নয়া দিল্লিঃ চাঁদ নিয়ে আমাদের অনেক জল্পনা, কল্পনা রয়েছে। কিন্তু চাঁদে কি রয়েছে? দিনরাত কেমন হয় সেখানে? এসব উত্তর এখনো খুঁজছে বিজ্ঞান। আর এই খোঁজাখুঁজির দৌড়ে অন্য সব দেশকে অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছে ভারত। কারণ, গত বছর সফল অবতরণ করেই ইতিহাস লিখেছিল চন্দ্রযান-৩। তারপর থেকে এক বছরের বেশি সময় কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনো নিজের জলবা দেখানো বন্ধ করেনি ভারতের এই নভোযান।
সম্প্রতি, ISRO-র বিজ্ঞানীরা বিজ্ঞানীরা চন্দ্রযান-৩-এর ভূমিকম্প নির্দেশক যন্ত্রগুলি থেকে প্রাপ্ত তথ্যগুলি বিশ্লেষণ করে দেখেছেন। সেই তথ্যগুলি চমকে দিয়েছে তাঁদের। কারণ চাঁদে যে ভূমিকম্প হয়, সেটা তো এতদিনে খুঁজে ফেলেছিল চন্দ্রযান-৩। কিন্তু ভূমিকম্পের কারণ তখনো অজানা ছিল। আর এবার সেটারই খোঁজ মিলল। বিজ্ঞানীদের মতে, চাঁদের মাটিতে ভূমিকম্পের অন্যতম কারণ হতে উল্কাপিণ্ড। ISRO-র বিজ্ঞানীরা বলেছেন যে, এই সম্পর্কে আরও তথ্য পেতে হলে আরও বড় গবেষণা করতে হবে।
সামনে এল চাঁদের ভূমিকম্পের কারণগুলি
সম্প্রতি, ইকারাস ম্যাগাজিনে প্রকাশিত একটি গবেষণায় লুনার সিসমিক অ্যাক্টিভিটি ইনস্ট্রুমেন্ট বা ILSA-র মাধ্যমে রেকর্ড করা ১৯০ ঘন্টার একটি রাফ ডেটা লগ রয়েছে। উল্লেখ্য, এই ILSA হল পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক যন্ত্র, যেগুলিকে চন্দ্রযান-৩ এর সঙ্গে পাঠানো হয়েছিল। এই বিশেষ যন্ত্র এবার তথ্য পাঠিয়েছে। আর সেইসব তথ্যকে ৫০ টি সংকেত হিসেবে কাজ করে দেখা গেছে যে ILSA-র সংকেতগুলি যন্ত্রের কাছাকাছি পরিসরে একটি খুব ছোট উল্কা বা একটি উল্কাপিণ্ডের পতন হয়েছিল। এর ফলে চাঁদের পৃষ্ঠের তাপমাত্রার পরিবর্তনও ঘটেছিল। সেই সঙ্গে ভূমিকম্পও রেকর্ড হয়েছিলো।
কিভাবে এই পরীক্ষা চালানো হল?
চন্দ্রযান-৩ গত ২৩ আগস্ট, ২০২৩-এ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে একটি সফল অবতরণ করেছিল। ISRO বিজ্ঞানীরা বলেছেন যে ILSA, যে ভূমিকম্প রেকর্ড করেছে সেটি ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ তারিখে হয়েছিল।এরপর ফের ল্যান্ডারটি স্টার্টিং পয়েন্ট থেকে প্রায় ৫০ সেন্টিমিটার দূরে একটি নতুন পয়েন্টে স্থানান্তরিত হয়েছিল। সেখানে ২১৮ ঘন্টা কাজ করেছিল ILSA, যার মধ্যে ১৯০ ঘন্টার ডেটা পাওয়া যায়। তারপর বিজ্ঞানীরা সেখানে ২৫০ টিরও বেশি সংকেত সনাক্ত করেছিলেন। তবে মধ্যে প্রায় ২০ টি সংকেত রোভারের কার্যকলাপের কারণে তৈরি হয়েছিল। তাই ৫০ টি সংকেত নিয়েই এই গবেষণা চালানো হয়।
বড় গবেষণা করলে আরো বড় সাফল্য আসবে
ISRO-র বিজ্ঞানীরা বলেছেন যে ILSA থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সম্ভাব্য উৎস খুঁজে পাওয়ার জন্য আরো বড় গবেষণা করতে হবে। ILSA হল চাঁদের মেরু অঞ্চল থেকে ভূমিকম্পের তথ্য রেকর্ড করার প্রথম যন্ত্র। চার দশক আগে নাসার অ্যাপোলো মিশনে এমন কাজ হয়েছিল। তারপর ISRO স্বাধীনভাবে এই মিশনে চাঁদের মাটির কম্পন সহ বিভিন্ন গতিবিধি রেকর্ড করলো।