ইন্ডিয়া হুড ডেস্কঃ স্বাধীন ভারতের নাগরিকরা কেন ব্রিটিশদের নামকরণ করা স্থানে বসবাস করবে? দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথম এই প্রশ্ন তোলেন। শুধু প্রশ্ন তোলাই নয়, ২০১৮ সালে তিনি ভারতের তিনটি দ্বীপের নাম পরিবর্তন করে সেগুলোকে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন। রস দ্বীপের নামকরণ করা হয়েছিল নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু দ্বীপ, নীল দ্বীপকে নাম দেওয়া হয়েছিল শহীদ দ্বীপ এবং হ্যাভলক দ্বীপকে স্বরাজ দ্বীপ নামকরণ করা হয়েছিল।
আর এই পদক্ষেপ আবারো নেওয়া হল। এবার নতুন পরিচয় পেল পোর্ট ব্লেয়ার। কেন্দ্রীয় সরকার শুক্রবার ঘোষণা করেছে যে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের রাজধানী পোর্ট ব্লেয়ারের নাম পরিবর্তন করে ‘শ্রী বিজয়পুরম’ রাখা হল। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখলকারী এই দ্বীপপুঞ্জের ঐতিহ্যকে সম্মান জানাতে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
দ্বীপের নতুন নামকরণের ঘোষণা করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ শুক্রবার নিজের এক্স হ্যান্ডেল থেকে লেখেন, “আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও ইতিহাসে এক অনন্য স্থান দখল করে আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজির ঔপনিবেশিক প্রভাব মুক্ত ভারতের স্বপ্ন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আজ আমরা পোর্ট ব্লেয়ারের নাম শ্রী বিজয়পুরম করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” অমিত শাহ আরও উল্লেখ করেছেন যে ‘বিজয়পুরম’ নামটি আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়ে অর্জিত বিজয়ের প্রতীক এবং এই দ্বীপপুঞ্জের সেই সময়কার গুরুত্বের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।
देश को गुलामी के सभी प्रतीकों से मुक्ति दिलाने के प्रधानमंत्री श्री @narendramodi जी के संकल्प से प्रेरित होकर आज गृह मंत्रालय ने पोर्ट ब्लेयर का नाम ‘श्री विजयपुरम’ करने का निर्णय लिया है।
‘श्री विजयपुरम’ नाम हमारे स्वाधीनता के संघर्ष और इसमें अंडमान और निकोबार के योगदान को…
— Amit Shah (@AmitShah) September 13, 2024
ভারতের ইতিহাসে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল পোর্ট ব্লেয়ার?
ইতিহাস বলছে, প্রাচীন ভারতের চোল সাম্রাজ্যের সময় এই দ্বীপপুঞ্জ তাঁদের নৌবাহিনীর ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হত। এছাড়াও ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসেও পোর্ট ব্লেয়ার গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই দ্বীপপুঞ্জে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু প্রথম ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। পাশাপাশি, আন্দামানের সেলুলার জেলে বীর সাভারকার সহ অন্যান্য স্বাধীনতা সংগ্রামীরা বন্দি ছিলেন। আর সেখান থেকেই তাঁরা এক নতুন বিদ্রোহ তৈরি করেছিলেন।
ব্রিটিশদের দেওয়া নাম বহন করবে না স্বাধীন ভারতবর্ষ
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই ঘোষণার মাধ্যমে কেন্দ্র সরকার স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে যে উপনিবেশিক উত্তরাধিকারকে মুছে ফেলার জন্য সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের এই নাম পরিবর্তন কেবলমাত্র প্রতীকী নয়, বরং এটি ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাস এবং তার সংগ্রামী চরিত্রগুলিকে আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করার একটি প্রচেষ্টা, যা স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল্যবোধকে দেশবাসীর মনে বাঁচিয়ে রাখতে সাহায্য করে।