মুখের ছবি মিললেই দেওয়া হবে খাবার! নয়া নিয়ম অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: অনেকদিন ধরেই অভিযোগ উঠে আসছে যে, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে দেওয়া পুষ্টিকর খাবার উপভোক্তাদের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছচ্ছে না। এমনকি মাঝে মধ্যেই দুর্নীতির অভিযোগও উঠে আসছে তাই এবার স্বচ্ছতার লক্ষ্যেই বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে কেন্দ্র। এবার থেকে রাজ্যের সব অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চালু হবে ‘ফেস রেকগনিশন সিস্টেম’। যার মাধ্যমেই মিলবে সঠিক পরিষেবা।

বড় পদক্ষেপ কেন্দ্রের

জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই অর্থাৎ চলতি মাসের প্রথম দিন থেকেই এই পদ্ধতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সমীক্ষা সূত্রে জানা গিয়েছে রাজ্যে মোট অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ১৯ হাজার। এবং উপভোক্তার সংখ্যা ৫০ লক্ষের বেশি। তাই কাজ দ্রুত শুরু করতে হলে প্রত্যেকেরই ছবি ও অন্যান্য তথ্য আপলোড করা হবে ‘পোষণ অ্যাপে’।

সবশেষে সব তথ্য আপলোড করা হয়ে গেলে পুরোপুরি চালু হয়ে যাবে নয়া পদ্ধতি। সূত্রের খবর, নতুন নিয়ম চালুর আগে কয়েকটি জেলায় পরীক্ষামূলকভাবে মায়েদের ছবি আপলোড করে দেখা হয়েছে এই পদ্ধতি কার্যকর হচ্ছে কি না।

কীভাবে মিলবে খাবার?

ইতিমধ্যেই জেলার প্রশাসনিক মহলে নির্দেশ পৌঁছে গিয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের প্রশিক্ষণও শুরু হয়েছে। জানা গিয়েছে এই নয়া পদ্ধতিতে খাবার নেওয়ার জন্য উপভোক্তারা সেন্টারে এলে অ্যাপে আপলোড করা ছবির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মহিলা বা শিশুর মুখ মিলিয়ে নেওয়া হবে।

এরপরই তাঁর হাজিরা গণ্য করে খাবার দেবেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। আগে আধার নম্বর ও মোবাইল নম্বরের ভিত্তিতেই পরিষেবা দেওয়া হত। কিন্তু সেই পরিষেবায় একাধিক অভিযোগ উঠে আসতে থাকায় বাধ্য হয়ে এই সিদ্ধান্ত।

নয়া পদ্ধতিতেই মিলবে সুরাহা

নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রকের এক আধিকারিক জানিয়েছেন যে, “এই ব্যবস্থার মাধ্যমে অবশেষে এই পরিষেবায় স্বচ্ছতা আসবে। অনেক সময় দেখা যেত, যাঁরা উপভোক্তা নন, তাঁরাও কেন্দ্রে এসে খাবার সংগ্রহ করছেন। নতুন পদ্ধতিতে এমন জালিয়াতির সুযোগ এবার বন্ধ হবে ।

পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় সরকার রোজ কতজন উপভোক্তা কেন্দ্রে এলেন, কে খাবার নিলেন, সেই তথ্য সরাসরি পাওয়া যাবে মুহূর্তেই। এমনকি বরাদ্দ খাদ্যসামগ্রী ও পরিসংখ্যান আরও সঠিকভাবে মিলবে।”

আরও পড়ুন: দুই সন্তানকে নিয়ে দ্বিতীয়বার বিয়ের পিঁড়িতে বাস্তবের ‘মিসেস চ্যাটার্জি’, পাত্র …

এই পুরো প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য, প্রতিটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে উপস্থিতির নির্ভুল হিসেব রাখা এবং সরকারি সুবিধা যেন ঠিকঠাক প্রাপ্যদের কাছেই পৌঁছায়, তা নিশ্চিত করা। তবে এই নতুন নিয়ম চালু হওয়া নিয়ে একটা প্রশ্নও উঠছে অনেকের মনে। তাঁরা জানাচ্ছেন এতদিন সংশ্লিষ্ট উপভোক্তা কোনো কারণে না যেতে পারলে তাঁর বাড়ির কেউ সেন্টারে গেলে তাঁকে দিয়ে দেওয়া হতো খাবার।

কিন্তু এবার প্রত্যেকের মুখের ছবি যাচাই করে খাবার দেওয়ার নিয়ম শুরু হচ্ছে। তাহলে কি উপভোক্তার বদলে অন্য কেউ গেলে খাবার দেওয়া হবে না? যদিও এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে বিজ্ঞপ্তিতে কিছু বলা হয়নি।

Leave a Comment