ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: ইতিহাসের পাতায় চোখ রাখলে দেখা যায় ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি লিখেছিলেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ গঠিত হলে শেখ মুজিব রবীন্দ্রনাথের এই গানটিকে নির্বাচন করেন জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে। যদিও বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পরে থেকেই গানটি পরিবর্তন করার দাবি উঠে আসতে থাকে নানা মহল থেকে। এবার গণ অভ্যুত্থানের পর নতুন করে সেই বিতর্ক যেন এক অন্য রূপ দেন করে। শুরু হয়ে যায় তুমুল বিতর্ক।
জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তনের দাবি আজমির!
গত বুধবার বাংলাদেশ সেনার প্রাক্তন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তথা বাংলাদেশের জামাত-ই-ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা গুলাম আজমের ছেলে আবদুল্লাহিল আমান আজমি জাতীয় সঙ্গীতের বিষয়ে দাবি তোলেন যে ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তিনি একজন ভারতীয়। ফলত তাঁর লেখা গান বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হবে কেন। এমনকি এই গানটি কোনোদিক থেকে ইসলামিক ভাবধারাতেও রচিত নয়। ১৯৭১ সালে এই গান আমাদের উপরে চাপিয়ে দিয়েছিল ভারত। বহু গানই বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হতে পারত। সরকারের উচিত একটি নতুন কমিশন তৈরি করে নতুন জাতীয় সঙ্গীত নির্বাচন করা।’ আর এই দাবি ওঠার পর থেকেই শুরু হয়ে যায় বিতর্ক। প্রশ্ন ওঠে তবে কি এত বছর ধরে পালন করে আসা দেশের জাতীয় সঙ্গীত এর দিন শেষ হতে চলেছে!
অনেকেই যেমন এই দাবির বিরোধিতা করেছেন। তেমনই অনেকেই আবার সমর্থনও করেছেন। তবে ওপার বাংলার জনপ্রিয় লেখিকা তসলিমা নাসরিন ঘোরতর আপত্তি জানিয়েছেন এই বিষয়ে। লেখেন, ‘জাতীয় সঙ্গীত ছাড়া আমার দেশ নিয়ে গর্ব করার বেশি কিছু পাই না আমি।’ যদিও প্রথম দিকে গোটা বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটে রেখেছেন উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। বাদ যাননি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও। তবে সেই দাবি এবং বিতর্ককে এক মুহূর্তেই নসাৎ করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্মীয় বিষয়ক পরামর্শদাতা খালিদ হোসেন।
কী বললেন খালিদ হোসেন?
তিনি গত শনিবার স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, ‘বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তনের কোনও পরিকল্পনা নেই। অন্তর্বর্তী সরকার এমন কোনও পদক্ষোপ করবে না যা বিতর্ক তৈরি করতে পারে।’ শুধু তাই নয় বাংলাদেশে হিন্দুদের মন্দিরে হামলার ঘটনাকে অত্যন্ত ঘৃণ্য অপরাধ বলে উল্লেখ করে ধর্মীয় বিষয়ক পরামর্শদাতা খালিদ হোসেন জানান, ‘যারা ধর্মীয় স্থানে হামলা করে, তারা মানবতার শত্রু। এরা অপরাধী। আইনানুগ পদ্ধতিতে তাদের শাস্তি দেওয়া হবে।’