প্রীতি পোদ্দার কলকাতা: আরজি কর ঘটনায় তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশ সঞ্জয় রাই নামে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেপ্তার করেছিল তরুণীকে ধর্ষণ এবং খুন করার অভিযোগে। পরে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে আপাতত ঘটনার তদন্তভার নিয়েছে CBI। তাই সঞ্জয়ও বর্তমানে সিবিআই এর হেফাজতে। এদিকে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কাণ্ডে সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হলেও তারা দুজনে সরাসরি ধর্ষণ ও খুনের সঙ্গে যুক্ত নন। কারণ, এখনও পর্যন্ত গণধর্ষণের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলেই শিয়ালদহ আদালতে জানাল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এদিকে, ধৃত সন্দীপ এবং অভিজিৎকে আগামী ৩ দিন সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিল শিয়ালদহ আদালত। আর এই আবহেই এবার প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ আরও চাপের মুখে পড়ল।
বেতন পাবেন না সন্দীপ!
সূত্রের খবর, সন্দীপ ঘোষ সাসপেন্ড হওয়ার আগে গত ১২ আগস্ট থেকে এক্সট্রা অর্ডিনারি লিভে গিয়েছিলেন। তাই সেই কারণে ১২ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়কালের বেতন পাবেন না সন্দীপ। আর ইতিমধ্যেই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করল রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। কাউন্সিলের তরফে আগেই তাঁকে শো-কজ করা হয়েছিল। ১১ দিন পরেও তিনি শো-কজের জবাব না দেওয়ায় তাঁর রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হল বলে কাউন্সিল জানিয়েছে। পাশাপাশি আর্থিক দুর্নীতির মামলাতেও গ্রেপ্তার হয়েছেন সন্দীপ ঘোষ। এই ঘটনার পর থেকেই সন্দীপ ঘোষের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার দাবি জানানো হয়েছিল চিকিৎসকমহল থেকে।
রেজিস্ট্রেশন বাতিল নিয়ে উঠছে বিতর্ক
কিন্তু সেই রেজিস্ট্রেশন বাতিল নিয়েও উঠছে একাধিক প্রশ্ন। সন্দীপ ঘোষের রেজিস্ট্রেশন বাতিল অবৈধ বলে অভিযোগ তুলল জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টর্স। গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিল অভিযান শেষে চিকিৎসক সংগঠনের যৌথ মঞ্চের সদস্যরা জানান, গত ৯ আগস্ট এর পর কাউন্সিলের কোনও বৈঠক হয়নি। এদিকে সন্দীপ ঘোষের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে গেলে কাউন্সিলের সদস্যদের বৈঠক ডেকে সেই সিদ্ধান্ত দুই তৃতীয়াংশ ভোটে পাশ করানো নিয়ম। সেই নিয়ম না মেনে রেজিস্ট্রেশন বাতিলের বিজ্ঞপ্তির কোনো মানেই হয় না।
আসলে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে যদি রেজিস্ট্রেশন বাতিল না করা হয়, তাহলে সেক্ষেত্রে পরে কখনও সন্দীপ ঘোষ এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করতেই পারেন। যেমন এর আগে ২০২০ সালে অবসর গ্রহণের পর ছ’মাসের জন্য মেয়াদ বৃদ্ধি হয় রেজিস্ট্রার মানস চক্রবর্তীর। এরপর তাঁর মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে আর কোনও নির্দেশিকা আসেনি। কাউন্সিলের সভাপতি সুদীপ্ত রায়ের মৌখিক নির্দেশে মানস চক্রবর্তী কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তাই সন্দীপের রেজিস্ট্রেশন বাতিলে কোনও নিয়মের ফাঁক চাইছে না জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্স।