৯০ দিন আমদানি না করলেও চলবে! ভারতে তৈরি হচ্ছে আরও ৩টি তেল রিজার্ভ

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: তেল আমদানির প্রসঙ্গে ভারতের নির্ভরতার জায়গা বিদেশ। হ্যাঁ, মোট তেল আমদানির অন্তত 80 শতাংশই আসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে। তাই মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতার মতো ঘটনা ঘটলে আর কিছু না হোক অন্তত তেল ও গ্যাস নিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে যায় দিল্লির।

মূলত সেই কারণেই এবার জরুরি অবস্থা ও যুদ্ধ পরবর্তী সময়ের কথা মাথায় রেখে গোপন তেল মজুদ বা অপরিশোধিত তেল রিজার্ভের সংখ্যা বাড়তে চলেছে। এ প্রসঙ্গে বুধবার একাধিক তথ্য দিয়েছেন ইন্ডিয়ান স্ট্র্যাটিজিক পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ লিমিটেডের সিইও এলআর জৈন।

তৈরি হবে তিনটি নতুন তেল রিজার্ভ

ইরান-ইজরায়েল সংঘাতে ভারতে তেল সংক্রান্ত ঘাটতি দেখা না দিলেও আগামী দিনে যে সমস্যায় পড়তে হবে না, তার কোনও নিশ্চয়তা এই মুহূর্তে নেই কারোর কাছেই। মূলত সেই সব কারণকে সামনে রেখে বন্ধু রাশিয়া ও আমেরিকার কাছ থেকে বিগত দিনগুলিতে তেল আমদানি বাড়ানোর পাশাপাশি আগামী দিনে যুদ্ধ বা সংঘাতের পরিস্থিতিতে যাতে দেশে তেল সংক্রান্ত কোনও সমস্যা দেখা না দেয় সেজন্যই এবার তিনটি নতুন তেল রিজার্ভ তৈরি হতে চলেছে।

এ প্রসঙ্গে বুধবার ইন্ডিয়ান স্ট্রাটিজিক পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ লিমিটেডের সিইও এলআর জৈন জানিয়েছেন, আমরা জরুরি পরিস্থিতির জন্য তৈরি হচ্ছি। রাষ্ট্রায়ত্ত ইঞ্জিনিয়ারিং পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্ডিয়া লিমিটেড একেবারে নতুন তিনটি তেল রিজার্ভ তৈরির পথে হেঁটেছে।

বলে রাখি, দক্ষিণ ভারতের তিনটি স্থান অর্থাৎ ম্যাঙ্গালোর, পাদুর এবং ভাইজাগে অপরিশোধিত তেল মজুদ রাখা হয়েছে। একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই তেল রিজার্ভগুলিতে একসাথে মোট 5.33 মিলিয়ন টন তেল রয়েছে। এ প্রসঙ্গে ভারতীয় তেল সংস্থার ওই আধিকারিক বলেন, কর্ণাটক রাজ্যের ম্যাঙ্গালোরে 1.75 লক্ষ টন লবণের সুবিধা তৈরির জন্য একাধিক পরিকল্পনা চলছে। একইভাবে রাজস্থানের বিকানেরে 5.2 থেকে 5.3 টন সল্ট বেস তৈরির পরিকল্প রয়েছে, পাশাপাশি মধ্যপ্রদেশের বিনাতেও একটি সংরক্ষিত অঞ্চল তৈরির পরিকল্পনা করছে সংস্থা।

এরপরই জৈন বলেন, আমরা এই মুহূর্ত 90 দিনের জন্য তেলের চাহিদা মেটাবে এমন মজুদ খুঁজছি। কেননা, বিগত দিনগুলিতে ভারতে জ্বালানির চাহিদা ক্রমশ বেড়েছে। তাই এই মুহূর্তে আমাদের অতিরিক্ত তেল মজুদ বা তেল রিজার্ভের প্রয়োজন। বেশ কয়েকটি রিপোর্ট বলছে, আগামী দিনে তিল সংরক্ষণের ক্ষমতা সম্প্রসারণের জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে ভারতের উদ্দেশ্যে। কাজেই বলা যায়, ভবিষ্যতে যাতে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে দেশে তেলের আকাল না দেখা দেয় সেজন্যই, একের পর এক নতুন তেল রিজার্ভ তৈরি করার পথে হাঁটছে কেন্দ্র ও বেসরকারি সংস্থাগুলি।

অবশ্যই পড়ুন: সেঞ্চুরি না করেও ৫১ বছরের পুরনো রেকর্ড গুঁড়িয়ে দিলেন যশস্বী জয়সওয়াল

উল্লেখ্য, বর্তমানে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম, কর্নাটকের ম্যাঙ্গালোর, তামিলনাড়ুর পাদুর সহ বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ তেল মজুদ করে রেখেছে কেন্দ্র। তবে সরকারি সূত্র অনুযায়ী, আপাতত এই তেল দিয়ে 10 দিনের চাহিদা মেটানো যাবে। তবে যদি বেসরকারি তেল সংস্থাগুলির মোট মজুদের সাথে কেন্দ্রের তেল মজুদকে মিলিয়ে দেওয়া যায় তবে অন্তত 74 দিন তেল আমদানি না করেই হেসে খেলে চলবে ভারত। যদিও চাহিদার সাথে সাথে এই তেল মজুরের সংখ্যা সরকারি এবং বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আরও বাড়বে, বলেই আশা।

Leave a Comment