কলকাতাঃ আরজি কর মেডিকেল কলেজে তরুণী চিকিৎসকের উপর যৌন নির্যাতন ও তাঁকে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনায় এখনো অধরা আসল দোষীরা। ডাক্তাররা এখনো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এখনো হচ্ছে রাত দখল, রাস্তা দখল। আর ফের একবার এই প্রতিবাদে শামিল হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ। ফের একবার নবান্ন অভিযানের ডাক এসে গেল তাঁদের তরফে। জানা গিয়েছে, পুজোর আগেই ফের একবার বড়সড় আন্দোলনে নামবে ছাত্র সমাজ। আর পরের এই আন্দোলনে শামিল হতে পারেন উত্তরবঙ্গের মানুষজনও।
গত ২৭ শে আগস্ট আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে দোষীদের শাস্তি ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিতে নবান্ন অভিযান কর্মসূচিতে নেমেছিল পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ। এই আন্দোলনকে ঘিরে ধুন্ধুমার হয়েছিল হাওড়া সহ কলকাতার একাধিক জেলায়। লাঠিচার্জ করে, কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়ে, জলকামান নামিয়েও আন্দোলনকে পুরোপুরি থামিয়ে দেওয়া যায়নি। ওইদিন পুলিশ ও আন্দোলনকারী- উভয় পক্ষের অনেকে আহত হন। আবার পুলিশও অনেককে আটক করে।
ফের নবান্ন অভিযানের ডাক দেবে ছাত্রসমাজ
আরজি করের ঘটনাটি রাজ্যের সব স্তরে বড়সড় আলোড়ন তুলেছে। এর প্রতিবাদে আবারও নবান্ন অভিযানের ডাক দিতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ। পুজোর আগেই উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের ছাত্র সমাজকে নিয়ে এই আন্দোলন গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছে তাঁরা। এই বিষয়ে ছাত্র সমাজের প্রতিনিধি শুভঙ্কর হালদার জানান, “এখনই আমরা কী কর্মসূচি, তা বলছি না। কারণ, কোনও কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। তবে আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে আমাদের আন্দোলন চলবে। মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের যে দাবি আমার তুলেছি তা নিয়ে আরও বড় আকারে কর্মসূচির কথা ভাবা হচ্ছে।”
উত্তরবঙ্গের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে পুজোর আগেই বড় আন্দোলন
গত ২৭ শে আগস্ট পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের ডাকে নবান্ন অভিযানে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে পড়ুয়া ও সাধারণ মানুষজন যোগদান করেছিলেন। তবে এবার উত্তরবঙ্গের ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ মানুষকে নিয়ে আন্দোলন হবে। এমনটা জানিয়ে ছাত্র সমাজের প্রতিনিধি শুভঙ্কর হালদার বলেন, “উত্তরবঙ্গের অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। আমরা এমন কর্মসূচি নেব, যাতে গোটা রাজ্যের মানুষ অংশ নিতে পারেন। আর সেটা পুজোর আগেই হবে।”
এই আন্দোলনে কি বিজেপির মদত রয়েছে?
২৭ শে আগস্টের নবান্ন অভিযানে ছাত্র সমাজের উপর পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগে পরের দিন ১২ ঘন্টার বাংলা বনধ ডাকে রাজ্য বিজেপি। একইসঙ্গে পুলিশ যেসব আন্দোলনকারীদের গ্রেপ্তার করেছিল, তাঁদেরকে আইনি সহায়তা দিতে এগিয়ে আসে বিজেপি। আর সেখানেই এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে যে, ছাত্র সমাজকে সামনে রেখে কি বিজেপি’ই এই আন্দোলন চালাচ্ছে? এই প্রশ্নের উত্তরে শুভঙ্কর হালদার জানান, “এটা তো লোকের কথা। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল যদি শাসকের বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজের আন্দোলনের পাশে দাঁড়ায় তবে সমস্যা কোথায়? তবে আমার কোনও সাহায্য চাইনি এবং আগামী দিনেও চাইব না।”