ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে পুলিশি হেফাজতে কুখ্যাত গ্যাংস্টার আতিক আহমেদের খুনের ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা উত্তরপ্রদেশ। ঠিক কয়েকদিন পরেই আবার উত্তরপ্রদেশের পুলিশি এনকাউন্টারে মৃত্যু হয়েছিল আতিকের পুত্র আসিফের। তারপরেই প্রকাশ্যে এসেছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশের একটি পরিসংখ্যান। যেখানে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে যোগী সরকারের আমলে পুলিশি প্রশাসনে কতজন আসামিকে এনকাউন্টার করা হয়েছিল।
এনকাউন্টারের তালিকা প্রকাশ উত্তরপ্রদেশ পুলিশের
২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশে ক্ষমতায় আসে বিজেপি। সেই সময় প্রথমবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন যোগী আদিত্যনাথ। আর সেই সময়ের পর থেকেই এখনও সেই সিংহাসন তাঁর দখলেই রয়েছে। শুধু তাই নয় ক্ষমতায় আসার পরই যোগী সরকার মাফিয়া, দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ চালু করে আসছে। রাজ্যকে সমস্ত অপরাধযোগ্য কাজের থেকে রক্ষা করতে তখন থেকেই ঢালাও ক্ষমতা দিয়ে দেওয়া হয়েছে পুলিশ-প্রশাসনকে। সম্প্রতি এনকাউন্টারের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। ২০১৭ সালের ২০ মার্চ থেকে ২০২৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই সাত বছরের মধ্যে ১২ হাজারেরও বেশি এনকাউন্টার চালানো হয়েছে। তার মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২০৭ জন অভিযুক্তের। জখম হয়েছেন ৫ হাজারেরও বেশি। পাশাপাশি মৃত্যু হয়েছে পুলিশকর্মীদেরও।
১৩ দিন অন্তর একজন অপরাধীর এনকাউন্টার
অপরাধীদের পাল্টা প্রতিরোধে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জন পুলিশ কর্মীরও। ২০১৭ সালেই এনকাউন্টার চলাকালীন ১৩ জন পুলিশকর্মীর মৃত্যু হয়। অভিযান চালাতে গিয়ে আহত হয়েছেন অন্তত প্রায় ১৫০০ পুলিশকর্মী। প্রশাসন সূত্রের মাধ্যমে জানা গিয়েছে, সবচেয়ে বেশি এনকাউন্টার হয়েে মিরাট জোনে। সেখানে মোট ৩ হাজার ৭২৩টি এনকাউন্টারে ৬৬ জন কুখ্যাত অপরাধীকে হত্যা করা হয় এবং গ্রেফতার করা হয় ৭ হাজার ১৭ জন দুষ্কৃতীকে। পাশাপাশি দুষ্কৃতীদের ধরবার জন্য মাথার দামও ধার্য করে পুলিশ প্রশাসন।
তবে শুধু স্পেশাল টাস্ক ফোর্স বা STF নয়, কমিশনারেট এবং জেলাগুলির পুলিশও গুন্ডাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে বললে দাবি করেছেন উত্তরপ্রদেশের ডিজি। তবে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এনকাউন্টার নীতির তীব্র বিরোধিতায় সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ সিং যাদব সাফ বলেন, এই এনকাউন্টারের অধিকাংশই ভুয়ো। নিরপরাধ মানুষকে দুষ্কৃতী সাজিয়ে খুন করার অভিযোগে বারে বারে সরব হয়েছে বিরোধীরা। তবে এসব কথা উড়িয়ে দিয়ে ডিজি প্রশান্ত কুমার বলেন, অপরাধীদের বরদাস্ত করার প্রশ্নই ওঠে না, তাঁদের বিরুদ্ধে তাই কঠোর পদক্ষেপের এই ধারা অব্যাহত থাকবে।