দেবপ্রসাদ মুখার্জী: শুরু হয়েছে ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ২০২৪-২৫ মরশুম। আর এই মরশুমের শুরু থেকেই ভারতীয় ক্লাব ফুটবলে আনোয়ার আলির নাম নিয়ে চর্চা তুঙ্গে। তাঁকে নিয়ে দুই দলের টানাপোড়েন থেকে শুরু করে স্ট্যাটাস কমিটির শাস্তি ও জরিমানা এবং এর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা নিয়ে এখন সরগরম ফুটবলের অন্দরমহল। গত মরশুমে এই ভারতীয় ডিফেন্ডার মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের হয়ে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছিলেন। তবে চলতি মরশুমে তিনি মোহনবাগানের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব ইস্টবেঙ্গলে যোগ দেন। আর এখান থেকেই তাঁকে ঘিরে এক জটিল অধ্যায়ের সূত্রপাত ঘটে।
আনোয়ারের ইস্টবেঙ্গলে যোগদান মোহনবাগানের কাছে ছিল এক বড় ধাক্কা। স্বাভাবিকভাবেই সবুজ-মেরুন ক্লাব আনোয়ারকে ফিরিয়ে আনার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। অন্যদিকে, ইস্টবেঙ্গল চেয়েছিল লাল-হলুদ জার্সিতে মাঠে নেমে দেওয়াল হয়ে উঠুক আনোয়ার। শেষমেষ এই দ্বন্দ্ব পরিণত হয় এক আইনি লড়াইয়ে। যেখানে বিষয়টি পৌঁছায় প্লেয়ার স্ট্যাটাস কমিটির কাছে। তারপর থেকেই গোটা বিষয়টিকে নিয়ে জলঘোলা হতে শুরু করে।
আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে আনোয়ার ও ইস্টবেঙ্গল
ইন্ডিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের প্লেয়ার স্ট্যাটাস কমিটি আনোয়ার আলির অনৈতিক ট্রান্সফারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে এবং কিছুদিন আগেই মামলার রায়দান করে। এই রায়ে আনোয়ার আলিকে চার মাসের জন্য নির্বাসিত করা হয়। সেই সঙ্গে ইস্টবেঙ্গল, দিল্লি এবং খোদ আনোয়ারকে বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এছাড়াও ইস্টবেঙ্গলের উপর একটি ট্রান্সফার ব্যানও আরোপ করা হয়। এই সিদ্ধান্ত মেনে না নিয়ে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব দিল্লি হাইকোর্টে রায়ের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানায়।
আনোয়ারের পক্ষে কি বললো দিল্লি হাইকোর্ট?
দিল্লি হাইকোর্ট প্লেয়ার স্ট্যাটাস কমিটির দেওয়া নির্দেশিকার উপর স্থগিতাদেশ জারি করে। এটি ইস্টবেঙ্গলের জন্য একটি স্বস্তির খবর ছিল। দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব নারুলা ফেডারেশনের আইনজীবীর কাছে জানতে চান, আনোয়ারের নির্বাসনের সিদ্ধান্ত লিখিত আকারে দেওয়া হয়েছিল কিনা। কিন্তু তখন কোন সুনির্দিষ্ট উত্তর পাওয়া যায়নি। বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, প্লেয়ার স্ট্যাটাস কমিটি কীভাবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে এবং ইস্টবেঙ্গলকে পাল্টা আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হয়নি কেন। আইনি প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা আনার নির্দেশ দেন তিনি।
আনোয়ার আলির কেরিয়ার নিয়ে বড় ঘোষণা মোহনবাগান সচিবের
এই পরিস্থিতিতে মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত সরব হন। তিনি রঞ্জিত বাজাজের নাম উল্লেখ করে বলেন, “রঞ্জিত বাজাজের মতো মানুষদের ভারতীয় ফুটবল থেকে অবিলম্বে ব্যান করা উচিত। তিনি আনোয়ার আলির ফুটবল কেরিয়ার ধ্বংস করতে চাইছেন। তিনি আমাদের, আনোয়ার এবং ইস্টবেঙ্গলকে প্রতারণা করেছেন।” এখন সবার নজর পরবর্তী আদালত শুনানির দিকে, যেখানে হয়তো এই ইস্যুর চূড়ান্ত সমাধান বেরিয়ে আসবে।