গড়া এবং ৫১০ টি গ্রাম এবং আনুমানিক ৪০ লক্ষ জনসংখ্যার সঙ্গে সংযোগ প্রদান করবে।
ঝাড়গ্রামে নয়া রেলপথ!
এর মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বুড়ামুরা থেকে চাকুলিয়া রেলপথ। এই রেলপথটির মোট দৈর্ঘ্য হতে চলেছে ৫৯.৯৫ কিলোমিটার। এই রেলপথটি ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ ও পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রাম জেলার মধ্যে কভার করবে। ভারতীয় রেলের নতুন এই রেলপথ চালু হলে জঙ্গলমহলের মানুষদের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা যাতায়াতের ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা বেড়ে যাবে।
কেন্দ্রের তরফ থেকে বাকি আরও সাতটি নতুন রেলপথের অনুমোদন দেওয়ার পাশাপাশি আরও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের অনুমোদন দিয়েছে। যেগুলির মধ্যে রয়েছে গঙ্গার উপর নতুন ব্রিজ, পরিবেশ রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় সামাজিক পরিবর্তন ইত্যাদি। এছাড়াও রেলমন্ত্রীর দাবি, বাদামপাহাড়-কেন্দুঝারগড়, বাংরিপোসি-গোরুমহিসানি এবং বুরমুরা-চাকুলিয়া প্রকল্পের ফলে পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, বিহার এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য একটি করিডর তৈরি করা হবে। যার ফলে ভারতের পূর্ব উপকূলের বন্দরগুলি থেকে পণ্য পরিবহণ করা যাবে এই করিডর ধরে। এই সময়ে আদিবাসী-অধ্যুষিত এলাকার কর্মসংস্থান হবে, অর্থনৈতিক উন্নতি হবে।
প্রসঙ্গত এই বৈঠকে আবাস যোজনা নিয়েও উঠে এসেছে বড় আপডেট। আরও ৩ কোটি নতুন বাড়ি বাস্তবায়নের বিষয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়েছে, যার মধ্যে ২ কোটি বাড়ি হবে গ্রামাঞ্চলে আর ১ কোটি বাড়ি হবে শহরাঞ্চলে। এবং এর জন্য বাজেট প্রয়োজন ৩,৬০,০০০ কোটি টাকা।