ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: গোটা বাংলার মানুষের কাছে গত ৯ আগস্টের রাত যেন এক বিভীষিকার মত ঠেকছে। যতদিন না এর সুবিচার হচ্ছে ততদিন যেন কারোর মনে শান্তি ফিরছে না। গোটা কলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গ যেন থমকে গিয়েছে। যার জেরে লড়াই এখনও শক্ত রয়েছে। দফায় দফায় চলছে মহিলা এবং পুরুষ নির্বিশেষে প্রতিবাদ মিছিল। আর এই আবহেই এবার প্রকাশ্যে এল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের হাসপাতালের সেই ভয়ংকর ভিডিও ফুটেজ। যার ভিত্তিতেই পুলিশ সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করেছিল।
ভাইরাল ফুটেজ
ফুটেজে উল্লেখ করা তারিখ এবং সময় দেখা যাচ্ছে ৯ আগস্ট ভোর ৪টে ৩ মিনিট। ধৃত সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে জিন্স এবং একটি টি-শার্ট পরা অবস্থায় দেখা যাচ্ছে, হাতে একটি হেলমেট নিয়ে কলেজের করিডরেই প্রবেশ করছেন। গলায় রয়েছে হেডফোন। এবং ওই হেডফোনের ছেঁড়া অংশ নির্যাতিতার দেহের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। সেই ফুটেজের অভিযুক্তের পিছনে রয়েছে হাসপাতালের ফ্লোর ম্যাপ। অর্থাৎ হাসপাতালের ওই তলায় কোথায় কী রয়েছে, তার মানচিত্র।
সঞ্জয়কে নিয়ে CBI-র ভয়ংকর দাবি
CBI সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, গত ৮ আগস্ট অর্থাৎ দুর্ঘটনা ঘটার আগের দিন রাতের CCTV ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে একাধিক বার ধৃত ব্যক্তি হাসপাতালে ঢুকেছিলেন এবং বেরিয়েছিলেন। তার মধ্যে নাকি রাত ৮টা নাগাদ সঞ্জয় গিয়েছিলেন চেতলার এক যৌনপল্লিতে। তবে সঞ্জয়ের সম্পর্কে নানা তল্লাশি করার পর জানা গিয়েছিল, অতীতেও মহিলাদের সঙ্গে অভব্য ব্যবহার করার অভিযোগ উঠে এসেছিল ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে। এমনকি এক মহিলা পুলিশকর্মীর সঙ্গে আপত্তিকর ভাষায় কথা বলেছিলেন তিনি।
এদিকে CBI অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের পলিগ্রাফ টেস্টের জন্য আদালতে অনুমোদ করেছিল। এমনকি গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার CBI কে অনুমোদন দিয়েছে বিশেষ আদালত। শুধু সঞ্জয় নয় ৪ জন শিক্ষানবিশ চিকিৎসক ও কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষেরও পলিগ্রাফ টেস্টের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে শিয়ালদার বিশেষ আদালত অভিযুক্তকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে। এছাড়াও অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিরয়ের যে ‘যৌন বিকৃতি’ আছে এবং তার প্রবৃত্তি ‘পশু-সদৃশ’ বলে জানিয়েছে CBI। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল যে ঘটনায় গোটা দেশ হতবাক, ক্ষুব্ধ, সেই ঘটনা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় ধৃতর মধ্যে কোন অনুশোচনা বোধ দেখা যায়নি।
ধর্মঘট প্রত্যাহার চিকিৎসকদের
প্রসঙ্গত, মামলার দ্বিতীয় শুনানির দিন চিকিৎসকদের পুনরায় কাজে ফিরে আসার বিষয় নিয়ে আবেদন করলে দিল্লির AIMS এর ডাক্তাররা তাদের ১১ দিনের ধর্মঘট শেষ করেছেন এবং আবার কাজ শুরু করেছেন। রেসিডেন্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, আদালতের আশ্বাসে তারা কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে, কর্মবিরতির পথ থেকে এখনই সরছে না পশ্চিমবঙ্গের জুনিয়র চিকিৎসকদের সংগঠন, জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট। তাঁদের দাবি তদন্তের গতিপ্রকৃতি ইতিবাচক না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি জারি থাকবে।