রেয়ার আর্থের পর এবার iPhone! আরেক ধাক্কা দিয়ে ভারতকে কোণঠাসা করার চেষ্টা চিনের

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভারতের উপর একের পর এক ধাক্কা দিচ্ছে চিন (China on India)! একাধিক কর্মীকে প্রত্যাহার, অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ ও রেয়ার আর্থ ম্যাগনেটে নিষেধাজ্ঞা, সবকিছু মিলিয়ে ভারতের উৎপাদন খাতকে দিনের পর দিন চাপের মুখে ফেলছে বেজিং! তবে এবার এসব কুকীর্তির প্রভাব পড়তে চলেছে সরাসরি আইফোন উৎপাদন থেকে শুরু করে একাধিক চিনা স্মার্টফোন কারখানায়।

আইফোন উৎপাদনে বিরাট ধাক্কা

জানিয়ে রাখি, তামিলনাড়ু এবং কর্নাটকে অ্যাপলের জন্য আইফোন উৎপাদনকারী কারখানা পরিচালনা করে Foxconn সংস্থা। আর এই কারখানায় সিংহভাগ ভারতীয় কর্মীরাই কাজ করতেন। তবে গুণমান এবং উৎপাদন বজায় রাখার জন্য সেখানে কিছু চিনা ইঞ্জিনিয়ার এবং টেকনিক্যাল স্টাফ থাকতেন।

তবে হঠাৎ করেই চিনের নির্দেশে এই সমস্ত কর্মীদের দেশে ফিরে আসতে বলা হয়েছে। আর এর ফলে গোটা উৎপাদন প্রক্রিয়া মুখ থুবড়ে পড়েছে। এক রিপোর্ট বলছে, চিনা কর্মীরা কারখানায় 1% ভূমিকা রাখলেও তা অনেক। ফলে অ্যাপল যে বিরাট ধাক্কা খাবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ সংস্থাটির পরিকল্পনা ছিল ভারতে আইফোন উৎপাদন দ্বিগুণ করা এবং সেখান থেকেই আমেরিকা সহ অন্যান্য দেশে আইফোন রপ্তানি করা। তবে সেই আশায় কার্যত জল পড়েছে।

অ্যাপলের পাশাপাশি চাপের মুখে Oppo ও Vivo-র মতো সংস্থাও

শুধু অ্যাপল একা নয়, বরং ভারতের মাটিতে Oppo ও Vivo-র মতো বড় বড় কারখানাগুলিও চালাচ্ছে চিন। এদিকে বেজিং-এর সিদ্ধান্তে এবার তারাও উদ্বেগ প্রকাশ করছে। কারণ এক বিশেষজ্ঞ বলছে, ভারতে স্বল্প সংখ্যক চিনা আধিকারিক থাকলেও তাদের প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে Oppo ও Vivo-র মতো সংস্থাগুলি চিন্তায় পড়েছে। 

পড়তে ভুলবেন নাঃ জুলাইতেই বাড়তে পারে DA! এবার কতটা? সুখবরের অপেক্ষায় সরকারি কর্মীরা

চুপিসারে ঢিল মারছে চিন

বলে রাখি, বিশ্বের 90% রেয়ার আর্থ ম্যাগনেট প্রসেসিং করে চিন। আর সেগুলি প্রযুক্তির যন্ত্র, বৈদ্যুতিক গাড়ি থেকে শুরু করে স্মার্টফোন, ডিফেন্স সিস্টেম, সবকিছুতেই ব্যবহার করা হয়। তবে এপ্রিল মাসে বেজিং হঠাৎ করে সেই রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এমনকি কোনও বিদেশী ক্রেতা সরকারি অনুমোদন দিলেই রপ্তানিতে ছাড়পত্র পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছিল তারা। 

হিসাব বলছে, ভারত 2023-24 অর্থবছরে প্রায় 460 টন ম্যাগনেট আমদানি করেছিল, যার সিংহভাগই এসেছিল চিন থেকে। এমনকি এবছর সেই পরিমাণ বেড়ে 700 টন হওয়ার কথা ছিল। তবে সেই রাস্তায় কার্যত তালা বন্ধ করে দিয়েছে বেজিং। এখন বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছে, ভারতের মতো উদীয়মান উৎপাদন শক্তিকে ধীরে ধীরে কোনঠাসা করতে চলেছে জিনপিং।

Leave a Comment