ধেয়ে আসছে বিশাল এক গ্রহাণু, ২০২৯ সালে হবে মহাপ্রলয়! ডাইনোসরের মতো হারিয়ে যাবে মানব সভ্যতাও?

Published on:

asteroid

ইন্ডিয়া হুড ডেস্কঃ ‘বিগ ব্যাং’- এর পর আমাদের এই বিশাল মহাশূন্যের ব্যাপ্তি ঘটেছে হলে মনে করে আধুনিক বিজ্ঞান। আর সেই কারণেই কোটি কোটি নক্ষত্র ও গ্রহ তৈরি হয়েছে। এর সঙ্গে অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গ্রহাণু তৈরি হয়েছে, যেগুলি মহাশূন্যে অবিচ্ছিন্নভাবে ঘুরে বেড়ায়। কখনো আবার সেগুলি বিভিন্ন গ্রহের মাধ্যাকর্ষণ বলের দ্বারা আকর্ষিত হয়ে সেই গ্রহের উপর আছড়ে পড়ে। পৃথিবী থেকে ডাইনোসরের বিলুপ্তির নেপথ্যে এমন এক গ্রহাণুর আছড়ে পড়ার তত্ত্বকে অধিকাংশ বিজ্ঞানী স্বীকার করেন। তবে জানলে অবাক হবেন যে, এমন পরিস্থিতি আবারো তৈরি হতে পারে। গ্রহাণুর আঘাতে এবার পৃথিবী থেকে হারিয়ে যেতে পারে মানব সভ্যতাও।

গত কয়েক বছর ধরেই ‘৯৯৯৪২ অ্যাফোফিস’ নামক একটি গ্রহাণু মহাকাশ বিজ্ঞানীদের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ২০০৪ সালে আবিষ্কৃত এই অতিকায় মহাজাগতিক খণ্ড পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসার সম্ভাবনার কারণে বিভিন্ন সময়ে গুজব ছড়িয়েছে। অনেকেই বলছেন যে এটি পৃথিবীতে আছড়ে পড়ে মহাপ্রলয় ঘটাতে পারে পারে। বিশেষত, ২০২৯ সালের ১৩ এপ্রিল তারিখটি চিহ্নিত করা হয়েছে সেই সময় হিসেবে, যখন অ্যাফোফিস পৃথিবীর খুব কাছে দিয়ে অতিক্রম করবে। এই ঘটনা নিয়ে NASA এবং অন্যান্য মহাকাশ গবেষণা সংস্থা বিশেষ গবেষণা চালাচ্ছে।

WhatsApp Community Join Now

কেন অ্যাফোফিস গ্রহাণুকে বিপজ্জনক মনে করা হচ্ছে?

এই গ্রহাণু আকারে খুব একটা ছোট নয়। বিজ্ঞানীদের তথ্য বলছে, অ্যাফোফিসের ব্যাস প্রায় ৩৪০ মিটার, যা প্রায় তিনটি ফুটবল মাঠের দৈর্ঘ্যের সমান। গ্রহাণুটি ২০০৪ সালে প্রথম সনাক্ত করা হয়। এর পর থেকেই এটির পৃথিবীর কাছাকাছি আসার সম্ভাবনার বিষয়টি গবেষণার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। এই গ্রহাণু পৃথিবী থেকে মাত্র ৩১,০০০ কিলোমিটার দূর দিয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই দূরত্বটি অত্যন্ত কম। কারণ এটি মহাকাশে পাঠানো কৃত্রিম উপগ্রহগুলিও পৃথিবীর থেকে আরো দূরে অবস্থান করে।

আদৌ কি পৃথিবীতে আঘাত করবে এই গ্রহাণু?

শুরুর দিকে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করেছিলেন যে, অ্যাফোফিস হয়তো পৃথিবীতে আঘাত হানতে পারে। ২০০৪ সালে এর প্রথম পর্যবেক্ষণের পর থেকে হিসেব-নিকেশে সম্ভাবনা ছিল প্রায় ২.৭ শতাংশ। তবে, পরবর্তীকালে আরও উন্নত পর্যবেক্ষণ এবং হিসাব-নিকাশের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০২৯ সালে এই গ্রহাণুটি পৃথিবীর সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষের কোনো সম্ভাবনা নেই। NASA-র সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণ বলছে, গ্রহাণুটি কেবল আমাদের গ্রহের খুব কাছ দিয়ে যাবে, তবে তা নিরাপদ দূরত্বেই থাকবে।

২০২৯ সালে ঠিক কি ঘটতে চলেছে?

NASA জানিয়েছে যে ২০২৯ সালের ১৩ এপ্রিল পৃথিবীর আকাশ থেকে অ্যাফোফিসকে খালি চোখেই দেখা যাবে। এটি পৃথিবীর এত কাছ দিয়ে অতিক্রম করবে যে, বিজ্ঞানীরা এটি নিয়ে ব্যাপক গবেষণার সুযোগ পাবেন। এর গতিপথ এবং পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাব কেমন হবে, সেটি জানার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হবে। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি হয়তো এর গতিপথ সামান্য পরিবর্তন করতে পারে, যা ভবিষ্যতে এর গতিপথকে নতুন করে নির্ধারণ করতে পারে।

ভবিষ্যতে কী বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে?

যদিও ২০২৯ সালে অ্যাফোফিস পৃথিবীতে আঘাত করবে না, তবে ২০৩৬ সালে আবারও এটি পৃথিবীর কাছাকাছি আসবে। তবে বিজ্ঞানীরা এর মধ্যেও কোনো আঘাতের সম্ভাবনা দেখছেন না। NASA-র সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ভবিষ্যতে এর সংঘর্ষের সম্ভাবনা প্রায় শূন্যের কাছাকাছি। তবুও, এর গতিপথ এবং পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের প্রভাব নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে, কারণ মহাজাগতিক বস্তুগুলির গতি এবং গতিপথ পূর্বাভাস দেওয়া সবসময়ই চ্যালেঞ্জিং।

বাছাই করা গুরুত্বপুর্ন খবর পেতে গ্রুপে যুক্ত হোন